কবিতা
শীত
আতিক হেলাল
শীতকালে খাওয়া যায় তাজা শাক-সবজি
এইগুলো খেয়ে-দেয়ে ঠিক রাখি কব্জি।
শীতকালে বিছানাতে লাগে কাঁথা-কম্বল
বেশি শীত লেগে গেলে কাঁপুনিটা সম্বল।
শীতকালে দিনে-রাতে শুয়ে পড়ি শিঘ্রী
মেঘ হলে ঠাণ্ডার বেড়ে যায় ডিগ্রী।
শীতকালে পিঠা-পুলি রস খাই মিষ্টি
শীতকালে কুয়াশায় থেমে যায় বৃষ্টি।
শীতের কষ্ট
মোস্তফা মুনতাজ
পথের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে শীতে
পারো না তুমি একটি কাপড় দিতে
হোকনা তোমার ছেঁড়া একটা কম্বল
তবুও হবে তাদের বাঁচার সম্বল।
ওয়ারড্রোবের উঁচু নিঁচু তাকে
কত কাপড় সাজানো তোমার থাকে।
সবচেয়ে খারাপ যে কাপড়টি আছে
দাওনা তুমি তাদের হাতের কাছে
হিমেল হাওয়ায় তাদের দেহ কাঁপে
যায় না দেখা ঘন কুয়াশার চাপে।
শিশির ভেজা দেহে কতো খানি
কেউ জানে না কতো চোখের পানি।
শীতের কথা
জোবায়ের রাজু
শীত এলো গীত গেয়ে কেঁপে যায় বুক,
শীত কারো অশান্তি কারো মনে সুখ।
শীতে দেখো কাঁপে এই ছোট্ট গ্রাম,
শীত পেয়ে খুশি কেউ, বাড়ে ইনকাম।
খালে বিলে উড়ে আসে অতিথি পাখি,
বাংলার এই রূপে জুড়িয়ে আঁখি।
কুয়াশায় ঢেকে আসে ভোরের আবেশ,
শীতে কাঁপি আমি আর আমার স্বদেশ।
খেজুরের রস নিয়ে রোজ ভোর হয়,
নমনীয় রোদ এলে ঘরে থাকা নয়।
ভাঁপা পিঠা মিঠা মিঠা ঘুম ছেড়ে উঠি,
নয়নের জঢ়তাকে দিলাম যে ছুটি।
শীতের দিনে
বিধান চন্দ্র দেবনাথ
শীতের দিনে গরিব শিশু
কষ্ট পায় শীতে,
শীতকে তাড়ায় তারা
নানা রকম গীতে।
তাঁদের গায়ে গরম কাপড়
দেখতে পাওয়া দায়,
ছেঁড়া কাপড় পরে তারা
দিনগুলো কাটায়।
পাতলা আর ছেঁড়া কাপড়
পরে কাটায় দিন,
শীতের দিনে তাদের মনে
বাজে না আর বীণ।
শীতের কষ্টে গরিব দুঃখী
ভুগে ধুঁকে ধুঁকে,
তাদের পাশের বিত্তশালী
থাকেন মহাসুখে।
পাখপাখালির সঙ্গী
শামীম খান যুবরাজ
বুলবুলি খায়
টুনটুনি গায়
ফুলঝুরি যায় উড়ে,
মাছরাঙা-বক ফিরে আসে
নদীর ওপার ঘুরে।
শালিক দোয়েল নিত্য ডাকে
বাড়ির আশেপাশে,
কানাকুয়া শামুক খোঁজে
আলের সবুজ ঘাসে।
কাক কোকিলের লুকোচুরি
ডাক ডাহুকে শুনেÑ
তালের পাতায় জোনাক জ্বালায়
বাবুই বাসা বুনে।
চড়–ইপাখির ডাকে মুখর
গাঁয়ের পুরো বাড়ি,
পাখপাখালির সঙ্গে থেকে
দিচ্ছি জীবন পাড়ি।
রোজ সকালে
জাকিরুল চৌধুরী
রোজ সকালে জেগে দেখি
ডাকছে আমার মা,
মা বলেন সন্তান ওরে
আর কাঁদিস না।
আমি আছি তোমার সনে
দেখো নয়ন মেলে,
মায়ের কথা শুনে তখন
চুপটি করে ছেলে।
হাড় কাঁপানো শীত
সরোয়ার রানা
হাড় কাঁপানো শীত এসেছে
গরম জামা কই
শীতের ভয়ে চুপটি মেরে
শুয়ে বসে রই।
ঠান্ডা পানি যমের মতো
পায় যে সবাই ভয়
তাইতো খোকা পুকুর থেকে
দূরে দূরে রয়।
ফন্দি এঁটে যেই নিয়েছে
কা- হুলুস্থুল
বাঁদর নাচে লাফায় খোকা
হেসে না পাই কূল।
শিক্ষা
তাজুল ইসলাম নাহীদ
হতে চাইলে বড় তুমি
পড়তে হবে বেশ,
তবেই একদিন চিনবে তোমায়
দেশ থেকে ঐ দেশ।
পড়ালেখার বিকল্প যে
ভিন্ন কিছু নাই,
এসো সবে বেশি বেশি
পড়ি আমরা তাই।
শিক্ষার কোনো বয়স যে নাই
ঝেড়ে ফেলো লাজ,
তবেই তুমি করতে পারবে
সবার মাঝে রাজ।
সত্যিকারের বীর
হোসাইন মোস্তফা
হাড়কাঁপানো হিমেল দিনেও
সাতসকালে উঠে
বাংলাদেশের বীর কৃষকে
মাঠের পানে ছুটে।
কাদামাটি ঘেঁটেই ওরা
ফলায় ফসল- ধান
কুয়াশাতেও হয়না কাবু
কী সহিষ্ণু প্রাণ!
বরফ জলে নামছে দ্যাখো
ঐ তো জেলে ভাই
মাছ ধরছে উদোম গায়ে
শীত তোয়াক্কা নাই।
বাংলাদেশের কৃষক- জেলে
সত্যিকারের বীর
তোমাদেরকে স্যলুট জানাই
নত করি শির।
যেই ছেলেটি
নাসরীণ রীণা
পথের ধারের যেই ছেলেটি কাঁপছে শীতে,
হৃদয় কেঁপে উঠল দেখে আচম্বিতে।
আছি কত মহাসুখে অট্টালিকায়,
লেপের নিচে আরাম করে সুবিছানায়।
থাকত যদি একখানা তার ছেঁড়া কাঁথা,
কিংবা ছোট কোনরকম মাদুর পাতা।
লড়ছে জীবন শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে,
যেন এখন প্রাণটা যাবে বরফ হয়ে।
হুতুম পেঁচা
সরকার জাহিদুল ইসলাম
হুতুম পেঁচা হুতুম পেঁচা
কে দিয়েছে মার?
সারাক্ষণই মুখটা কেন
এমন তোমার ভাড়?
না ঘুমিয়ে সারাটা রাত
থাকো তুমি জেগে
কার ওপরে বলতো ভাই
আছো এমন রেগে।
তোমার না কি বুদ্ধি অনেক
বইটা কখন পড়ো!
রাগের মাথায় খাওয়া-দাওয়া
কখন কি যে করো?
না কি তোমার নাইকো দাঁত
হাসো নাকো তাই
এই দেখ না ফোকলা দাঁতেও
আমি হেসে যাই।
নতুন বইয়ের ছড়া
শেখ সোহেল রেজা
হাতে পেয়ে বেজায় খুশি
ছড়ার নতুন বই,
খুকির সাথে পড়ছে ছড়া
ময়না, টিয়া অই।
পাঠশালায় যাবে খুকি
পড়বে ছড়া কত,
হাট্রিমাটিম টিম আর
আছে ছড়া যত।
খাওয়া নেই, নাওয়া নেই
সারাটাদিন পড়া,
পড়তে ভালো লাগে খুকির
নতুন বইয়ের ছড়া।
অতুল সুন্দরবন
গাজী আবদুস সালাম
সুন্দরী গাছ আর গেওয়া, গরান
সুশীতল গোলপাতায় জুড়ায় পরান।
আরো আছে কেউড়া ওড়ার শোভা
মায়াবী হরিণেরা কী যে মনোলোভা!
বাঘ আর হরিণের নেই দোস্তি
জেলে ভাই মাছ ধরে পায় স্বস্তি
খালে থাকে কুমিরের দুষ্ট ছানা
সেইখানে যেতে আছে সবার মানা
মৌচাকে মধু রাখে মৌমাছির পাল
খুশি মনে মধু নেয় ক্লান্ত মৌয়াল।
ছোট ছোট কাঁকড়া বালুচরে হাঁটে
জেলেদের নাও থাকে নদীর ঘাটে
মৌটুসী, বনমালী আরো কত পাখি
দেখলেই মন ভরে জুড়ায় আঁখি।
এই হলো আমাদের সুন্দরবন
যাও যদি একবার জুড়াবেই মন।
নতুন বছর
তুষার ইসলাম
নতুন বছর নতুন বছর
খোকন সোনা কই
আমন ধানের চিতই পিঠা
মায়ের হাতে ঐ।
নতুন বছর নতুন ক্লাসে
হাতে নতুন বই
এই খুশিতে তিড়িং-বিড়িং
নাচে খোকা ওই।
নতুন বছর নতুন বছর
গাইছে খোকা গান
মায়ে রাঁধে পোলাও কোরমা
মুরগির আস্ত রান।