কবিতা
জামাই বাবার আছাড়
আকিব শিকদার
বৃষ্টি-ঝড়ে আঙিনাতে কাদা।
কাদায় আছাড় খেয়েছে যেই
গেলো যে মর্যাদা।
আছাড় মানেই কাদায় মাখামাখি।
শুভ্র সাদা পাঞ্জাবি আর মুকুট
এক নিমেষেই খাকি।
চারটি দিকে পড়লো হাসির রোল।
মুরব্বিগণ বললো এসে স্নেহে
‘জামাই বাপকে তোল’।
মুখে যদিও হাসি ছিলো রুমাল ঢাকা,
কোমর বুঝি ভেঙেই গেছে, মচকে গেছে হাটু
শরীরটা যে জলে কাদায় মাখা।
ভালোবাসি
সাকী মাহবুব
ভালোবাসি
পাখি আর ফুলকে
ভালোবাসি
যমুনার কূলকে।
ভালোবাসি
বিল আর ঝিলকে
ভালোবাসি
আকাশের নীলকে।
ভালোবাসি
তিল আর তালকে
ভালোবাসি
শিশুদের গালকে।
ভালোবাসি
বই আর খাতাকে
ভালোবাসি
কুরআনের পাতাকে।
বৃষ্টি এলো
সাইফুল্লাহ ইবনে ইব্রাহিম
বৃষ্টি এলো ঝুমঝুমিয়ে
বৃষ্টি এলো নেচে,
বৃষ্টি এলো হুড়মুড়িয়ে
বৃষ্টি এসে গেছে!
বৃষ্টি এলো মুষলধারে
বৃষ্টি এলো গাঁয়ে,
বৃষ্টি এলো শহর-নগর
নদীর বুকে না'য়ে।
বৃষ্টি খুবই মিষ্টি লাগে
টাপুরটুপুর ছন্দ,
বৃষ্টিজলে ভিজতে লাগে
কী যে মহানন্দ!
মনটা তখন
আব্দুল্লাহ বিন রওহা তুহিন
নীল আকাশে পাখি ওড়ে
মুচকি হেসে যায়,
আজব চোখে দেখে আমায়
সুর মিলিয়ে গায়।
মনটা তখন হয় যে ভালো
দাদু কাছে পেলে,
দিন কেটে যায় তারই সাথে
মজার খেলা ছলে।
পূর্বকোণের ঠা-া হাওয়া
লাগলো যখন গায়ে,
সবাই মিলে মগ্ন থাকি
মিষ্টি গরম চায়ে।
আম্মু আমার
মুস্তাফা ইসলাহী
আম্মু আমার ভীষণ ভালো
হাত বুলিয়ে গায়
হরেক রকম গল্প বলেন
হৃদয় ভরে যায়।
অসুখ হলে শিয়র পাশে
বসে থাকেন ঠাঁই
ভাবেন শুধু আমি খোকা
কী যে এখন খাই?
আদর করে চুমু খেয়ে
বলতে থাকেন মা
ভালোর সাথে চলিস বাবা দুষ্টের সাথে না।
বাঘের শাস্তি
কবির মাহমুদ
একদিন বাঘকে বলেছিল গাধা,
বলো তো ঘাসের রঙÑ
নীল না-কি শাদা?
হেসে হেসে বাঘমামা কয় রে বেকুব,
সবুজ ঘাসের বুকে
দেস না রে ডুব!
তুই তো সারাদিন তা-ই খেয়ে যাস,
বৃক্ষ সবুজ আরÑ
লতাপাতা ঘাস।
বারবার গাধা বলে ঘাস হলো নীল,
এই নিয়ে তর্ক-
বাড়ে তিল তিল।
গাধা বলে সিংহের দরবারে চলো,
ঘাস কি নীল নয়-
মহারাজ বলো ?
দেখুন না মহারাজ বাঘ কি যে কয়?
সবুজ ঘাসের রঙÍ
কি করে তা হয়!
আগে বাগে গাধাটি বলে দেয় যেই,
হ্যাঁ হ্যাঁ ঘাসের রঙÍ
নীল তো বটেই।
বাঘের শাস্তি হলো মৌন থাকার,
কতো খুশি! ঘাস নীলÑ
দেখে কে গাধার?
শাস্তি মেনে নিয়ে বলে মহারাজ,
সবুজ ঘাসের রঙÍ
নীল! হলো আজ!
ঘাস তো সবুজ বটে সন্দেহ তাতে?
তর্ক কি করে কেউÑ
মুর্খের সাথে।
সাহস বুদ্ধিতে তুমি সাগর অতল,
তর্কে গাধার সাথেÑ
পেয়েছ তা ফল।
খোকন সোনা
মেহেদী হাসান কায়েস
খোকন সোনা বড্ড ভালো
করতে পারে সবি,
ভাসে আমার দু'চোখ মাঝে
খোকন সোনার ছবি।
ভাবতে পারে আঁকতে পারে
লিখতে পারে ছড়া,
খেলতে পারে লুকোচুরি
শিখতে পারে পড়া।
হাসতে পারে কাঁদতে পারে
বুঝতে পারে মানে,
থাকতে পারে মিলেমিশে
ভালোবাসার টানে।
বর্ষার ফুল
শেখ বিপ্লব হোসেন
আষাঢ়-শ্রাবণ মেঘলা আকাশ
বৃষ্টিফুলের ছন্দ,
কদমফুলের সুবাস কী যে
আকুল করা গন্ধ!
বৃষ্টি স্নাত কেয়া, বেলি
দোলনচাঁপার হাসি,
বকুল ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণে
মনগগনে ভাসি।
নজরকাড়া অলকানন্দা
শাপলা ফোটা ঝিল,
হরেক ফুলের শোভা হৃদে
আনন্দ ঝিলমিল।
শুভ্র কোমল গন্ধে ভরা
নেই কামিনীর তুল,
সন্ধ্যামালতি, নার্গিস আর
অপরূপ ঘাসফুল।
কোলাব্যাঙ
দ্বীন মোহাম্মাদ দুখু
বর্ষা এলে কোলাব্যাঙে
ডাকে খালে বিলে,
সর্প দেখি সাঁঝ সকালে
কোলারে খায় গিলে।
শীত গরমে কোলাব্যাঙের
ডাক শুনি না জলে,
কোলাব্যাঙ কি যায় হারিয়ে
গভীর জলের তলে?
আষাঢ়
নূর মোহাম্মদ দীন
কদম কেয়া ফুটছে কত আষাঢ় বাদল ধারায়
মেঘবালিকা ছুটছে দেখ
শহর গাঁয়ে পাড়ায়।
ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি যখন অঝোর ধারায় নামে
কদম কেয়া চিঠি লিখে
পাপড়ি আঁকা খামে।
হিজল বনে চিঠি আসে বৃষ্টি ভেজা ডাকে
খবর পেয়ে ব্যাঙ সাথীরা
নাচতে সবাই থাকে।
ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর গান ধরে সব ব্যাঙের ছানা-পোনা
আষাঢ় এলেই গুড়ুম গুড়ুম
মেঘের ডাক যায় শোনা।
হাওড়ে
শাহ আলম বিল্লাল
জল জল টলমল
চারদিক হাওড়ে
চল্ যাই ঘুরতে
ভাটিয়ালি নাও রে।
ঝলমল কলকল
যেদিক দৃষ্টি
মেঘ মেঘ শন শন
দারুণ অনাসৃষ্টি।
সুন্দর দৃশ্য
জল একাকার
একবার দেখলে
চল্ যাই আবার।
চিক চিক ঝিক ঝিক
টলমল পানি
নৌকায় বসে বসে
দেখি গ্রামখানি।