গত ৫০ বছরে ঢাকার উন্নয়নে পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি
স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, গত ৫০ বছরে ঢাকার উন্নয়নে কোনো পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা শুধু রুটিন ওয়ার্ক করেছেন। রাজউক বা অন্যান্য উন্নয়ন সংস্থাগুলোর নেওয়া পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছেন। গতকাল বুধবার বেলা ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের মানিক মিয়া মিলনায়তনে ‘রাজধানীর উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক নগর সংলাপে তিনি এ কথা বলেন। নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম, বাংলাদেশ এই নগর সংলাপের আয়োজন করে।
সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নগর পরিকল্পনাবিদ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ।
ঢাকা দক্ষিণের মেয়র বলেন, একটি রাজধানী হিসেবে যেমন পরিকল্পনা নেওয়ার কথা ছিল, সেটা নেওয়া হয়নি। যেখানে পরিকল্পনাই নেই, সেখানে বাস্তবায়নের প্রশ্নই আসে না। তারপরও কিছু-কিছু পরিকল্পনা যেগুলো বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে মহাপরিকল্পনা নিয়ে, কিভাবে সেটি বাস্তবায়ন করব, সেদিকে নজর দিয়েছি। আমরা সে লক্ষ্যে ওয়ার্ডভিত্তিক পরিকল্পনা সাজাচ্ছি। আমরা মৌলিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছি। প্রত্যেক ওয়ার্ডে ১টি খেলার মাঠ, বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র, সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র ও ১টি করে কাঁচাবাজার স্থাপন করব। ইতোমধ্যেই আমরা বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র ২৪টি থেকে ৫৬টিতে উন্নীত করেছি।
পানিবদ্ধতা নিরসনে উন্নয়নের প্রসঙ্গে মেয়র তাপস বলেন, আমরা সড়ক বিভিন্ন স্থানে প্রশস্ত করেছি। মুষলধারে বৃষ্টি হলেও আধ ঘণ্টার মধ্যেই পানি নিষ্কাশনে সক্ষম সড়কগুলো। ৭০ ভাগ সড়কই এমন। ৩০ ভাগে হয়তো সমস্যা আছে। তিনি বলেন, পানিবদ্ধতা যাতে না হয় সেজন্য আমরা বর্ষায় সড়ক খোঁড়াখুঁড়ির অনুমতি দেইনি। যেটুকু কাজ হচ্ছে সেটি আমাদের নিজস্ব অবকাঠামো নির্মাণের কাজ।
সংলাপে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিয়া বলেন, ঢাকায় জনসংখ্যার চাপ যদি কমানো যায় তাহলে বাকি কাজগুলো সহজ হয়ে যাবে। যেমন, ঢাকার আশেপাশের মানুষ যদি প্রতিদিন ঢাকায় এসে কাজ করে আবার নিজ এলাকায় ফিরে যায়, তাহলে চাপ অনেক কমবে। এ লক্ষ্যে আমরা ৩টি সংযোগ সড়ক যথাক্রমে এয়ারপোর্ট, ৩০০ ফিট, মাদানী এভিনিউ এই তিনটি পয়েন্ট স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছি। এটি বাস্তবায়িত হলে যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভালো হবে।
নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি অমিতোষ পালের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন দুর্ঘটনা গবেষণা ইনিস্টিটিউট, বুয়েট এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান, ইনিস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি) সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন (শীবলু) পিইঞ্জ, স্থপতি ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ফারহানা শারমিন, বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব প্লানার্স (বিআইপি) এর সভাপতি ফজলে রেজা সুমন, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক, বনিলীমা আখতার, ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) এর প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম, এলআইইউপিসি ইউএনডিপির প্রকল্প পরিচালক ইয়োগেশ প্রদানাং প্রমুখ।