বুধবার ০১ মে ২০২৪
Online Edition

বাঁধ ভেঙে যে কোন সময়ে ফসলহানির আশঙ্কা

নেত্রকোনা সংবাদদাতা : নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় যে কোন সময় ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে ফসল হানির আশংকায় হাওড়াঞ্চলের কৃষকরা দ্রুত ধান কেটে ঘরে তোলার প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গতকাল রোববার ধনু নদীর পানি বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত জানান, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে জেলার প্রধান প্রধান নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ধনু নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। শনিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত ধনু নদীর পানি ২ সেঃ মিঃ নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগাম বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে হাওড়ের ফসলের যাতে কোন ধরনের ক্ষয়-ক্ষতি হতে না পারে তার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকল কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রশাসন ও এলাকাবাসী সতর্ক অবস্থায় বিভিন্ন বাঁধে অবস্থান করছে।
নেত্রকোনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ এফ এম মোবারক আলী জানায়, এ বছর নেত্রকোনা জেলায় ১ লক্ষ ৮৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১১ লক্ষ ৫৬ হাজার ৫৩ মেট্রিক টন। খালিয়াজুরী, মদন ও মোহনগঞ্জ এই তিন হাওড় উপজেলায় ৪৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে অব্যাহত বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে বাঁধ ভেঙে হাওড়ের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে এই আশংকায় সরকার ৮০ ভাগ ধান পাকলেই হাওড়ের কৃষকদেরকে ধান কাটার নির্দেশ দেয়ায় জেলা কৃষি বিভাগও কৃষকদেরকে দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দিচ্ছে। এদিকে খালিয়াজুরী উপজেলার ধনু নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় হাওড়াঞ্চলের কৃষকরা খালিয়াজুরী, মদন ও মোহনগঞ্জের বিভিন্ন হাওড়ে পুরোধমে ধান কাটা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরো জানান, হাওড়াঞ্চলের তিন উপজেলায় দ্রুত ধান কাটার জন্য ৩ শত ৩২ টি হারভেস্টার মেশিন ও প্রায় ১০ হাজার কৃষক দিন রাত ধান কাটার ব্যস্ত রয়েছে। শনিবার পর্যন্ত হাওড়ের প্রায় ৫০ ভাগ ধান কর্তন করা হয়েছে।
 খালিয়াজুরী সদরের কৃষক সবুজ মিয়া জানান, আমাদের এলাকায় বি আর-২৮ ধান কাটা শেষ হয়েছে এখন চলছে হাইব্রিড ধান কাটা যা কয়েক দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।
গত সপ্তাহে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে ধনু নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে খালিয়াজুরি ও মদন উপজেলায় ৫শ’ হেক্টর জমির বোরো ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়। এ সময় খালিয়াজুরী উপজেলার কীর্তনখোলা বাঁধের কয়েকটি অংশে ফাটল দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় গ্রামবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাঁধ মেরামত করা হয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ