ঢাকা, রোববর 19 May 2024, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী
Online Edition

ইউক্রেনের ইহুদীরা পালাচ্ছেন জার্মানীতে

সংগ্রাম অনলাইন ডেস্ক: পোল্যান্ডের ওয়ারস-র কেন্দ্রীয় ট্রেন স্টেশনে অপেক্ষা করছেন ইউক্রেনের শরণার্থীরা। এখন পর্যন্ত ৩৭ লক্ষ মানুষ যুদ্ধটি থেকে পালিয়েছে, যেটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এ পর্যন্ত ইউরোপে সবচেয়ে বড় এমন ঘটনা। ২৭ মার্চ, ২০২২।

পোল্যান্ডের ওয়ারস-র কেন্দ্রীয় ট্রেন স্টেশনে অপেক্ষা করছেন ইউক্রেনের শরণার্থীরা। এখন পর্যন্ত ৩৭ লক্ষ মানুষ যুদ্ধটি থেকে পালিয়েছে, যেটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এ পর্যন্ত ইউরোপে সবচেয়ে বড় এমন ঘটনা। ২৭ মার্চ, ২০২২।

যখন গত মাসে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বোমাবর্ষণ আরম্ভ হয়, তখন তাতিয়ানা জুরাভলিয়োভা আবারও একটি ভয়ানক স্মৃতির অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যান। ৮৩ বছর বয়সী ইউক্রেনীয় এই ইহুদী ছোটবেলায় যেই আতঙ্ক অনুভব করেছিলেন, সেই একই আতঙ্ক তিনি আবারও অনুভব করেন। তিনি যখন ওডেসায় ছোট ছিলেন তখন ঐ শহরের উপর নাৎসিরা বিমান হামলা চালাচ্ছিল।

জুরাভলিয়োভা বলেন, “আমার পুরো শরীর কাঁপছিল, এবং সেই পুরোনো ভয়গুলো আবারও আমার সারা শরীর বেয়ে উঠে আসে – আমি জানতামও না যে ঐ আতঙ্ক এখনও আমার মধ্যে লুকিয়ে ছিল।”

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন বোমা থেকে বাঁচতে তিনি কিভাবে টেবিলের নিচে লুকিয়ে থাকতেন, সেই কথা মনে করতে গিয়ে তার চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে ওঠে। যখন নাৎসি ও তাদের দোসররা ওডেসায় হাজার হাজার ইহুদীকে মেরে ফেলা শুরু করে, তখন তিনি তার মায়ের সাথে কাজাখস্তানে পালিয়ে যান।

জুরাভলিয়োভা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে রবিবার বলেন, “এখন দৌড়ে বাঙ্কারে গিয়ে লুকানোর জন্য আমি বেশি বুড়ো হয়ে গিয়েছি। তাই আমি আমার অ্যাপার্টমেন্টে বসেই প্রার্থনা করেছি যাতে আমি বোমায় মারা না যাই।” জুরাভলিয়োভা একজন অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার।

কিন্তু যখন ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণটি আরও নিষ্ঠুর হয়ে উঠে এবং তারা আবাসিক ভবনগুলো গুঁড়িয়ে দিতে থাকে, তখন তিনি বুঝতে পারেন যে তাকে আবারও পালাতে হবে যদি তিনি প্রাণে বাঁচতে চান। তাই তাকে ইউক্রেন থেকে বের করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি ইহুদী সংগঠনের দেওয়া এক প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান তিনি।

ইতিহাসের অপ্রত্যাশিত এক মোড়ে, হলোকস্টে বেঁচে যাওয়া প্রায় ১০,০০০ ইহুদীকে ইউক্রেন থেকে সরিয়ে জার্মানীতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই দেশে, যেই দেশটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আরম্ভ করেছিল এবং ইউরোপ জুড়ে ৬০ লক্ষ ইহুদীকে হত্যা করেছিল।

জুরাভলিয়োভা বলেন যে, অতীতে ইহুদীদের প্রতি দেশটির নিষ্ঠুর আচরণের ইতিহাস সত্ত্বেও, বর্তমানে জার্মানীতে এসে তিনি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।

তিনি বলেন, “আমার মনে হয় এই দেশটি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়েছে এবং আমাদের জন্য এখন ভাল কিছু করার চেষ্টা করছে।”

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ