রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

চট্টগ্রামে করোনায় একদিনে ৩ জনের মৃত্যু ॥ শনাক্ত ৪১৪

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪১৪ জনের দেহে। এদের মধ্যে ৩৭৩ জন নগরীর ও ৪১ জন বিভিন্ন উপজেলার। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪২ হাজার ৭১৫ জনে। এই নিয়ে করোনায় মোট ৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৭ এপ্রিল) চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। আরও জানা যায়, গত মঙ্গলবার চট্টগ্রামের ৮টি ল্যাবে ২ হাজার ৭৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। এদের মধ্যে ৪১৪ জনের দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।  এদিকে করোনা মহামারি মোকাবিলায় আবারও বন্দর ইপিজেড পতেঙ্গা করোনা হাসপাতাল চালু করা হয়েছে।  বুধবার  থেকে রোগী ভর্তি ও আউটডোর রোগীসেবা কার্যক্রম চালু করা হয়। হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, আইসোলেশন সেবা ও অক্সিজেন সেবা দেওয়া হবে বলে জানান উদ্যোক্তারা। হাসপাতালে দায়িত্বরত ডা. ইমরান বীন শওকত, ডা. আখীল ইবনে তাহের, ডা. ফাহাদ হোসেন, ডা. নোমান রোগীদের সেবা দিচ্ছেন।

 এদিকে চট্টগ্রামে করোনা রোগীর আত্মীয়স্বজনরা চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগ করে নানা মন্তব্য করছেন। তারা বলছে,চট্টগ্রামে বেসরকারি খাতে বিভিন্ন হাসপাতাল গড়ে উঠলেও মান সন্তোষজনক নয়। ফলে বাধ্য হয়ে রোগীদের ছুটতে হচ্ছে ঢাকায়। হাতেগোনা কয়েকটি ছাড়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে মেলে নিম্নমানের চিকিৎসা সেবা। এছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত দুর্বলতাও রয়েছে। বেশিরভাগ হাসপাতালে নেই সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন ও আইসিইউ। রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন রোগের বিশেষায়িত হাসপাতাল থাকলেও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রামে নেই সরকারি কোনো বিশেষায়িত হাসপাতাল। ফলে রোগীদের বাধ্য হয়ে ছুটতে হয় ঢাকায়। বিশেষায়িত হাসপাতাল হলে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন হতো  ।

 এদিকে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল’র চিকিৎসকদের করোনাকালীন জরুরী পরিবহন সেবা প্রদানের লক্ষ্যে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি মাহবুবুল আলম ব্যক্তিগতভাবে একটি মাইক্রোবাস সরবরাহ করেন। ০৭ এপ্রিল সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার প্রাঙ্গনে চেম্বার সভাপতির পক্ষে মাইক্রোবাস হস্তান্তর করেন চেম্বার পরিচালক মোঃ অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন)।

মিরসরাই (চট্টগ্রাম)সংবাদদাতা জানান, চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সারাদেশের সাথে ৮এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে  করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দ্বিতীয় ডোজ টিকা প্রদান কার্যক্রম। ১ম ডোজের টিকা নিয়ে থাকলে ৮ সপ্তাহ পর মোবাইলে মেসেজ পেলে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে গিয়ে ২য় ডোজের টিকা নিতে টিকার কার্ড সাথে নিতে হবে। কোন কারণে মোবাইলে মেসেজ না গেলেও ৮সপ্তাহ পূর্ন হওয়ার পর নির্দিষ্ট কেন্দ্রে গিয়ে ২য় ডোজ টিকা গ্রহন করা যাবে। ৭-৮ ফেব্রুয়ারী যারা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে  ১ম ডোজ টিকা নিয়েছেন তারা কোন এসএমএস না পেলেও ৮এপ্রিল উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকার কাড  সাথে নিয়ে টিকা গ্রহন করতে পারবেন। একই সাথে করোনার ১ম ডোজ টিকা প্রদান ও টিকা গ্রহনের রেজিষ্ট্রেশন চলমান রয়েছে। মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ৮ এপ্রিল সরকারী নির্দেশনায় সারাদেশে দ্বিতীয় ডোজ টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে। এখন পর্যন্ত  প্রায় ৩হাজার ২শত ৭টি ডোজ টিকা মজুদ রয়েছে। সেখান থেকেই দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রম চালানো হবে। পাশাপাশি প্রথম ডোজ প্রদানের প্রক্রিয়া চলবে। 

জানা গেছে, গ্রামের মানুষ অহরহ করোনায় সংক্রমিত হলেও  টিকা গ্রহণে আগ্রহী কম। মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, সর্বশেষ রোববার (৪এপ্রিল) মিরসরাইয়ে টিকা গ্রহণ করেছেন ৬৮জন। এর মধ্যে পুরুষ ৩৯জন, মহিলা ২৯জন। সর্বমোট টিকা রেজিষ্ট্রেশন কারীর সংখ্যা ১৮৭০২জন। প্রথম ডোজ টিকা গ্রহন করেছেন ১৫হাজার ৪শত ৯৫জন, পুরুষ ৯হাজার ১শত ৬০জন, মহিলা ৬হাজার ৩শত ৩৫জন। বর্তমানে টিকা রির্জাভ রয়েছে ৩হাজার ২শত ৭টি। প্রথমদিকে টিকাদান কেন্দ্র গুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় থাকলেও আগ্রহীর সংখ্যা কমে যাওয়ার  কারণ হিসেবে ডা. মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি এমন নয় যে মানুষের মধ্যে আগ্রহ কমে গেছে। রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে। টিকা নিতে ওই বয়সের মানুষের সংখ্যা ক্রমশ কমে এসেছে। তাই টিকা গ্রহীতার সংখ্যাও কমেছে। দ্বিতীয় ডোজ চালু হলে এবং রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে বয়সসীমার সীমাবদ্ধতা না থাকলে টিকা গ্রহীতার সংখ্যা বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ