ঢাকা, ‍শনিবার 18 May 2024, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী
Online Edition

গণভবনের লেকে ছিপ দিয়ে মাছও ধরি: প্রধানমন্ত্রী

সংগ্রাম অনলাইন ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সকালে উঠে আমি জায়নামাজ খুঁজি। ঘুম থেকে উঠেই নামাজ পড়ি। এরপর কোরআন তিলাওয়াত করি। এরপরে এক কাপ চা নিজে বানাই। আমার চা টা আমি নিজেই বানিয়ে খাই। চা বানাই, কফি বানাই। আমি নিজে বানাই।

বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বিরোধী দলের সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাসায় আমার ছোটবোন থাকে। যে আগে ওঠে সে বানায়। এখন আমার মেয়ে পুতুল আছে। যে ঘুম থেকে আগে ওঠে সেই বানায়। আমরা নিজেরা করে খাই। এর আগে নিজের বিছানা থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে বিছানাটা গুছিয়ে রাখি নিজের হাতে।

তিনি বলেন, এরপরে বই-টই যা পড়ার পড়ি। ইদানীং করোনাভাইরাসের কারণে সকালে একটু হাঁটতে বের হই। তবে আরেকটা কাজ করি এখন। গণভবনে একটি লেক আছে। যখন হাঁটতে যাই, হাঁটা শেষে যখন লেকের পাশে বসি, তখন একটা ছিপ নিয়ে বসি, মাছও ধরি।

‘আপনি চাকরি করেন, আপনার মায়না দেয় এই গরিব কৃষক, আপনার মায়না দেয় এই জমির শ্রমিক। আপনার সংসার চলে এই টাকায়। আমি গাড়ি চড়ি ওই টাকায়। ওদের সম্মান করে কথা বলেন। ওদের ইজ্জত করে কথা বলেন, ওরাই মালিক। ’ ফখরুল ইমাম বঙ্গবন্ধুর এই উদ্ধৃতি উল্লেখ করে বলেন, সরকার এখনো এই কথাগুলোর ওপর ভরসা করে কি-না।

এ বিষয়ে সংসদ নেতা বলেন, বঙ্গবন্ধুর এই আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরাও কিন্তু এটাই বিশ্বাস করি। আমরা ছোটবেলা থেকে সেভাবেই শিক্ষা নিয়েছি। আমার বাবার নির্দেশ ছিল। একজন রিকশাওয়ালাকে আপনি করে কথা বলতে হবে। বাড়ির ড্রাইভারকে ড্রাইভার সাহেব বলতে হবে। আর কাজের যারা লোকজন, তাদের কখনও চাকর-বাকর বলা যাবে না। হুকুম দেয়া যাবে না। তাদের কাছে সম্মান করে চাইতে হবে। প্রধানমন্ত্রী হতে পারি এখনো কারো কাছে যদি এক গ্লাস পানিও চাইতে হয় (যতটুকু পারি নিজেই করে খাই) তাদের জিজ্ঞেস করি আমাকে এক গ্লাস পানি দিতে পারবে। এই শিক্ষাটা আমরা নিয়ে এসেছি। এখনও মেনে চলি। এটা বাবারই শিক্ষা। শুধু তিনি বলে গেছেন তা না। এই শিক্ষাটা আমাদের দিয়েও গেছেন। কাজেই সেই দিক থেকে আমি মনে করি মানুষ গরিব দেখলে বা ভালো পোশাক না পড়লে তাকে অবহেলা করতে পারে, কিন্তু আমাদের কাছে কিন্তু সেটা না। আমাদের কাছে সবাই সমান সমাদর পায়। বরং যাদের কিছু নাই, তাদের দিকে আমরা একটু বেশি নজর দিই, দৃষ্টি দিই।

বিরোধী দলের সংসদ সদস্য রোস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, কথাটা তো একেবারে বাস্তব যে ঘরে ঘরে, বেডরুমে বেডরুমে কেউ পাহারা দিতে পারে না। কিন্তু তারপরেও আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য এবং এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমরা সব সময় সজাগ রয়েছি, ব্যবস্থা নিচ্ছি।

তিনি বলেন, একজন ইউএনওর যে ঘটনাটা ঘটে গেছে, ওয়াহিদার ক্ষেত্রে যেটা ঘটেছে, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। বাড়ির ভেতরে ঢুকে এভাবে আক্রমণ করা বা হাতুড়ি দিয়ে পেটানো...চোর ঢোকে চুরি করতে.. কিন্তু এভাবে একটা সরকারি কর্মচারীর ওপর হামলা করা। এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এর বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, একটা কথা আপনারা জানেন যে, এই বাংলাদেশে কী ঘটনাটা ঘটেছে...পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্টে ঘরে ঢুকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে...তিনি তো রাষ্ট্রপতি ছিলেন...গোটা পরিবারকে হত্যা করেছে... এবং সেই খুনিদের ইনডিমিনিটি দিয়ে বিচারের হাত থেকে মুক্ত করেছে।

তিনি বলেন, যারা এত বড় ক্রিমিনাল, এই ধরনের খুনি, ক্রিমিনালদের যখন প্রশ্রয় দেয়া হয়, মানসিকভাবে সেই দেশের মানুষের কী রকম চরিত্র হতে পারে সেটাই বিবেচ্য বিষয়।

সরকার প্রধান আরো বলেন, সেখান থেকে একটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা, ডিসিপ্লিনে নিয়ে আসা, অন্যায়কারী... তাদের বিরুদ্ধে যেন শাস্তি হয়, বিচার হয় এটাই তো সব থেকে বড় কাজ। ঘটনা যেকোনো সময় ঘটতে পারে। সেই ঘটনার সাথে সাথে আমরা সরকার পক্ষ থেকে যারা অপরাধী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি কি-না সেটাই হচ্ছে বড় প্রশ্ন। সে কারণে আমরা যখনই যেখানে যে ঘটনা ঘটে, যারা জড়িত, তদন্তে যার নাম আসবে, যে জড়িত, সে কে, কী করে- আমি সেটা দেখতে চাই না। আমি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কিন্তু নিচ্ছি এবং আমরা এটা নেবো।

তিনি বলেন, সেটা আমরা করে যাচ্ছি। এটা সকল ক্ষেত্রে। এর বেশি আর কিছু বলার নেই। কারণ, যে দেশে খুনিদের পুরস্কৃত করা হয় দূতাবাসে চাকরি দিয়ে। যে দেশে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া হয়েছে। এ রকম অবস্থা ছিল সেই দেশটাকে ডিসিপ্লিনের ফিরিয়ে আনা, সেই দেশটাকে নিয়মমাফিক চালানো খুব কঠিন একটা দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব আমরা সরকারে আসার পর থেকে পালন করে যাচ্ছি।

ডিএস/এএইচ

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ