ঢাকা, ‍শনিবার 18 May 2024, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী
Online Edition

‘শরণার্থী জীবনে পরিবারের স্বাদ দিয়েছিলেন প্রণব মুখার্জি’

সংগ্রাম অনলাইন ডেস্ক: ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পরের সময়ে দুই বোনকে শরণার্থী হিসেবে জীবন কাটাতে হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় প্রণব মুখার্জি পরিবারের সদস্যদের মতোই তাকে ও শেখ রেহানাকে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে আমরা ভারতে ছিলাম রিফিউজি হিসেবে। নিজেদের নামটা ব্যবহার করতে পারতাম না। নিরাপত্তার কারণে আমাদের ভিন্ন নামে থাকতে হতো। আমরা দুটি বোন নিঃস্ব-রিক্ত অবস্থায়। ওই সময় প্রণব বাবু এবং তার পরিবার, তাদের কাছে পেয়েছিলাম। আসলে পারিবারিক স্বাদ বলতে যেটা বোঝায়, সেটা তাদের কাছেই পেয়েছিলাম। সেই ধারাবাহিকতাটা আমৃত্যু বজায় ছিল।

রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে একাদশ জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশনে সংসদ সদস্য সাহারা খাতুন ও ইসরাফিল আলমের ওপর আনীত শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা এসব কথা বলেন।

শোক প্রস্তাবের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, মৃত্যু অবধারিত। এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু মৃত্যু যে ক্ষতচিহ্নটা রেখে যায়, সেটাই খুব কষ্টকর। সত্যি এটা দুঃখজনক যে আমাদের একের পর এক সংসদ সদস্যদের হারাতে হচ্ছে। আর প্রতিবারই শোক প্রস্তাব গ্রহণ করতে হচ্ছে। করোনাভাইরাসের এই সময়ে যেন এর পরিমাণ আরও বেড়ে গেছে।

এসময় ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিকে বাংলাদেশের ‘অকৃত্রিম বন্ধু’ অভিহিত করে তার মৃত্যুতে গভীর দুঃখ ও শোক প্রকাশ করেন সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, প্রণব মুখার্জি সেই মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের পাশে ছিলেন, পঁচাত্তরেও আমাদের পাশে ছিলেন। পরবর্তী সময়ে যখন ২০০৭ সালে আমি বন্দি, তিনি আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের পক্ষে দাঁড়িয়ে কথা বলেছেন। এমনকি বিশ্বব্যাংক যখন পদ্মাসেতু নিয়ে আমার ওপর দোষারোপ চাপালো, তখনো তিনি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিবাদ করেছেন। সবসময় তিনি বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে চিন্তা করতেন এবং পাশে ছিলেন।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, তিনি অত্যন্ত জ্ঞানী রাজনীতিবিদ ছিলেন। অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। আমাদের এই উপমহাদেশে এ ধরনের জ্ঞানী রাজনীতিবিদ পাওয়া খুব মুশকিল। প্রতিটি বিষয়ের ওপর তার যে দক্ষতা, সবসময় সেটা আমরা দেখেছি। যেকোনো বিষয়ে ভূমিকা রাখতে পারতেন। তিনি কংগ্রেস নেতা হলেও ভারতের সবাই কিন্তু তাকে সম্মান করে। সবাই তাকে দাদা বলেই ডাকে। তিনি কিন্তু আমাদের দেশের জামাইও। তার মৃত্যু এই উপমহাদেশে রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি বড় শূন্যতা। তার আত্মার শান্তি কামনা করি।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৪৯ বছর চলছে। মুক্তিযোদ্ধারা আস্তে আস্তে সবাই আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছে, হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সি আর দত্ত, তিনি মুক্তিযোদ্ধা। যখন জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণ দেন এবং ২৫ মার্চ যখন গণহত্যা শুরু হয়, যে মুহূর্তে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেন, তখনই আমাদের সেনা অফিসাররা সাহসী ভূমিকা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ঠিক সেইভাবে আবু ওসমান চৌধুরী, তিনি তখন চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত ছিলেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। ওসমান চৌধুরী আর সি আর দত্ত আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।

ডিএস/এএইচ

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ