রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

বেনাপোল বন্দরে কন্টেইনার ট্রেনে পণ্য আমদানি শুরু

বেনাপোল সংবাদদাতা : বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রথম কন্টেইনার ট্রেনের মাধ্যমে আমদানি শুরু হয়েছে। গতকাল রোববার ট্রেনের শুভ উদ্বোধন করেন বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনার আজিজুর রহমান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম কমিশনার শহিদুল ইসলাম, বন্দর পরিচালক আব্দুল জলিল, সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজনসহ আরও অনেকে। গতকাল রোববার দুপুরে কন্টেইনার কর্পোরেশনের ৫০টি সাইডডোর কন্টেইনার পি এন্ড জি বাংলাদেশ লিমিটেড সহ মোট ৮টি কোম্পানীর ৬৪০ টন পণ্য ভারত থেকে আসে। কন্টেইনার ট্রেনটি কসমেটিকস ও গার্মেন্টস সামগ্রী নিয়ে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। কন্টেইনার কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার এজেন্সি হিসাবে টিসিআই বাংলাদেশ লিঃ এবং এটির ভেন্ডর পার্টনার এম এম ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
ভারত থেকে প্রথম কন্টেইনার ট্রেনে করে মালামাল আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক আব্দুল জলিল ও বেনাপোল স্টেশন ম্যানেজার সাহিদুজ্জামান। জানা যায়, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ভারত সরকার গত ২২ মার্চ থেকে বেনাপোল বন্দরের সাথে রেল ও স্থল পথে আমদানি, রফতানি বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়। এতে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে প্রায় ৫ হাজার ট্রাক পণ্য নিয়ে আটকা পড়ে। রফতানির পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরেও আটকে পড়ে ট্রাক। এ কারণে আড়াই মাস ধরে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন।
ভারতে লকডাউন কিছুটা শিথিল হলেও শুরু হচ্ছিল না বাণিজ্য। সে সময় বিকল্প মাধ্যমে বাণিজ্য সচল করতে দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কন্টেইনার ট্রেনের মাধ্যমে বাণিজ্য সচলের আলোচনা বসে। তারই ধারাবাহিকতা রোববার (২৬ জুলাই) দুপুর থেকে কন্টেইনার ট্রেনে পণ্য আমদানি শুরু হয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান বলেন, নোভেন করোনার শুরুতে উভয় দেশের আমদানি রফতানি বাণিজ্য ব্যহত হচ্ছিল। কন্টেইনার ট্রেনের মাধ্যমে আমদানি বাণিজ্য শুরুতে আমাদের ষ্টেক হোল্ডারসহ সকল ব্যবসায়ির বাণিজ্য সম্প্রসারণে নতুন দিহন্তের সুচনা হলো।এতে সময় খরচ যেমন বাঁচবে তেমনি যথেষ্ট নিরাপত্তা ও রয়েছে।
ভারত থেকে ট্রেন যোগে মালামাল আসলে আমাদের রেল খাতে ও উন্নয়ন হবে। বন্দর একটি চার্জ পাবে। ব্যবসায়িদের খরচ কম হবে। আগে সাধারন ট্রেনে পণ্য এসেছে ভারত থেকে। এখন থেকে কন্টেইনার ট্রেনের মাধ্যেমে পণ্য আসা শুরু হলো।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, কন্টেইনার ট্রেনে পণ্য আমদানিতে বাণিজ্যের মাধ্যমে নতুন এক দিগন্তেরদার উন্মোচন হলো। এতে ব্যবসায়ীরা যেমন কম খরচে পণ্য পরিবহন করতে পারবেন তেমনি দ্রুত পণ্যও গন্তব্যে নিতে পারবেন।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ীরা স্বপ্ন দেখতো কন্টেইনার ট্রেনে করে ভারত থেকে পণ্য আমদানি হবে। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ হলো। এতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো বেড়ে গেল বেড়ে গেলো সরকারের রাজস্ব আয়ও।
ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কর্মাস ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক  মতিয়ার রহমান জানান, আরো অনেক আগে এপথে কন্টেইনার ট্রেনের মাধ্যমে পণ্য আমদানির কথা ছিল কিন্তু নানা সমস্যার কারণে এতদিন তা চালু হয়নি। এনিয়ে অনেক বৈঠক ও চিঠি চালাচালি হয়েছে । এখন বেনাপোল বন্দর দিয়ে স্থল পথের পাশাপাশি রেল পথে পণ্য আমদানি দ্রুত বাণিজ্য সম্পাদনে বড় ভূমিকা রাখবে।
বেনাপোল ষ্টেশন ম্যানেজার সাইদুজ্জামান জানান, আগে রেলে যে পণ্য আমদানি হতো তা ৫০ কিলোমিটার দূরে যশোরের বসুন্দিয়ায় নিয়ে পণ্য খালাস করতে হতো। এখন কন্টেইনার ট্রেনে যে পণ্য আমদানি হচ্ছে তা বেনাপোল বন্দরে খালাস হবে। এতে করে কাস্টমস, আমদানিকারক, ট্রান্সপোর্ট ও বন্দর সকলের সুবিধা হলো।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে কন্টেইনার ট্রেনে ভারত থেকে আমদানি পণ্যের প্রথম চালান গ্রহণ করা হলো। এসব পণ্য বেনাপোল বন্দরে খালাসের সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরে ব্যবসায়ীরা রাজস্ব পরিশোধ, কাস্টমস ও বন্দরের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে বন্দর থেকে খালাস নিতে পারবেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ