রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

শেয়ারবাজারে বড় উত্থানে চার মাস আগের অবস্থানে সূচক

স্টাফ রিপোর্টার : সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের শেয়ারবাজারে বড় উত্থানের দেখা মিলেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। এতে চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে ডিএসইর প্রধান সূচক।
গতকাল রোববার ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৪৮ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ১২৯ পয়েন্টে উঠে এসেছে। এর মাধ্যমে চলতি বছরের ১২ মার্চের পর সূচকটি সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে। ১২ মার্চ সূচকটি ৩ হাজার ১২৯ পয়েন্টে ছিল।
মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ ধস নামলে সূচকটি ৩ হাজার ৯৫৩ পয়েন্ট পর্যন্ত নেমে যায়। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ রূপ নেয় যে ধস ঠেকাতে শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস (দাম কমার সর্বনিম্ন সীমা) নির্ধারণ করে দেয়া হয়। একপর্যায়ে ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত টানা ৬৬ দিন শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ রাখা হয়।
শেয়ারবাজার বন্ধের মধ্যেই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান ও তিনজন কমিশনার পায়। নতুন কমিশন দায়িত্ব নিয়ে বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়। বিশেষ করে অনিয়মের কারণে কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শাস্তির আওতায় আনা হয়।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন ভূমিকায় বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের নতুন করে আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। যার ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে শেয়ারবাজারে। গত চার সপ্তাহ ধরে শেয়ারবাজার মূলত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যেই রয়েছে। তলানিতে নেমে যাওয়া ডিএসইর প্রধান সূচক ছোট ছোট উত্থানে ৭ জুলাই আবার চার হাজার পয়েন্টে উঠে আসে।
ডিএসইর এক সদস্য বলেন, শেয়ারবাজারের মূল সমস্যা সুশাসন। দীর্ঘদিন ধরেই শেয়ারবাজারে সুশাসন নেই। তবে নতুন কমিশন বেশকিছু ভালো পদক্ষেপ নিয়েছে। তাদের কার্যক্রমে বোঝা যাচ্ছে, তারা সুশাসনের ওপর জোর দিচ্ছেন। কমিশনের এমন ভূমিকা অব্যাহত থাকলে শেয়ারবাজারের ওপর আবার বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে এবং শেয়ারবাজারে সুদিন দেখা যাবে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বিএসইসির পদক্ষেপের কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। এতে সূচকের উত্থানের পাশাপাশি লেনদেনের গতি বেড়েছে। ৫০ কোটি টাকায় নেমে যাওয়া লেনদেন তিনশ কোটি টাকায় উঠে এসেছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে বাজারে টাকার অভাব হবে না।
এদিকে প্রধান সূচকের পাশাপাশি বড় উত্থান হয়েছে ডিএসইর অপর দুই সূচকের। এর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ২৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৯৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসই শরিয়াহ্ ১৭ পয়েন্ট বেড়ে ৯৬৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১১৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৮টির। ১৭২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৭১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৬২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১০৯ কোটি ৪ লাখ টাকা।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২৭ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে সাত কোটি ৮০ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২০২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৭৫টির, কমেছে ২৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৯৮টির।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ