শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪
Online Edition

‘হারানো ইউসুফ আবার কেনানে আসিবে ফিরে’

ড. মো. নূরুল আমিন : প্রবল রাজনৈতিক সঙ্কট ও নেতৃত্বের দুর্ভিক্ষের মধ্যে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পাঁচটি পার্শ্ব সংগঠনের জাতীয় কংগ্রেস ও নেতৃত্ব নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলে মনে হয়। মূল দলের কংগ্রেস এখনো অবশিষ্ট আছে এবং আশা করা যাচ্ছে আগামী ডিসেম্বরে নির্ধারিত সময়েই তা সম্পন্ন হবে। ছাত্রলীগের সম্মেলন না হলেও প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী স্বয়ং এই সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নির্ধারণ করে দিয়েছেন। বলাবাহুল্য, প্রায় এক দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী নামীয় এই দলটি ও তার সকল পার্শ সংগঠন বর্তমানে নানা অভিযোগে অভিযুক্ত। এর মধ্যে প্রধান অভিযোগ হচ্ছে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বিরোধীদল নিপীড়ন, নৈতিক স্খলন ও ব্যভিচার এবং মদ জুয়া ও ক্যাসিনো সম্পৃক্তি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হঠাৎ অভিযানে যেভাবে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর নেতৃবৃন্দের উপরোক্ত কীর্তিগুলো জনসমক্ষে বেরিয়ে আসছিল, তা যদি কৌশলে বন্ধ করা না হতো তাহলে মূল দলেরও অনেক নেতানেত্রী, এমপি মন্ত্রীর মুখোশ উন্মোচিত হয়ে যেত বলে অনেকে মনে করেন। অগ্রাধিকারভিত্তিক পল্লী অবকাঠামোর উন্নয়ন প্রকল্পে এমপিদের জন্য বরাদ্দ ৬ হাজার কোটি টাকার বেশির ভাগ নয় ছয় বলে সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত গতকালের রিপোর্ট এর একটি প্রামাণ্য দলিল। সরকারি অর্থের এই অপচয় ও আত্মসাতে বিএনপি-জামায়াতের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই, সরকারি দল ও তার জোটই এর সাথে জড়িত। এ অবস্থায় সরকারি দলের অঙ্গ সংগঠনসমূহের কংগ্রেস অনুষ্ঠান এবং প্রধানমন্ত্রী নিয়োজিত অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে চরিত্রবান নেতাদের পদায়ন কতটুকু সম্ভবপর হয়েছে তা বলা মুসকিল।
আসলে রাজনীতি, বিশেষ করে আমাদের মতো দেশে অত্যন্ত কঠিন ব্যাপার। আবার রাজনৈতিক নেতাদের কী কী গুণ থাকা দরকার, তা নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছা আরো কঠিন। কেননা, এক্ষেত্রে মানুষের প্রত্যাশার শেষ নেই। মহামানবদের জীবনের সকল সবল দিকগুলোই অনেকে রাজনীতিকদের মধ্যে কামনা করেন। অনেকের দৃষ্টিতে রাজনীতিকদের কাজ কর্ম কতটুকু জনপ্রিয় হবে তার চেয়ে কতটুকু স্বীকৃতি পাবে তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এখানে নেতৃত্ব হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। নেতার সংজ্ঞা খুবই ছোট। যেমন: One who leads is a leader, এখানে leading এর কাজটি অত্যন্ত কঠিন এবং সবাই তা পারেন না। জবরদস্তি কঠোর ঘাড়ে নেতৃত্ব চাপিয়েও দেয়া যায় না, নেতৃত্বকে Means of Direction বা চলার পথ নির্ধারণের মাধ্যমে বা প্রক্রিয়াও বলা হয়। এটা ন্যায়-অন্যায় দু’টাই হতে পারে এবং সেটা নির্ভর করে নেতার নৈতিক মানের ওপর। তিনি যদি চরিত্রবান হন, মন্দের পরিবর্তে ভালকে অনুসরণ করেন তাহলে তার নেতৃত্বের প্রক্রিয়া অন্যায়ভাবে ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থের অনুকূলে ধাবিত না হয়ে মানুষের কল্যাণের দিকে ধাবিত হবে। নেতার কাজ নিয়ে অনেক গল্প আছে। ল্যাটিন আমেরিকা ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এ ধরনের একটি গল্প শুনেছিলাম যা পাঠকদের জন্য নিচে তুলে ধরছি। একটি বিশাল দ্বীপকে নিয়ে গল্পটি তৈরি। এই দ্বীপে প্রায় ১০ লাখ লোকের বাস। দ্বীপটির নিরাপত্তা ঝুঁকি প্রকট। একবার আকাশ থেকে এতে একজন ফেরেশতা নেমে আসলেন। দ্বীপবাসীরা দেখলো উজ্জ্বল এক আলোকবর্তিকা ধীরে ধীরে আকাশ থেকে নিচে নেমে আসছে। তারা তাকে অনুসরণ করলো এবং একটি বিশাল মাঠে এসে তা থামলো। আলোকবার্তাটি একজন ফেরেশতার রূপ নিয়ে প্রকাশিত হলেন। মানুষ তাকে ঘিরে ধরলো এবং তার সাথে কথা বলতে চাইলো। তিনি ইশারা দিয়ে তাদের থামালেন এবং বললেন, তোমাদের এত লোকের সঙ্গে কথা বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তোমরা তিনজন প্রতিনিধি নির্বাচন করো, আমি তাদের সাথে কথা বলবো। তারা তাই করলেন। তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে একজন ছিলেন বৃদ্ধ, শতায়ু, আরেকজন অত্যাধুনিক কেতাদুরস্ত ফিটফাট এক যুবক আর তৃতীয় ব্যক্তি ছিলেন সাধারণ এক লোক দেখতে সাধাসিধে বুদ্ধিদীপ্ত এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে মনে হয়। ফেরেশতা আলাদা আলাদাভাবে তাদের ডাকলেন। প্রথম আসলেন বৃদ্ধ ব্যক্তি। তিনি তার সাথে কুশল বিনিময়ের পর একটি প্রশ্ন করলেন। প্রশ্নটি হচ্ছে, এখন থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর এই দ্বীপে জলোচ্ছ্বাস হবে। সহায়সম্পত্তিসহ তোমাদের সবাইকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। এখন তুমি কী করবে? বৃদ্ধ ব্যক্তিটি বললেন, আমি জীবনে অনেক পাপ করেছি। এখন বয়স হয়েছে। আমি যে ৪৮ ঘণ্টা সময় পাবো তাকে কাজে লাগাবো। আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে তার মার্জনা ভিক্ষা করবো, যাতে পরকালে বেহেশতে যেতে পারি। ফেরেশতা তাকে বিদায় করে দ্বিতীয় ব্যক্তিকে ডাকলেন এবং একই প্রশ্ন করলেন, ৪৮ ঘণ্টা পর জলোচ্ছ্বাসে তোমরা সবাই মারা যাবে, এখন কী করবে? দ্বিতীয় ব্যক্তিটি বললেন, আমি জীবনকে অনেক ভোগ করেছি, এখনো ভোগ করার অনেক বাকি আছে। ৪৮ ঘন্টা যে সময় পাবো তাতে আমি যত পারি, খাবো-দাবো এবং স্ফূর্তি করবো। মৃত্যুর পরে আমি কী পাবো না পাবো তা নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নেই। ফেরেশতা তার কথা শুনে মুচকি হাসলেন এবং তাকে বিদায় করে দিয়ে তৃতীয় ব্যক্তিকে ডাকলেন। তাকেও একই প্রশ্ন করলেন, বললেন, ৪৮ ঘণ্টা পর ঘূর্ণীঝড় ও জলোচ্ছ্বাস তোমাদের সবাইকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। তোমরা সবাই মরে যাবে। এখন তুমি কী করবে? দ্বীপবাসীর এই প্রতিনিধি প্রশ্ন শুনে কিছুক্ষণ চিন্তা করলেন। ৪৮ ঘণ্টাকে মিনিটে, মিনিটকে সেকেন্ডে রূপান্তর করে বললেন যে, আমার হাতে এখনো ১,৭২,৮০০ সেকেন্ড সময় আছে। আমি এক্ষুণি এই দ্বীপের ১০ লক্ষ লোককে সংগঠিত করে তাদের ২০ লক্ষ হাতকে কাজে লাগাবো এবং জলোচ্ছ্বাস আসার আগেই দ্বীপের চার দিকে এমন এক বাঁধ তৈরি করবো, যাতে সমুদ্রের পানি দ্বীপের ভেতরে পৌঁছে কাউকে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে না পারে এবং একটি লোকেরও জানমালের ক্ষতি না হয়। ফেরেশতা তার কথা শুনে খুবই খুশী হলেন এবং তাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, আমি তোমার সাথে আছি।
মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার মধ্যেই রাজনীতিকদের সাফল্য, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, মদ জুয়া, দুর্নীতি, অভাব অনটন, জনমানুষের আকিদা বিশ^াস এবং রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা বিরোধী যে জলোচ্ছ্বাস তার মোকাবিলার জন্য বাঁধ তৈরিতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা ও তাদের কাজে লাগানো হচ্ছে রাজনীতিকদের কাজ।
একজন সার্থক রাজনীতিবিদ, পার্লামেন্টারিয়ান ও লেখক হিসেবে লর্ড মন্টেগোমারী শুধু ব্রিটেন নয়, সারা দুনিয়ায় খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনি তার Path to Leadership পুস্তকে একজন রাজনৈতিক নেতাকে এভাবে বর্ণনা করেছেন।
‘One who can be looked upon, whom personal judgement is trusted, who can inspire and warm the hearts of those he leads, gaining their trust and confidence and explaining what is needed in language which can be understood.’
জনাব মন্টেগোমারীর এই সংজ্ঞাটি অত্যন্ত প্রণিধানযোগ্য। আধুনিক বিশ্বের রাজনৈতিক অঙ্গ সংগঠন ছাড়াও ব্যবসায়িক অঙ্গনে টীমকে নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে এই সংজ্ঞায় বর্ণিত নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্যকে অনুসরণ করার চেষ্টা করা হয়। 
কারাগারে অন্তরীণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (যদিও তিনি নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করে তার ইমেজকেও ধ্বংস করে ফেলেছেন) জামায়াতের বর্তমান আমীর মকবুল আহমাদ ও নবনির্বাচিত আমীর ডা. শফিকুর রহমান প্রমুখ লাখ লাখ মানুষের অন্তর জয় করেছেন। তাদের বিচার বিবেচনায় ও যোগ্যতার ওপর তাদের অনুসারীসহ গণমানুষের আস্থা আছে। তারা লাখ লাখ লোককে অনুপ্রাণিত করতে পারেন, উজ্জীবিত করতে পারেন। তাদের প্রাণ রক্ষার জন্য লাখ লাখ লোক প্রাণ দিতে প্রস্তুত হয়। এটা অবৈধ কোনো সুবিধা পাবার জন্যও নয় বরং আত্মিক এবং বিশেষ ক্ষেত্রে আদর্শিক সম্পর্কের কারণে।
রাজনৈতিক দল হিসাবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাবার পর মানুষের কাছে তার প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে বলে মনে হয়, কেননা দলটির এখন আদর্শ নেই, বেশির ভাগ নেতৃবৃন্দ নীতি ও ন্যায়ভ্রষ্ট। যেই পার্শ সংগঠনগুলো মূল দলে নেতৃত্ব সরবরাহ করার কথা, সেই পার্শ সংগঠনগুলো দুর্নীতি ও অপকর্মে বিধ্বস্ত। ছাত্র সংগঠনটি নিকৃষ্ট অপরাধে জড়িত। তারা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করে না, করে খুনী, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, ব্যভিচারী ও সন্ত্রাসীদের প্রতিনিধিত্ব। মেধাবীরা এখানে এলে তাদের মেধার বিকাশ হয় না। তা তারা হারিয়ে ফেলে। বড় বড় অমানুষ হয়ে তারা বেরিয়ে আসে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরারকে প্রতিদ্বন্দ্বী একটি ছাত্র সংগঠনের সদস্য সন্দেহে অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা এবং তার সাথে ৩০ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর সম্পক্তিও বিশ^বিদ্যালয়টিতে ছাত্রলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের সিদ্ধান্ত এর একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ ছাড়াও ক্ষমতাসীন দলের জন্য চরম অপমানকর একটি দৃষ্টান্ত। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনীতির প্রতিটি খাত এখন চরমভাবে বিধ্বস্ত। মানুষ দিশেহারা এবং ক্ষমতাসীন দলের প্রতি তাদের আস্থা নেই। অবশ্য এটা তারা জানতেন বলেই প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে তারা বশংবদ নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে মধ্য রাতে ‘নির্বাচন’ করিয়ে ‘ক্ষমতা’ কবজা করেছেন। তাদের কাছে মানুষের চাওয়া-পাওয়া খুব একটা কিছু নেই। বিকল্প হিসেবে বিএনপির প্রতি তাদের আস্থা ছিল। কিন্তু সরকার যেভাবে বেগম জিয়াকে জেলে পুরে বিএনপির বিকল্প নেতা তারেক জিয়াকে নির্বাসনে থাকতে বাধ্য করে এবং দলটির লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বিএনপিকে পঙ্গু করে দিয়েছেন তাতে আদর্শিক বন্ধন শিথিল হওয়া এই দলটির পক্ষে গণআন্দোলন গড়ে তোলা কঠিন হয়ে পড়েছে। জাতীয় পার্টির কিছুটা গণভিত্তি ছিল কিন্তু হালুয়া রুটির লোভ তাদের ক্ষমতাসীন দলের সাথে লীন করে দিয়েছে। এই অবস্থায় জামায়াতকেই বৃহত্তর জনগোষ্ঠী একমাত্র বিকল্প হিসেবে চিন্তা করতে শুরু করেছে। তাদের সততা, নিষ্ঠা, যোগ্যতা, শৃঙ্খলানুবর্তিতা, আদর্শের অনুশীলন ও নিঃস্বার্থ দেশপ্রেমই পারে কেবল জাতিকে উদ্ধার করতে।
জামায়াতের এখন দুর্দিন চলছে। দশ বছর ধরে তাদের কোনও অফিস নেই। কেন্দ্র থেকে শুরু করে গ্রামের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত তাদের সকল অফিস সরকার পুলিশ দিয়ে বন্ধ করে রেখেছে। জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দেয়া হয়েছে এবং কেউ কেউ এখনো ফাঁসির আদেশ প্রাপ্ত। দলটির বিরুদ্ধে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্র এখন মানুষের কাছে পরিষ্কার এবং মানুষ চায় জামায়াত এখন মানুষের কাছে যাক। বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াত এখন যত বেশি মানুষের কাছে তাদের দাওয়াত পৌঁছাতে পারবে ততবেশি দেশ ও জাতি উপকৃত হবে। জামায়াতের নতুন নেতৃত্বকে তাই বেশি বেশি করে গ্রামে যেতে হবে। গ্রামের মানুষ এখন বেশি অসহায় এবং বিদ্যমান আওয়ামী নেতৃত্ব আদর্শহীন হওয়ায় নেতৃত্বের ক্ষেত্রে যে শূন্যতা বিরাজ করছে, জামায়াতই মাত্র তা পূরণ করতে পারে। তাদের দাওয়াতী কাজকে ফলপ্রসূ করতে হলে আরো বেশি পড়াশোনা করতে হবে। কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা তথা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার দায়িত্ব সরকার কর্তৃক অধিগ্রহণ, দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সুদের ভয়াবহতা থেকে জাতিকে রক্ষা করা, ফসলের উশর আদর্শ এবং বিনামূল্যে চিকিৎসা সুবিধা প্রদানের আন্দোলন জামায়াতকেই শুরু করতে হবে। দলটি যেহেতু চাঁদাবাজি সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত এবং ক্লীন ইমেজধারী সেহেতু মানুষ তাদের প্রতি আস্থা স্থাপন করতে পারবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, তারা কাজ করবে কীভাবে? সরকার তো তাদের কাজ করতে দিচ্ছে না। আগে বলেছি, সরকারি দল ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো যেভাবে মানুষের আস্থা হারাচ্ছে তাতে করে জামায়াতের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ছে। গত নির্বাচনে ভোট দানে বাধা সত্ত্বেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ যেভাবে তাদের ভোট দিয়েছে, এটাই তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ।
জামায়াতের বর্তমান দুর্দিন অবশ্যই ঘুচবে এবং সুদিন ফিরে আসবে। তবে সংঘাতের পরিবর্তে জাতীয় স্বার্থে সমঝোতার মাধ্যমেই যদি তা হয় তাহলেই তা মঙ্গল বয়ে আনবে।
একটি ফারসি রূবাইয়াত দিয়েই আমি আজকের আলোচনা শেষ করতে চাই। রূবাইয়াতটি হচ্ছে-
‘ইউসুফ গুস গশতে বাজ আবদ কিনান
গমম খুর
কুল বয়ে ইহজান সওদ রোজী
গুলিস্তা রোজী
গমম খুর
কবি নজরুল এর তরজমা করেছেন- এভাবে,
‘দুঃখ করো না, হারানো ইউসুফ
কেনানে আবার আসিবে ফিরে
দলিত পুষ্প এ মরু পুনঃ
হয়ে গুলিস্তা হাসিবে ধীরে।’

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ