রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

নদী রক্ষা কমিশনে খুলনার ১৭৬ দখলদারের তালিকা

খুলনা অফিস : সারাদেশে নদী দখলদারদের তালিকা প্রকাশ করেছে সরকারি সংস্থা জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। কমিশনের ওয়েবসাইটে বিভাগওয়ারি তালিকায় খুলনা বিভাগে দখলদারের সংখ্যা ৪ হাজার ৯ জন। এর মধ্যে খুলনা জেলায় দখলদার ১৭৬। এই তালিকায় সর্বাধিক কুষ্টিয়ায় ও সর্বনি¤œ দখলদার রয়েছে মাগুরায়। তবে চুয়াডাঙ্গা জেলার নাম ‘ডিলিটেড’ বা মুছে ফেলা অবস্থায় ওয়েবসাইটে পাওয়া গেছে।  জানা যায়, হাইকোর্টের ১৩৯৮৯/২০১৬ নম্বর রিট পিটিশনের আদেশ সুষ্ঠু বাস্তবায়নে জন্য জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের এক সভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নদ-নদীর অবৈধ দখলদারদের এ তালিকা জনস্বার্থে প্রকাশ করা হয়েছে। তবে এই তালিকা একটি চলমান প্রক্রিয়া। কারও কাছে তালিকায় অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হলে কমিশনকে অবহিত করা হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

তালিকায় খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা জেলায় ৪২৭ জন, নড়াইলে ৯৮, মেহেরপুরে ১১৫, মাগুরায় ৮৪, কুষ্টিয়ায় ২ হাজার ৩৬২, খুলনায় ১৭৬, ঝিনাইদহে ১৬৯ ও যশোর জেলার ৫৭৮ জন নদী দখলদারের নাম রয়েছে। এ বিভাগের চুয়াডাঙ্গা জেলার নাম ‘ডিলিটেড’ বা মুছে ফেলা অবস্থায় ওয়েবসাইটে পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. আলাউদ্দিন বলেন, চিহ্নিত অবৈধ নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে সব জেলার জেলা প্রশাসকের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছে। তারাই এসব দখলদারের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিবেন।

জানা যায়, ছোট দোকান থেকে শুরু করে শিল্প প্রতিষ্ঠান সবই আছে তালিকায়। কেউ সামান্য টিনের ঘর তুলে, কেউ আবার বড় শিল্পকারখানা গড়ে তুলে দখল করেছেন নদ-নদী। এ তালিকায় খুলনার মান্যগণ্য ব্যক্তি ও রাজনীতিবিদদের নামও রয়েছে। এই তালিকায় কয়েকটি ভাগে ক্ষুদে নদীর ১০নং বয়রা মৌজা, ৯নং রায়েরমহল মৌজা ও ৬নং দেয়ানা মৌজার আলাদাভাবে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই তালিকায় ৪৩ জন অবৈধ দখলদার রয়েছে। তালিকার শুরুতে রয়েছে ১০নং বয়রা মৌজার মিরাজ হোসেন। এছাড়া একই এলাকার মকবুল হোসেন, জাহানারা বেগম, আকবার মোল্লা, হানিফ হোসেন, নাসিমা বেগম, অহিদ হোসেন, রাজ্জাক হোসেন খান, নোমান হোসেন, আজাহার হোসেন নদীর জমিতে পাকা বাউন্ডারি, পাকা ভবন ও খামার বাড়ি করে নদীর জায়গা দখল করেছেন।

 রায়েরমহল হামিদনগর হাজী মোহাম্মদ মহসিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রায়েরমহল আল মামুর জামে মসজিদসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে সরকারি জমি ও ট্রাস্টের সম্পত্তিতে। বটিয়াঘাটা অংশে ছড়িও চড়া খালের জায়গায় ১৭ জন মাটিভরাট, পাকা স্থাপনা করে দখল করেছেন।

একইভাবে খুলনায় ময়ূর নদীতে থাকা ৬৩টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উচ্ছেদ অভিযানে এরই মধ্যে ৪৮টি স্থাপনা অপসারণ করা হয়েছে। নগরীর দরগা রোড, প্রান্তিকা ও নিরালা আবাসিক এলাকায় আরও তিনটি বহুতল ভবনে উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। 

খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ জানান, নগরবাসীর সুবিধার্থে নদী ও খালের অবৈধ দখলমুক্ত করতে প্রশাসন, রাজনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের সবাই একমত। এ কারণে উচ্ছেদ অভিযানে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা নেই। তবে দখলকৃত জায়গা নিয়ে আপত্তি থাকলে কাগজপত্র যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। 

এদিকে সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, জরীপের আওতায় যতগুলো অবৈধ স্থাপনা আছে, সব ভাঙা হবে।  খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, খুলনাকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে এবার কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। দখলদাররা অনেক সময় জনপ্রতিনিধিদের ভুল বুঝিয়ে উচ্ছেদ অভিযানে বাধা সৃষ্টি করে। এ কারণে সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে এবার সমন্বিত কমিটি করা হয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ