রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

মাউশি উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে তদন্ত কাজে গড়িমসি

খুলনা অফিস : মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) খুলনার উপ-পরিচালক নিভা রাণী পাঠকের অনিয়ম, দুর্নীতি, বদলি, অফিস ফাইল বাণিজ্য ও ভারতে হু-ির মাধ্যমে টাকা ভারতে পাচাসহ নানা বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগের তদন্ত করছেন কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। তদন্তের নির্দিষ্ট সময় শেষ হলেও মৌখিকভাবে সময় বাড়িয়েছেন কর্মকর্তারা। কিন্তু উপ-পরিচালককে বারবার চিঠি পাঠালেও তা কার্যকর হচ্ছে না। করা হচ্ছে গড়িমসি। এ সপ্তাহে কোনো ধরনের জবাব না পেলে সরাসরি উপ-পরিচালক কার্যালয়ে আসার মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা চিন্তা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অভিযোগ অনুযায়ী জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক নিভা রাণী পাঠক এর আওতাধীন খুলনাঞ্চলের ১০ জেলার বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষক কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনের শুরু থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আদায় করেন। জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীদের নিকট থেকে তার অফিসের দুইজন সেসিপ প্রকল্পের কর্মকর্তা হেদায়েত হোসেন ও মশিউর রহমান এবং কর্মচারী সংযুক্তিতে মনিরুজ্জামান মনিরের মাধ্যমে এসব অর্থ আদায় করতেন। অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা অগ্রিম না দিলে এমপিও হবে না বলে জানানো হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিধি বহির্ভূত বিষয়ভিত্তিক শাখা ও সমন্বয় প্রভাষকদের নিকট থেকে কর্মচারী মনিরের মাধ্যমে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা দিলেই এমপিও হয়। খুলনা মহানগরীর খালিশপুর থানার রায়েরমহল কলেজের একজন প্রভাষক ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে এমপিও হয়েছেন বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
খুলনাঞ্চলের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও জেলা শিক্ষা অফিসের শিক্ষক ও কর্মচারী বদলির জন্য ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন। অর্থের পাশাপাশি কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাছ, গোশত ও অন্যান্য জিনিসপত্র উৎকোচ হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন। উপ-পরিচালক নিভা রাণী পাঠক দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে ঘুষ বাণিজ্য করেছেন। যার অধিকাংশ টাকা হু-ির মাধ্যমে ভারতে পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই দপ্তরের অফিস সহকারী মো. আলীম উদ্দিন মোড়ল ও মো. আনোয়ারুল ইসলাম এর অবৈধ সম্পদ ও অন্যান্য বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ আমলে নিয়ে ৯ জুলাই দুদকের পক্ষ থেকে অভিযোগসমূহ সরেজমিন তদন্তপূর্বক আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে দাখিল করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর শেখ মুস্তাহিদুল আলম ও একই কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহ আলম ফরাজী।
মাউশি খুলনার উপ-পরিচালক নিভা রাণী পাঠক বলেন, এ বিষয়ে দুদক কাজ করছে। কিছু জানতে চাইলে দুদকের সাথে কথা বলতে হবে। তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে পারবেন না।
তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রফেসর শেখ মুস্তাহিদুল আলম বলেন, তদন্তের জন্য ২৮ জুলাই উপ-পরিচালক নিভা রাণী পাঠককে স্বশরীরে এসে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়। তিনি ওই দিন স্বশরীরে আসেন। কিন্তু কোনো ধরনের লিখিত জবাব না দিয়ে তিন কর্মদিবস সময় আবেদন করেন। সে সময়ও শেষ হয়েছে। তার কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। তিন-চার দিন আগে পুনরায় চিঠি প্রাপ্তির তিন কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য ওই কর্মকর্তাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এখনও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। এ সপ্তাহটা দেখে প্রয়োজনে সরাসরি অফিসে গিয়ে ঘটনার তদন্ত করার চিন্তা করছি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ