রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

অবিক্রীত চামড়া নিয়ে নতুন সংকটে খুলনার ব্যবসায়ীরা

খুলনা অফিস : পূর্বের পাওয়া অনাদায়ী, চামড়া প্রক্রিয়াকরণের স্থান সংকট ও এবারের কুরবানিতে ক্রয়কৃত চামড়া অবিক্রীত থাকায় নতুন সংকটে পড়েছেন খুলনার চামড়া ব্যবসায়ীরা। এবারেও আর্থিক লোকসান হলে নতুন করে কয়েকজন চামড়া ব্যবসায়ী দেওলিয়াত্বের আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূমতে, এবারের খুলনাঞ্চলে কুরবানির পশুর অন্তত ৮০ শতাংশ চামড়া ফুলতলা ও নওয়াপাড়ার দু’টি ট্যানারিতে সরাসরি বিক্রি করেছেন। বাকী ২০ শতাংশ চামড়া ধার-দেনা করে ক্রয় করেছে নগরীর চামড়া পট্টির ব্যবসায়ীরা। কিন্তু মূল্য হ্রাসের কারণে সে চামড়া বিক্রি করতে না পারায় ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে। খুলনায় অর্ধশত চামড়া ব্যবসায়ী থাকলেও এখন মাত্র একটি দোকানে ৮-১০ জন ব্যবসায়ী কোনো রকমে অবস্থান নিয়ে ঐতিহ্যবাহী এ ব্যবসাটি টিকিয়ে রেখেছেন। প্রায় ২০ কোটি টাকা অনাদায়ী থাকায়, পুঁজিসংকট, ব্যাংক ঋণ না পাওয়া ও চামড়া প্রক্রিয়াকরণের স্থান সংকটের কারণে ব্যবসা ছেড়ে বিকল্প পেশায় গেছেন তারা। এবারের ঈদে পূর্বের পাওয়া না পেলে নতুন করে দেওলিয়াত্বের আশঙ্কায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে বাড়তে পারে দেওলিয়াত্বের সংখ্যা।
ব্যবসায়ীরা জানান, ব্যাংক ঋণের অপ্রতুলতা, লবণের মূল্য বৃদ্ধি, পুঁজি সঙ্কট, ট্যানারি মালিকদের কাছে চামড়া বিক্রির টাকা সম্পূর্ণ না পাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে খুলনার ব্যবসায়ীরা সরে যাওয়ার সুযোগে ফড়িয়ারা বৃহত্তর খুলনায় চামড়া বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এ কারণে এবার কুরবানির চামড়া খুলনার ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিকদের হাতছাড়া হয়েছে বলে মন্তব্য তাদের।
খুলনা জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম ঢালী বলেন, নগরীর শেখপাড়ার চামড়া পট্টির যে অবস্থা তাতে চামড়া প্রক্রিয়া করে সংরক্ষণের সুযোগ নেই; এ অবস্থায় দশদিন কাঁচা চামড়া অবিক্রিত রয়েছে। ট্যানারি মালিকদের কাছে পূর্বের অন্তত বিশ কোটি টাকা অনাদায়ী রয়েছে। পূর্বের টাকা না পেলে এবং এবারের চামড়ার অর্থ নগদ না পেলে দেওলিয়া হয়ে যাবেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। এতে করে খুলনা থেকে চামড়া শিল্প হারিয়ে যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, খুলনার বিভিন্ন মাদরাসা-এতিমখানা ও লিল্লাহ্ বোডিং এবারের কুরবানিতে সরাসরি চামড়া বিক্রি করেছে ফুলতলা ও নওয়াপাড়ার ট্যানারিতে। নগরীর শেখপাড়ার চামড়া পট্টির ব্যবসায়ীরা মাত্র ২০ শতাংশ চামড়া কিনতে পেরেছি, আর ৮০ শতাংশ চামড়া কিনেছে ওই দু’টি ট্যানারি। আজ-কালকের মধ্যে ঢাকা থেকে সিদ্ধান্ত আসতে পারে, সিদ্ধান্তের পর খুলনার  চামড়া ঢাকা, রাজারহাট, নাটোর, ফুলতলা ও নওয়াপাড়ার ট্যানারিতে বিক্রি করা হবে।
শেখপাড়ার আমান লেদার কমপ্লেক্সের ম্যানেজার ও চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির কোষাধ্যক্ষ মো. সাইদুর রহমান সাইদ বলেন, খুলনা চামড়া ব্যবসার জন্য ছিল সম্ভাবনাময় এলাকা। কিন্তু ১৫-২০ বছর ধরে ট্যানারিগুলোর কাছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা পাওনা থাকায় অনেকেই দেউলিয়া হয়েছেন।
ফুলতলার সুপার ট্যানারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফিরোজ ভূঁইয়া বলেন, আমরা চেষ্ট করছি খুলনাঞ্চলে চামড়া শিল্পটি বাঁচিয়ে রাখার জন্যে। এবারও বিপুল পরিমাণ চামড়া কিনেছি। আমাদের কাছে যারা এসেছেন তাদের তো ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়নি। খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নড়াইল, যশোর ও মাগুরার মাদরাসা থেকে চামড়া এখানে এসেছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ