ছড়া
বৈশাখ
শামীম খান যুবরাজ
বাতাসের তোড়জোড়
মেঘেদের সাজ,
সাজগোজ শেষ হলে
ছুঁড়ে যায় বাজ।
উড়ে যায় গাছপালা
গুঁড়ে যায় ঘর,
পথিকের ছুটোছুটি
মনে ভয়-ডর।
বৈশাখ দড়িছেঁড়া
যেন লাল ষাঁড়,
মাড়ায় ফসলি আর
শস্য উজাড়।
বৈশাখ ঠিক আবার
নতুনের ডাক,
অতীতের ভুলগুলো
শুদ্ধতা পাক।
কালবৈশাখীর রূপ
শরীফ সাথী
আকাশ জুড়ে মেঘ করেছে বড্ড কালো,
মধ্যি মাঝে চমকিয়ে যাই বজ্র আলো।
চতুর্দিকে যখন তখন গুড়ুম শব্দ,
ভয় ধরিয়ে মন করেছে সবার জব্দ।
ঝড় উঠেছে ঝড় উঠেছে বিরাট ঝড়,
বৃষ্টি ঝড়ে যাই ভেঙে যায় কতেক ঘর।
দুমড়িয়ে গাছ ঝড়ো বাতাস আসছে ধেয়ে,
ধুলোবালি ঝড় তুফানে যাচ্ছে বেয়ে।
ঘূর্ণি হাওয়া এদিক ওদিক ইচ্ছে মত,
গুড়িয়ে যাই উড়িয়ে যাই সামনে যত।
করছে সবাই চেচাঁমেচি নেই তো চুপ,
যাই দেখিয়ে কালবৈশাখী ভয়াল রূপ।
ন্যায্য পে
ওয়াহিদ আল হাসান
বছরের পর বছর ঘুরে
হৃদয় ভাঙা করুণ সুরে
আসে ফের পহেলা মে,
চোখেমুখে প্রশ্ন জাগে
কারো পরে কারো আগে
লাভের খেতে নাচবে কে?
মনের কষ্ট মনেই রইল
দলবদ্ধ শ্রমিক কইল
মিলবে কবে ন্যায্য পে?
যেদিন শ্রমের ন্যায্য দামে
বিক্রি হবে রঙিন খামে
পরিবারে হাসবে সে।
চৈত্রের দুপুর
শাহীন রায়হান
প্রচন্ড রোদ তীব্র গরম তৃষ্ণা ভরা গলা
গ্রীষ্মকালের এই দুপুরে যায় না যখন চলা।
ভাবছি তখন কোথায় যাব কোথায় পাবো ছায়া
কোথায় পাব মায়ের মতো শীতল করা মায়া।
ক্লান্ত দেহে ভ্যাপসা গরম শার্ট ভিজে যায় ঘামে
ভাবছি মনে এমন ক্ষণে বৃষ্টি যেন নামে।
গাছের ডালে ক্লান্ত হয়ে ডাকছে তখন কাক
পানির খোঁজে হন্যে হয়ে ছুটছে হাঁসের ঝাঁক।
হঠাৎ দেখি সূর্যটা নেই হারিয়ে গেছে মেঘে
ভাবছি তখন বৃষ্টি বুঝি আসবে ঝড়ো বেগে।
বাতাস এলো ধুলো নিয়ে কালো মেঘের ডাকে
ক্লান্ত পথিক ভয় পেয়ে যায় লুকায় বনের ফাঁকে।
এমন সময় বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিল পা
দেখছি দূরে নাচছে ঘুরে তিনটি ব্যাঙের ছা।
গ্রীষ্মের রূপ
নাহিদ নজরুল
গাছ পেয়েছে নতুন পাতা
মাছ পেয়েছে জল
প্রকৃতিটা লাগছে খুবই
চকচকে উজ্জ্বল।
ফুল ফুটেছে ফুল বাগানে
ছেড়ে অতুল ঘ্রাণ
ফুলের ঘ্রাণে শান্তি আনে
আকুল করে প্রাণ।
ফল ধরেছে থোকায় থোকায়
হচ্ছে ধীরে লাল
গ্রীষ্মকালের ফলগুলো হয়
সুস্বাদু রসাল।
কালবৈশাখী ঝড়
মুহাম্মাদ আলী মজুমদার
আকাশ এখন মেঘে ঢাকা
শুরু হবে ঝড়
খোকা-খুকু কাঁপছে ভয়ে
বুক করে ধড়ফড় ।
বিকট স্বরে ডাকছে আকাশ
গুড়ুং গুড়ুং করে
জান বাঁচাতে পশুপাখি
ফিরছে আপন ঘরে।
একটু পরেই শুরু হলো
কালবৈশাখী ঝড়
গাছগাছালি ভাঙছে দেখি
মড়াৎ মড়াৎ মড় ।
ঘুড়ি
মোহাম্মদ নূর আলম গন্ধী
আকাশপানে উড়ছে ঘুড়ি
হরেক রঙের ঘুড়ি
সাদা-হলুদ লাল-বেগুনী
রঙ বাহারি ঘুড়ি।
ঘুড়ির মেলা সারা বেলা
নামলো খুশির ঢল
হৈ-হুল্লোরে মেতেছে আজ
খোকা-খুকির দল।
এমন দিনে ঘরের কোণে
নেই তো কেহ আজ
ঘুড়ির পেছন ছুটছে সবে
ফেলে সকল কাজ।