শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪
Online Edition

বসিলায় ‘জঙ্গী আস্তানায়’ অন্তত দুইজন নিহত

তোফাজ্জল হোসেন কামাল : রাজধানীর মোহাম্মদপুর রায়েরবাজার বধ্যভূমির ঠিক পেছনে র‌্যাব-২-এর নতুন সদর দফতর থেকে মাত্র আধা কিলোমিটার দূরে ‘সন্দেহজনক’ বাড়িটি অবস্থিত। বাড়িটির ঠিক পাশে একটি দোতলা ভবন রয়েছে। বেশির ভাগ প্লট ফাঁকা। কিছু বাড়ি নির্মাণাধীন। ওই বাড়িটি বসিলার মেট্রো হাউজিং এলাকায় অবস্থিত। মেট্রো হাউজিংয়ের দক্ষিণ-পূর্ব কোনার শেষ প্রান্তে এর অবস্থান। এটি একটি একতলা টিনশেডের ভবন। চারটি কক্ষ রয়েছে। জঙ্গী অবস্থানের তথ্য জানার পরিপ্রেক্ষিতেই বাড়িটি ঘিরে অভিযান শুরু করে র‌্যাব-২।
র‌্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার মহিউদ্দিন ফারুকী গণমাধ্যমকর্মীদেরকে জানান, জঙ্গীদের অবস্থানের খবর পাওয়ার পর রোববার রাত ৩টার দিকে মেট্রো হাউজিংয়ে ৮ নম্বর রোডের শেষ মাথায় ওই টিনশেড বাসাটি ঘিরে ফেলে র‌্যাব সদস্যরা। অভিযান শুরুর পরপরই ওই বাসার ভেতরে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরে র‌্যাবের সঙ্গে গোলাগুলী হয় সেখানে। ভোর পৌনে ৫টার দিকে বড় একটি বিস্ফোরণে ওই বাসার টিনের চাল উড়ে যায়। সকাল ৯ টার পর বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে র‌্যাবের স্পেশাল ফোর্সের সদস্যরা ওই বাড়িতে ঢোকে। ওই সময়ও সেখান থেকে কয়েক দফা গুলীর শব্দ পাওয়া যায়। পরে ড্রোন উড়িয়ে ভেতরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয় বলে মহিউদ্দিন ফারুকী জানান।
ওই বাড়ির কেয়ারটেকার সোহাগ র‌্যাব কর্মকর্তাদের বলেছেন, চার কক্ষের ওই টিনশেড বাসার একটি ঘর চলতি মাসের ১ তারিখে ভাড়া নেয় দুই যুবক।
জঙ্গী আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়িতে আর জীবিত কেউ নেই বলে জানিয়েছে র‌্যাব। গতকাল সোমবার সকালে টিনশেড ওই বাড়ি ঘিরে অভিযানের পর র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন দেহাবশেষের মধ্যে অন্তত তিনটি পায়ের অংশ পাওয়া গেছে। অন্তত দুজন সেখানে নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করছেন তারা। নিহতরা কোনো জঙ্গী দলের সদস্য বলে জানালেও তাদের পরিচয় বা তারা কোন সংগঠনের সদস্য সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে চাননি বেনজীর।
ওই বাসার পাশে কিছুদিন আগে একটি মসজিদ গড়ে তোলা হয়। আটক ইউসুফ ওই মসজিদেরই ইমাম। র‌্যাব কর্মকর্তারা তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছেন। জঙ্গীদের বিষয়ে তথ্য পাওয়ার জন্য ওই বাড়ির মালিক ওয়াহাব, কেয়াটেকার সোহাগ, তার স্ত্রী মৌসুমী এবং পাশের মসজিদের ইমাম ইউসুফকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে র‌্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর বলেন, র‌্যাব সদস্যরা অভিযানের আগে ডাকাডাকি করলেও জঙ্গীরা দরজা খোলেনি। এক পর্যায়ে বাসার ভেতর থেকে র‌্যাব সদস্যদের দিকে গুলী ছোড়া হয়। অন্যদিকে র‌্যাবের পক্ষ থেকেও অন্তত দেড়শ রাউন্ড গুলী ছোড়া হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “ভেতরে যে মৃতদেহ আছে সেগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। সেগুলো চেনা যাচ্ছে না। কতজন সেখানে আছে সেটা বলা ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের কাজ। যেহেতু সেখানে মৃতদেহগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে আছে তাই সংখ্যা নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে সেখানে যেহেতু তিনটি পা দেখা গেছে তাই ধারণা করা যাচ্ছে অন্তত দুইজন সেখানে ছিল।”
যারা জঙ্গীবাদে ঝুঁকেছে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আহ্বান জানিয়ে বেনজীর বলেন, “লোকজন যদি জঙ্গীবাদের দিকে ধাবিত হয় সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জানাবেন। এরা দেশের দুশমন ও ইসলামের দুশমন। মুসলমানের দুশমন।”
১৩ ঘণ্টায় জঙ্গী অভিযান শেষ
বসিলায় ১৩ ঘণ্টা পরে জঙ্গীবিরোধী অভিযান শেষ ঘোষণা করেছে র‌্যাব। গতকাল বিকেলে র‌্যাব-২ এর সিও লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, ঘটনাস্থল থেকে দুই জঙ্গীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। চারটি অবিস্ফোরিত আইইডি বোমা জব্দ করা হয়েছে। একটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল জঙ্গীরা। তিনি আরও বলেন, রাত ৩টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই দীর্ঘ সময় ধরে আমরা একটা বড় অভিযান পরিচালনা করেছি। মোহাম্মদপুর থানায় র‌্যাব-২ এর পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হবে।
অভিযান শেষে র‌্যাবের মিডিয়া উইং’এর পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান সাংবাদিকদের জানান, চার কক্ষের ওই বাসা বিস্ফোরণে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। সেখান থেকে দুটি পিস্তল এবং চারটি অব্যবহৃত আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) পাওয়া গেছে। নিয়ন্ত্রিতভাবে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আইইডিগুলো নিস্ক্রিয় করা হয়েছে।
এর আগে বিকেল পৌনে ৪টায় সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট দু‘টি ব্যাগে করে জঙ্গীদের মরদেহ বের করে।
দুই ‘জঙ্গী’ বাসা ভাড়া নেয় ভ্যানচালক পরিচয়ে
বসিলায় সন্দেহভাজন জঙ্গী আস্তানায় র‌্যাবের অভিযানের মধ্যে বিস্ফোরণে নিহত দুই যুবক ভ্যানচালক পরিচয়ে টিনশেড ওই বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন।
বাড়ির মালিক ওয়াহাব র‌্যাবকে বলেছেন, ‘সুজন ও সুমন’ নাম ব্যবহার করে মাস দেড়েক আগে তারা ওই বাসা ভাড়া নেয়। বাসায় ওঠে এপ্রিলের ১ তারিখ। তবে তারা নিয়মিত ওই বাসায় থাকতেন না।
র‌্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, নিহত দুই যুবকের নাম ও তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে কিছুটা সময় লাগবে তাদের।
‘জিকিরের শব্দের পর গুলী, বিস্ফোরণ’
বসিলার মেট্রো হাউজিংয়ের ৯ নম্বর সড়কের শেষ মাথায় বাঁশ ও টিনের তৈরি একটি বাড়ি। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার (২৮ এপ্রিল) রাত ৩টার দিকে র‌্যাব কর্মকর্তারা ওই বাড়িতে যান। দরজায় কড়া নাড়ার পর এক নারী সাড়া দেন। দরজা খোলার অনুরোধ করলে তিনি দরজা খুলে দেন। এরপর র‌্যাব সদস্যরা ভেতর থেকে জিকিরের শব্দ পায়। ওই নারীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘ভেতরে কারা জিকির করে, তাকে বের হতে বলেন।’ এ প্রশ্নের পরপরই গুলী শুরু হয়। পরে র‌্যাব ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে দূরে অবস্থান নেয় এবং পরে বাড়িটি ঘিরে ফেলে। এরপরও বাড়ির ভেতর থেকে থেমে থেমে গুলী করা হচ্ছিল। জঙ্গী আস্তানায় অভিযানে অংশ নেয়া র‌্যাবের এক কর্মকর্তা এসব কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বাসার ভেতর থেকে জিকিরের শব্দ শুনে ভেবেছিলাম কেউ তাহাজ্জুতের নামাজ আদায় করতে উঠেছেন। কিন্তু যখন তাকে বের হয়ে আসতে বলি তখনই গুলী।’
র‌্যাব-২ কর্মকর্তা পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, বাসা থেকে প্রথমে চারজনকে বের করে আনা হয়। তারা হলেন বাড়ির কেয়ারটেকার সোহাগ, তার স্ত্রী মৌসুমী ও তাদের দুই সন্তান।
বাড়িটির বর্ণনা দিয়ে র‌্যাবের এক কর্মকর্তা বলেন, “বাড়িটিতে দু’টি কক্ষ। একটিতে কেয়ারটেকার থাকে। আরেকটি কক্ষ কিছুদিন ধরে বাড়ির মালিক ওহাব মসজিদ বলে দান করে দিয়েছেন। আসলে সরকারি খাস জমিতে ওহাব ঘর তুলেছেন। কিছুদিন আগে বিআইডব্লিউটিএ অভিযান চালানোর পর সে ভাড়াটিয়া তুলে দিয়ে মসজিদ করে দিয়েছে। ইউসুফ নামে একজন ইমাম সেখানে নামাজ পড়াতেন। আমাদের ধারণা ছিল আরও দু’টি কক্ষ আছে। তবে মসজিদের সঙ্গে আরও একটি ছোট লাগোয়া ঘর ছিল। সেখান থেকেই বিস্ফোরণ হয়েছে।’
পাশের দোতলা বাড়ির ভাড়াটিয়া মিঠু হাওলাদার বলেন, ‘আমি ৭/৮ মাস ধরে পরিবার নিয়ে এখানে ভাড়া থাকি। রোববার রাতে বিদ্যুৎ ছিল না। তাই বাসার ছাদে উঠি। বাড়ির অন্য বাসিন্দারাও ছাদে ওঠে। হঠাৎ গুলীর শব্দ পাই। এরপর র‌্যাব এসে আমাদের ছাদ থেকে নামিয়ে দেয়। পরে বাসায় এসে দরজা-জানালা বন্ধ করে দেই। এর কিছুক্ষণ পর বিকট শব্দে আবার বিস্ফোরণের শব্দ পাই। তখন র‌্যাব আমাদের নিরাপত্তার স্বার্থে বাসা থেকেও বের করে দেয়।’ তিনি বলেন, ‘যে বাড়িটিতে বিস্ফোরণ হয়েছে সেটির মালিক ওহাব নামে এক ব্যক্তি। বাড়িটিতে কেয়ারটেকার সোহাগ, তার স্ত্রী ও দুই সন্তান থাকে। অন্য কক্ষে অনেক দিন আগে ভাড়াটিয়া ছিল। বর্তমানে বাড়ির একপাশে মসজিদ করা হয়েছে। একজন ইমাম নামাজ পড়াতেন।’
জঙ্গী আস্তানার পাশের আরেকটি বাড়িতে গরুর খামারে কাজ করেন মিন্টু নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘বাড়িটিতে ভাড়াটিয়া কাউকে দেখিনি। তবে কেয়ারটেকার সোহাগ তার বউ নিয়ে থাকতেন। তাদের মাঝে মাঝে দেখতাম। আমাকে বাড়ির মালিক একদিন নামাজ পড়তে ডেকেছিল, আমি যাইনি।’
মিন্টুর স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, ‘বাড়িটিতে নতুন মসজিদ করা হয়েছে। একজন কালো লোককে মসজিদের চারপাশে কয়েকদিন বালু দিতে দেখছি। তবে তাকে চিনি না।’
সোহাগের স্ত্রী মৌসুমীর বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘বাসায় কোনও ভাড়াটিয়া বর্তমানে ছিল না। দুই-তিন মাস আগে ছিল। তবে কিছু দিন আগে কেয়ারটেকারের স্ত্রী মৌসুমী বলেছিলেন বাসায় মেস ভাড়া দিয়েছে। একটা ছেলে থাকতো মেসে। তবে তাকে আমি দেখিনি। রুমটা প্রায় তালা মারা দেখতাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাতে আমি শব্দ পেয়েছিলাম। পুরুষ কণ্ঠে বলতে শুনেছি, আরও মারবেন, মারেন। এরপর আমি বাসা থেকে বের হয়ে আসি।’
র‌্যাব কর্মকর্তা ফারুকী বলেন, ‘ভ্যানচালক পরিচয় দিয়ে ১৫০০ টাকায় মসজিদের পাশে ছোট্ট একটা কক্ষ ভাড়া নেয় দুই তরুণ। তারা নিজেদের সুমন ও সুজন বলে পরিচয় দিয়েছিল বলে কেয়ারটেকার সোহাগ আমাদের জানিয়েছে। তবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় নেয়নি কেয়ারটেকার।’
জঙ্গী আস্তানার পাশের বাসিন্দারা কেউ জানেন না এখানে একটা মসজিদ আছে। নুরজাহান বেগম নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘এখানে কবে মসজিদ হলো তা আমরা কেউ জানি না। বাড়ির মালিক ডিশ ও ইন্টারনেটের ব্যবসা করেন।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার তারেকুজ্জামান রাজীব বলেন, ‘মেট্রো হাউজিং এলাকাটি আমার নির্বাচনি এলাকার বর্ধিত অংশ। ৪/৫ বছর আগে এটি হয়েছে। এখনও উন্নয়ন কাজ চলছে। যে বাড়িতে জঙ্গী আস্তানা সেটি খাস জমিতে বলে শুনতে পেরেছি। ওহাব নামে একজন সেখানে ঘর তুলেছেন। তবে তাকে আমি চিনি না।’
নিহত দুজনকে চেনার উপায় নেই
সন্দেহভাজন জঙ্গী আস্তানায় র‌্যাবের অভিযানের মধ্যে বিস্ফোরণে নিহত দুইজনের ছিন্নভিন্ন দেহ চেনার উপায় নেই। দুপুরে র‌্যাবের অভিযান শেষে ঘটনাস্থল থেকে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করার পর সিআইডির ক্রাইম সিন শাখার সহকারী পুলিশ সুপার খন্দকার তৌহিদ হাসান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, “আঙ্গুলের ছাপ নিয়েও পরিচয় শনাক্তের কোনো সুযোগ নেই। দুটি দেহ পুড়ে গেছে, ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। ডিএনএ পরীক্ষা বা অন্য কোনো সূত্র ধরে তাদের পরিচয় বের করতে হবে।”
ভাড়াটিয়া নিবন্ধন ফরম সম্পর্কে ধারণা নেই বসিলাবাসীর
বসিলার মেট্রো হাউজিং ও এর আশপাশের এলাকার কেউই ভাড়াটিয়া নিবন্ধন ফরমের সম্পর্কে জানেন না। অথচ ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকা শহরে ভাড়াটিয়াদের জন্য নিবন্ধন ফরমের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বসিলাবাসীর অভিযোগ, দুই থানার সীমানা নিয়ে রেষারেষির কারণে পুলিশ এই এলাকায় কোনো নজর দেয় না, তাই বাড়ছে নানা অপরাধ।
গতকাল বছিলার যে ঘরটিকে জঙ্গী আস্তানা হিসেবে র‌্যাব সদস্যরা আবিষ্কার করে সেটি ভাড়া নেয়া দুই যুবকের কাছ থেকেও পূরণ করানো হয়নি ভাড়াটিয়া নিবন্ধন ফরম। রাখা হয়নি তাদের আইডি কার্ড ও ছবি। জানতে চাইলে ঘরের মালিক বলেন, বছিলার একটা অংশ হাজারীবাগ থানার, আরেকটা মোহাম্মদপুর থানার। দুই থানার কেউ এ ধরনের কোনো তথ্য চায়নি।
জঙ্গী আস্তানার পাশের একটি বাড়ির বাসিন্দা রহিমা বেগম বলেন, মোহাম্মদপুর বা হাজারীবাগ থানা পুলিশের কেউই এসব চায় না, তাই আমরাও ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে এগুলো নেই না।
মেট্রো হাউজিংয়ের ৪ নম্বর সড়কে নির্মাণাধীন একটি ভবন মালিকের স্ত্রী পারভিন আক্তার। ভবনটি নির্মাণাধীন হলেও একটি ফ্লোরের কাজ শেষ হওয়ায় চারজনকে ভাড়া দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, পুলিশ এমন কোনো ফরম আমাদের দেয়নি, তাই আমরাও তাদের কাছে কোনো তথ্য চাইনি।
একই ভবনের ভাড়াটিয়া সোহেল রানার স্ত্রী নূপুর বলেন, এর আগে আমরা যখন আজিমপুরে থাকতাম, সেখানে ভাড়াটিয়া তথ্য ফরম পূরণ করেছিলাম। স্বামীর চাকরির কারণে এখানে আসি। বাড়ির মালিক বা পুলিশ কেউই ফরম দেয়নি। তাই আমরাও ফরম পূরণ করিনি।
ঢাকার অন্যতম আলোচিত এই কর্মসূচি সম্পর্কে ঢাকার একটি অংশের লোকজন অবগতই নয়- এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের ধানমন্ডি জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) আবদুল্লাহ হেল কাফি বলেন, ওই এলাকার যে অংশটুকু হাজারীবাগে পড়েছে তারা কেন তথ্য সংগ্রহ করেনি সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানা ও বিট পুলিশের কাছে কৈফিয়ত চাওয়া হবে। কারও গাফলতি পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের এডিসি ওয়াহেদুল ইসলাম বলেন, এই এলাকাটা মূলত মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ কন্ট্রোল করে। কিন্তু কাগজে-কলমে জুরিসডিকসন ছিল না। যে কারণে একটা সমস্যা চলছিল। চূড়ান্তভাবে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ এই এলাকার ভাড়াটিয়া-মালিক সবার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ