রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

ডাকসুর নির্বাচন আজ ॥ সুষ্ঠু ভোট হওয়া নিয়ে সংশয়

সামছুল আরেফীন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আজ সোমবার। স্বাধীন দেশে এটি ডাকসুর অষ্টম নির্বাচন। নির্বাচন সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। নির্বাচন আদৌ সুষ্ঠু হবে কিনা- এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন প্রার্থী ও ভোটাররা। শুরু থেকেই আচরণবিধি লংঘন করেছে ছাত্রলীগ। উদাসীন ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভোট কারচুপির শঙ্কা থেকে ডাকসু নির্বাচনের সকালে কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট ও বাক্স পাঠানোর দাবি উঠলেও আগের দিনই হলগুলোতে সেগুলো পাঠিয়ে দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভোট শুরুর কয়েক ঘন্টা আগেই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন দাবি নিয়ে ভিসির কাছে যায় কয়েকটি প্যানেলের প্রার্থীরা। স্টিলের ব্যালট বাক্স নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করার পাশাপাশি সকালে কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট বাক্স পাঠানোর দাবি জানান তারা।
ফিরে দেখা ডাকসু: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ১৯২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রতিষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুতে এর নাম ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাসু)। শিক্ষার্থীদের এক টাকা চাঁদা দিয়ে এর সদস্য হওয়ার মধ্য দিয়েই যাত্রা শুরু হয় দেশের স্বাধিকার, ভাষার সংগ্রাম ও স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম সূতিকাগার ডাকসুর। প্রাথমিকভাবে অরাজনৈতিক কার্যকলাপ পরিচালনার উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি পায়। সে সময়ের বিশ্ববিদ্যালয় এর তিনটি হল - ঢাকা হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও জগন্নাথ হল থেকে একজন করে শিক্ষক ও ছাত্র প্রতিনিধি এবং ভিসি মনোনীত একজন শিক্ষক দিয়ে সংসদ গঠিত হত। ১৯২৫ সালের ৩০ অক্টোবর সংসদের সাধারণ সভায় খসড়া গঠনতন্ত্র অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী পরিষদ অনুমোদন করলে তা কার্যকর হয়। ১৯৫৩ সালে গঠনতন্ত্র সংশোধনের মাধ্যমে নাম পরিবর্তন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) রাখা হয়। প্রথমদিকে ডাকসুর ভিপি মনোনীত করা হত, ১৯২৪-২৫ সালে প্রথম ডাকসুর ভিপি মনোনীত করা হয়। ১৯৫৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ডাকসুর প্রথম নিবার্চন অনুষ্ঠিত হয়। ভিসিকে সভাপতি এবং ১৬ জন ছাত্র প্রতিনিধি থেকে ১০ জন কর্মকর্তা নির্বাচনের ব্যবস্থা রাখা হয়, কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন একজন শিক্ষক। ১৯৭০ সালে ডাকসুতে পরোক্ষ নির্বাচনের বদলে প্রত্যক্ষ নির্বাচন পদ্ধতি চালু হয়।
ডাকসুর নেতৃত্বে যারা ছিলেন: ডাকসুর প্রথম ভিপি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন যথাক্রমে মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও যোগেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত। ১৯২৮-২৯ সেশনে ভিপি ও জিএস হিসেবে নির্বাচিত হন এ এম আজহারুল ইসলাম ও এস চক্রবর্তী, ১৯২৯-৩২ সময়কালে রমণী কান্ত ভট্টাচার্য ও কাজী রহমত আলী ও আতাউর রহমান, ১৯৪৭-৪৮ সেশনে অরবিন্দ বোস ও অধ্যাপক গোলাম আযম, ১৯৫৩-৫৪ সালে এস এ বারী এটি ও জুলমত আলী খান, ফরিদ আহমেদ। এরপর ভিপি ও জিএস নির্বাচিতদের মধ্যে যথাক্রমে রয়েছেন নিরোদ বিহারী নাগ ও আব্দুর রব চৌধুরী, একরামুল হক ও শাহ আলী হোসেন, বদরুল আলম ও মো. ফজলী হোসেন, আবুল হোসেন ও এটিএম মেহেদী, আমিনুল ইসলাম তুলা ও আশরাফ উদ্দিন মকবুল, বেগম জাহানারা আখতার ও অমূল্য কুমার, এস এম রফিকুল হক ও এনায়েতুর রহমান, শ্যামা প্রসাদ ঘোষ ও কে এম ওবায়েদুর রহমান, রাশেদ খান মেনন ও মতিয়া চৌধুরী, বোরহান উদ্দিন ও আসাফুদ্দৌলা, ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী ও শফি আহমেদ, মাহফুজা খানম ও মোরশেদ আলী, তোফায়েল আহমেদ ও নাজিম কামরান চৌধুরী, আসম আব্দুর রব ও আব্দুল কুদ্দুস মাখন,     মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও মাহবুবুর জামান, মাহমুদুর রহমান মান্না ও আখতারুজ্জামান,  আখতারুজ্জামান ও জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ ও মুশতাক আহমেদ এবং ১৯৯০-৯১ আমান উল্লাহ আমান ও খায়রুল কবির খোকন।
আপত্তির মধ্যেই হলে গেল ব্যালট বাক্স: ভোট কারচুপির শঙ্কা থেকে ডাকসু নির্বাচনের সকালে কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট ও বাক্স পাঠানোর দাবি উঠলেও আগের দিনই হলগুলোতে সেগুলো পাঠিয়ে দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত রোববার বিকালেই সিনেট ভবন থেকে হলগুলোতে ব্যালট বাক্স পাঠানো শুরু হয়।
গত ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভরা হয় বলে বিএনপি জোটের অভিযোগের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনে স্বচ্ছতার জন্য এই দাবি তুলেছিলেন তিনি।
তবে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক আবদুল বাছির বলছেন, সকালে প্রার্থীদের সামনে ব্যালট বাক্স খুলে দেখানো হবে এবং তারপর সিলগালা করা হবে।
ব্যালট বাক্স ছাড়াও সব কেন্দ্রে প্রার্থীদের এজেন্ট না থাকা, ভোট গ্রহণের সময় ‘স্বল্পতা’ এবং অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে শঙ্কার কথা জানান ছাত্রলীগ বাদে অন্য সব প্যানেলের প্রার্থীরা। ভোট গ্রহণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগের দিনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারেনি বলে অভিযোগ করেন তারা।
২৮ বছর পর আজ সোমবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং ১৮টি হল সংসদের নির্বাচন। ডাকসু ও হল সংসদে মোট ৭৩৮ জন প্রার্থীর মধ্যে প্রত্যেক ভোটারকে ৩৮ জনকে বাছাই করতে হবে। চূড়ান্ত তালিকায় এবার মোট ভোটার সংখ্যা ৪৩ হাজার ২৫৫ জন।
 সোমবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ১৮টি হলের কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে। ভোট ঘিরে রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
‘নিয়ন্ত্রিত’ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ‘প্রার্থী ও প্যানেলকে জেতাতে’ ভোট গ্রহণের দায়িত্বে থাকা প্রশাসন বিভিন্ন কৌশল নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কোনো ব্যাপারেই নির্বাচন কমিশনের কোনো আপত্তি নেই। তারা একে অপরের সহায়ক শক্তি হিসাবে কাজ করছে বলেই আমাদের কাছে স্পষ্টভাবে ধরা দিচ্ছে। এই বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়ে ভিপি প্রার্থী লিটন বলেন, রোববার সকাল ৮টায় প্রচারণার সময় শেষ হয়েছে। কিন্তু আমরা এখনও দেখতে পাচ্ছি, ক্ষমতাসীনরা এখনও বিভিন্ন ক্লাস রুমে গিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে। সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট নিজে দাঁড়িয়ে থেকে আমাদের প্যানেলের প্রার্থীদের পোস্টার সরিয়ে সেখানে ছাত্রলীগের পোস্টার টাঙিয়েছে। গতকাল (সোমবার) রাতে ১০টির বেশি ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। স্টিলের ব্যালট বাক্স নিয়ে আরেকটি সংশয় তৈরি হয়েছে।
সংবাদিকদের ওপর কড়াকড়ি উঠিয়ে সব ভোটকেন্দ্র থেকে সরাসরি প্রচারের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
লিটন বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট রাখতে দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য সকাল ৭টা থেকে প্রতিটি রুটে ন্যূনতম ১০টি করে বাস দিতে হবে।
নির্বাচন নিয়ে লিটনের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ছাত্রলীগের এজিএস প্রার্থী সাদ্দাম হোসেন বলেন, প্রশাসন যেভাবে ভালো মনে করবে সেভাবেই ভোট গ্রহণ করবে। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কিছুই বলার নেই।
ছাত্রদলের ’বহিরাগতদের উপস্থিতি’ নির্বাচনে বিশৃঙ্খলার একটা কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম বলেন, আচরণবিধি লংঘন করে ছাত্রদল মহানগর থেকে সশস্ত্র ক্যাডাররা ক্যাম্পাসে এনে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তারা ডাকসু নিয়ে কথা বলার পরিবর্তে দ-িত খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং পলাতক আসামি তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি উপজীব্য করেছে।
ছাত্রদলের প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় শেষ মুহূর্তেও বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ডাকসুতে সংগঠনের ভিপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত একটা নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা তাদের মতামত প্রকাশ করার পরও ভোট গণনার সময় ইঞ্জিনিয়ারিং করে ফলাফল বদলে দেওয়া হতে পারে। এমন খবর আমরা শুনতে পাচ্ছি। ছাত্রলীগ ক্যাডাররা কেন্দ্রের ভেতরে জটলা সৃষ্টি করে রাখতে পরে। আর সাধারণ শিক্ষার্থীরা যাতে ভোট দিতে না পারে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে। আরেকটি পরিকল্পনা হচ্ছে- বাইরে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ দেখিয়েও গণনার সময় ফল পাল্টে দেবে।
নিজেদের আশঙ্কার কথা জানিয়ে রোববার নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন স্বাধীকার স্বতন্ত্র পরিষদের ভিপি প্রার্থী আসিফুর রহমান। তিনি বলেন, ভোট গ্রহণের সময় ৪ ঘণ্টা না বাড়ালে নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের মতামত প্রতিফলিত হবে না। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স স্থাপন করতে হবে। নির্বাচন নিয়ে যাতে কোনো গুজব না ছড়িয়ে পড়ে সেজন্য গণমাধ্যমের অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
বিভিন্ন সংগঠনের প্রার্থীরা সংশয়ের কথা জানালেও এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন না হতে প্রার্থী ও ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক আবদুল বাছির লেন, ওএমআর ফর্মে ভোট নেওয়া, ব্যালট ভাঁজ না করা এবং স্টিলের বাক্সে ভোট নেওয়া আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি। সকালে প্রার্থীদের সামনে ব্যালট বাক্স খুলে দেখানো হবে এবং তারপর সিলগালা করা হবে।
 ভোট গণনার সময়েও প্রার্থীরা থাকতে পারবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ডাকসুতে ২২৯ জন প্রার্থীর জন্য যদি একজন করেও এজেন্ট দেওয়া হয়, তাহলে ভোটকেন্দ্রের অবস্থা ঠিক রাখা সম্ভব হবে না। সে কারণে প্রার্থীরা ভোটিং শুরু ও গণনার সময় থাকার সুযোগ পাবে।
অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের পরিবহনের ব্যবস্থা যথাযথ থাকবে বলে আশ্বাস দিয়ে এই রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, শিক্ষার্থীদের আনার জন্য সকালে সবগুলো বাসই নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে যাবে, অন্যান্য দিন যেসব জায়গায় যায়। এভাবে ট্রিপ চলতে থাকবে।
এদিকে সকাল ৮টা থেকে মাত্র ছয় ঘণ্টায় ৪৩ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ভোট দিতে পারবেন না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছে ছাত্রলীগ ছাড়া অন্য সব সংগঠন। এর বিপরীতে শিক্ষার্থীদের অনুপাতে বুথ রাখার আশ্বাস বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিলেও মোট কতটি বুথ হচ্ছে সেই সংখ্যা ভোটের আগের দিনও জানাতে পারেনি তারা।
১৮ হলে ৫০৮ বুথে ডাকসুর ভোট: রাত পোহালেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে নির্বাচন কেন্দ্র করে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
হল প্রাধ্যক্ষ ও রিটার্নিং কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৪২ হাজার ৯২৩ ভোটারের জন্য ১৮টি হলের ৫০৮ বুথ প্রস্তুত করা হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলবে এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এদিকে নির্বাচন উপলক্ষে প্রচার-প্রচারণা শেষ করেছেন প্রার্থীরা। শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত চলে প্রচারণা।
সূত্রে জানা গেছে, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে বুথ ৩৫টি, শহীদুল্লাহ হলে ২০, ফজলুল হক মুসলিম হলে ৩৫, অমর একুশে হলে ২০, জগন্নাথ হলে ২৫, কবি জসীমউদদীন হলে ২০, মাস্টারদা সূর্যসেন হলে ৩২, হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে ৩০, রোকেয়া হলে ৫০, কবি সুফিয়া কামাল হলে ৪৫, শামসুন্নাহার হলে ৩৫, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে ২০, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে ১৯, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ২১, স্যার এএফ রহমান হলে ১৬, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ২৪, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ২০টি এবং বিজয় একাত্তর হলে ৪০টি বুথ থাকবে।
 কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫টি ও হল সংসদের ১৩টিসহ ৩৮টি পদের জন্য ভোট দেবেন শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫টি পদের বিপরীতে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন ২২৯ জন। আর প্রতিটি হল সংসদে ১৩টি পদের জন্য ১৮টি হলে ৫০৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
 শেষ সময়ে ভিসি বরাবর  স্মারকলিপি: শেষ সময়ে নানা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন ডাকসু নির্বাচনের অংশ নেওয়া প্রগতিশীল জোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ভোট গ্রহণের সময় বাড়ানো, পোলিং এজেন্ট দেওয়ার সুযোগ, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এবং নির্বাচনের দিন বিভিন্ন সড়কে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস বাড়ানোর দাবিতে বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে তারা সবাই একসঙ্গে ভিসি কার্যালয়ে যান। এ সময় কার্যালয়ের কলাপসিবল গেটে তাদের বাধা দেওয়া হয়।
এর প্রতিবাদে প্রার্থীরা সেখানেই অবস্থান নেন। পরে প্রার্থীদের মধ্যে কয়েকজনকে ভিসির কার্যালয়ে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়। এ সময় বাম জোটের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী লিটন নন্দী, কোটা আন্দোলনের নেতা, ভিপি প্রার্থী নুরুল হক নুরু, স্বতন্ত্র সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী এ আর এম আসিফুর রহমান, স্বতন্ত্র জোটের ভিপি প্রার্থী অরণী সেমন্তী খান ও ছাত্র ফেডারেশনের জিএস প্রার্থী উম্মে হাবিবা বেনজীর ভিসি কার্যালয়ে গিয়ে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেন। এ সময় ভিসি তাদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্ষমতার মধ্যে সহজেই অর্জনযোগ্য কয়েকটি বিষয় নিশ্চিত করা হলে ১১ তারিখের নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করা সম্ভব বলে মনে করি। এর মধ্যে আছে, আরও ৪ ঘণ্টা ভোট গ্রহণের সময় বাড়ানো, কেবল পোলিং বুথের ভেতর ছাড়া নির্বাচনি এলাকা ও ভোট কেন্দ্রের তথ্য সংগ্রহে সব ধরনের মিডিয়ার অবাধ সুযোগ তৈরি, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার ও পোলিং এজেন্ট নিয়োগের অনুমতি, নির্বাচনি পর্যবেক্ষক ও ভোটারদের নিরাপত্তা বিধানে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ, ভোট গ্রহণের দিন সকাল বেলা সব রুটে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের সংখ্যা বাড়ানো।
বামজোটের প্রার্থী লিটন নন্দী বলেন, আমাদের দাবিকে উপেক্ষা করে নির্বাচন করছে প্রশাসন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনও ধরনের অনিয়ম হলে প্রশাসনকে আমরা ছেড়ে কথা বলবো না। গঠনতন্ত্রে পোলিং এজেন্টের কথা রয়েছে । কিন্তু অধিকাংশ প্রভোস্ট পোলিং এজেন্ট রাখার বিপক্ষে মত দিয়েছেন। আমরা মনে করি, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এই ধরনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে।
এ সময় হাতে হাত ধরে বাম জোট, কোটা আন্দোলনকারী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নিজেদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে থাকার অঙ্গীকার করেন। তারা ভোটারদের নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
নির্বাচনে বিরোধী মতের শিক্ষকদের যুক্ত না করায় ক্ষোভ সাদা দলের: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সাদা দলের শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিরোধী মতের কোনও শিক্ষককে যুক্ত করা হয়নি। এছাড়া নির্বাচনের আগে কর্তৃপক্ষ বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলোর বিভিন্ন দাবি নিয়ে আলোচনা করলেও গঠনতন্ত্র সংশোধন ও আচরণবিধিতে সেসবের প্রতিফলন দেখা যায়নি। 
গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তারা। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রত্যাশা ছিলো, এ নির্বাচনকে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করার স্বার্থে নির্বাচন পরিচালনার জন্য গঠিত কমিশনসহ বিভিন্ন কমিটিতে ভিন্নমতের শিক্ষকদের প্রতিনিধিত্ব রাখা হবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা করেনি।
তিনি আরও বলেন,  বস্তুত গত এক দশক ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও চলছে একদলীয় শাসন। এবার ১৮টি হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ ১৮টি হলের প্রশাসনে প্রশাসন সমর্থক শিক্ষক ছাড়া ভিন্নমতের একজন প্রভোস্ট ও হাউজ টিউটর নেই। ফলে নির্বাচন পরিচালনায় গঠিত কমিশনে বিরোধী মতের শিক্ষক নেই। নির্বাচন-সংক্রান্ত বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিরপেক্ষতা নিয়েও বিরোধী প্রার্থী ও সংগঠনসমূহের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অভিযোগ করা হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে কর্তৃপক্ষ ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন ও নির্বাচনি আচরণবিধি তৈরি করে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করলেও গঠনতন্ত্র সংশোধন বা আচরণবিধিতে তাদের কোনও দাবি ও মতামতের প্রতিফলন দেখা যায়নি।
হলে হলে শিক্ষার্থীদের সহাবস্থান নেই দাবি করে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচন দেশের বিপন্ন নির্বাচন পদ্ধতি ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পুনরুদ্ধারে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করবে। সকল ভয়-ভীতি ও চাপ উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের ভোট দিয়ে পছন্দের প্রার্থীদের নির্বাচিত করার জন্য আহ্বান জানাই। একই সঙ্গে আশা প্রকাশ করি, ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের বিপন্ন নির্বাচন পদ্ধতি ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবারও ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করবে।
ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ছাড়াও এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন ঢাবি সাদা দলের প্রচার সম্পাদক প্রফেসর সিদ্দিকুর রহমান। আরও উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর কালাম সরকার, প্রফেসর নুরুল আমিনসহ ঢাবি সাদা দলের অন্য শিক্ষকরা।
স্টিলের অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্স নিয়ে প্রশ্ন: নির্বাচন উপলক্ষে ১৮ হলে ১১৩টি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে এ ক্যামেরার ব্যবহার বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, নির্বাচনের দিন ১৮টি হলে ১১৩টি সিসি ক্যামেরা থাকবে। এসব ক্যামেরা সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। কেউ যেন সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে না পারে সেজন্য আমরা সব আয়োজন সম্পন্ন করছি। এ ছাড়াও বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আশা করছি উৎসবমুখর পরিবেশে ডাকসু নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে রঙিন স্টিলের বাক্সকে ব্যালট বাক্স হিসেবে ব্যবহার করায় এর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রার্থীরা। যদিও ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত ডাকসুসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সব নির্বাচনে এ অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার করা হয়েছে।
ডাকসু নির্বাচন সংশ্লিষ্ট একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘদিন যাবত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনে স্টিলের বাক্সগুলোই ব্যবহৃত হচ্ছে। এটা নতুন কিছু নয়। ঢাবি শিক্ষক সমিতি নির্বাচন ও রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচনে এই বাক্সগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এবার ভোটার সংখ্যা বেশি হওয়ায় নতুন কিছু বাক্স তৈরি করা হয়েছে।
বামজোটের প্রার্থী লিটন নন্দী বলেন, শুধু ব্যালট বাক্স না, পুরো নির্বাচন নিয়ে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হচ্ছে প্রশাসন। নির্বাচনের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ সংগ্রহে আসা সাংবাদিকদের সংখ্যা সীমিত করে দেয়া এরই একটি অংশ।
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন বলেন, অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহারের ব্যাপারে তারা আগে থেকে কিছুই জানতেন না।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগকে সুবিধা করে দিতেই অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
একনজরে প্যানেল পরিচিতি : নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা অনুসারে ডাকসুর ২৫টি পদের বিপরীতে লড়বেন ২২৯ জন প্রার্থী। এর মধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ২১ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৪ এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ১৩ প্রার্থী। এছাড়া, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ৯ জন, কমন রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ৯ জন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন, সাহিত্য সম্পাদক পদে আট জন, সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ১২ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১১ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১০ জন ও সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এর বাইরে ১৩টি সদস্য পদের বিপরীতে লড়বেন ৮৬ প্রার্থী।
২০ ফেব্রুয়ারি ডাকসুর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। গত ৫ মার্চ প্রকাশ করা হয় সম্পূরক ভোটার তালিকা। এতে মোট ভোটার সংখ্যা ৪২ হাজার ৯২৩টি। ডাকসু নির্বাচনে সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র হয়ে লড়ছেন। স্বতন্ত্র সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থীরা হলেন এ বি এম আব্বাস আল কোরেশী, সফিক সরকার, আবদুল্লাহ আল লাবিব, আবদুল্লাহ জিয়াদ, ওমর ফারুক, আব্দুল আলীম (ধ্রুব), গোলাম রাসেল ও টিটো মোল্লা। স্বতন্ত্র সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীরা হলেন এ আর এম আসিফুর রহমান ও উম্মে হাবিবা বেনজির। এদের মধ্যে স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদ থেকে সাধারণ সম্পাদক পদে ঢাকা বিশ্বদ্যিালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি এ.আর.এম. আসিফুর রহমানকে পূর্ণ সমর্থন দেওয়া হয়েছে।
ছাত্রলীগ: ভিপি পদে ছাত্রলীগের রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক পদে গোলাম রাব্বানী লড়ছেন। এছাড়া, সাদ্দাম হোসেন (এজিএস), স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পাদক সাদ বিন কাদের, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আরিফ ইবনে আলী, কমন রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক বি এম লিপি আক্তার, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাহরিমা তানজিনা অর্নি, সাহিত্য সম্পাদক মাজহারুল কবির শয়ন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসিফ তালুকদার, ক্রীড়া সম্পাদক শাকিল আহমেদ তানভির, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক শামস-ই-নোমান ও সমাজসেবা সম্পাদক পদে লড়বেন আজিজুল হক সরকার।
ছাত্রদল: ছাত্রদলের পক্ষ থেকে সহ-সভাপতি পদে মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক পদে আনিসুর রহমান খন্দকার নির্বাচনে লড়ছেন। এছাড়া, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে খোরশেদ আলম সোহেল, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পাদক জাফরুল হাসান নাদিম, কমন রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক কানেতা ইয়া লাম লাম, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মো. আশরাফুল ইসলাম, সাহিত্য সম্পাদক মো. শাহিনুর ইসলাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক কাইউম উল হাসান, ক্রীড়া সম্পাদক মনিরুজ্জামান মামুন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক মাহফুজুর রহমান চৌধুরী, সমাজসেবা সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম।
বাম জোট: বাম জোটের সহসভাপতি পদে লিটন নন্দী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফয়সাল মাহমুদ (জিএস), সাদিকুল ইসলাম সাদিক (এজিএস), স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পাদক রাজিব কান্তি রায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক উলুল আমর তালুকদার, কমন রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক সুহাইল আহমেদ শুভ, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মীম আরাফাত মানব, সাহিত্য সম্পাদক রাজীব কুমার দাস, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফাহাদ হাসান আদনান, ক্রীড়া সম্পাদক শুভ্রনীল রায়, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক হাসিব মোহাম্মদ আশিক, সমাজসেবা সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন মোহাম্মদ নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী।
কোটা আন্দোলনকারীদর প্যানেল: কোটা আন্দোলনের পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা উদ্যোক্তারা মিলে প্যানেল দিয়েছেন ডাকসু নির্বাচনে। এই প্যানেলের সহসভাপতি পদে নুরুল হক নূর ও সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন রাশেদ খান। ফারুক হোসেন (এজিএস), মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক নাজমুল হুদা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক সোহরাব হোসেন, কমন রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক কামরুল হাসান, আন্তর্জাতিক সম্পাদক হাবিবুল্লাহ বেলালী, সাহিত্য সম্পাদক পদে আকরাম হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাহিদ ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক মামুনুর রশীদ, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম ও সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন।
জাসদ ছাত্রলীগ: জাসদ ছাত্রলীগের পক্ষে সহসভাপতি পদে মাহফুজুর রহমান রাহাত, সাধারণ সম্পাদক পদে শাহরিয়ার রহমান বিজয়, এজিএস সম্পাদক নাঈম হাসানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক শিরিন আক্তার, বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক তন্ময় কুমার কুন্ড, কমন রুম ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক ফজলে এলাহী জিসান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত রাহী, সাহিত্য সম্পাদক আদনান হোসেন অনিক, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রোমান, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান হাবিব, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক এহসানুল হক হিমেল, সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক আল আমিন শিকদার প্রতিদ্দন্দ্বিতা করছেন।
স্বতন্ত্র জোট: স্বতন্ত্র জোটের সহ-সভাপতি পদে জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী অরণি সেমন্তি খান, সাধারণ সম্পাদক পদে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাফী আবদুল্লাহ লড়ছেন। এছাড়া, এজিএস পদে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী অমিত প্রামাণিককে এই প্যানেলে রাখা হয়েছে। স্বতন্ত্র জোট থেকে ডাকসুর স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক পদে শ্রবণা শফিক দীপ্তি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে চয়ন বড়–য়া, কমন রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ওমর ফারুক, আন্তর্জাতি কবিষয়ক সম্পাদক পদে তালিম হাসান রিজভী, সাহিত্য সম্পাদক পদে আবু রায়হান খান, সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ফরহাদ হোসেন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে জুহায়ের আনজুম, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে তৌহিদ তানজীম ও সমাজসেবা সম্পাদক পদে লড়বেন ডি এম রহিস উজ জামান। অরণি সেমন্তি খান, সাধারণ সম্পাদক পদে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাফী আবদুল্লাহ লড়ছেন।
ছাত্রমৈত্রী: ছাত্রমৈত্রী থেকে সহসভাপতি পদে মো. রাসেল শেখ ও সাধারণ সম্পাদক পদে সনম সিদ্দিকী শিতি অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া, এজিএস সানজীদা বারী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মোফাজ্জেল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আরাফাত রহমান, কমন রুম ও ক্যাফেটারিয়া সম্পাদক এমিলি শেখ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আশরাফুল বিন শফি রাব্বি, সাহিত্য সম্পাদক আয়েজীদ ইসলাম হিমু, সংস্কৃতি সম্পাদক সাকিব সাদেকিন, ক্রীড়া সম্পাদক তানজিরুল ইসলাম তুহিন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক রহমতুল্লাহ বাহাদুর, সমাজসেবা সম্পাদক লুত্ফুল হাসান সাগর।
এছাড়া, বাংলাদেশ ছাত্র মুক্তিজোট থেকে শিহাব শাহরিয়ার সোহাগ সহসভাপতি ও রাশেদুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক এবং ইশা (ইসলামিক শাসনতন্ত্র) ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে এস. এম. আতায়ে রাব্বী সহসভাপতি ও মাহমুদুল হাসান সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ