রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ ঢাবি হল প্রাধ্যক্ষ ড. মিজানের

স্টাফ রিপোর্টার : ছাত্র বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ ও মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। হলের আবাসিক একজন শিক্ষার্থীকে হলের ড. মিজানুর রহমানের ছেলে ‘দুই টাকার ছাত্র’ বলায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্দ হয়ে উঠে। পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রাধ্যক্ষকে তার ছেলেসহ হল অফিসে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে রাখেন। পরে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিজানুর রহমান পদত্যাগপত্র লিখে হাতে নিয়ে প্রক্টরিয়াল টিমের সাহায্যে হল ত্যাগ করেন। এসময় ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতিও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিজানুর রহমানের ছেলে শুক্রবারে হল মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে যান। সামনের কাতারে যাওয়ার সময় মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের ছাত্র রাইহানের মাথায় তার পা লাগে। নামাজ শেষে রায়হান তার কাছে গিয়ে পরিচয় জানতে চান।
এসময় হল প্রাধ্যক্ষপুত্র তার বাবাকে ডেকে আনেন। বাবার উপস্থিতিতে ওই ছাত্রকে তিনি বলেন ‘দুই টাকার ছাত্র হয়ে আমার পরিচয় জানতে চাচ্ছে।’
এসময় প্রাধ্যক্ষ মিজানুর রহমানও জানতে চান কোন শিক্ষার্থী তার ছেলের সঙ্গে মিসবিহ্যাভ করেছে? তাকে নিয়ে আসার কথা বলেন। সঙ্গে সঙ্গে হলের সব শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে হল প্রাধ্যক্ষ ও তার ছেলেকে হল অফিসে আটকে বিক্ষোভ করতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা আজকের মধ্যে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ চান। এসময় অধ্যাপক মিজানুর রহমান পদত্যাগ করার ঘোষণা দেন।
ঘটনার বিষয়ে এফএইচ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে হল সংসদের ভিপি পদপ্রার্থী শাহরিয়ার সিদ্দিক শিশিম বলেন, হল প্রাধ্যক্ষের ছেলে একজন শিক্ষার্থীকে দুই টাকার ছাত্র বলেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি প্রাধ্যক্ষকে পদত্যাগ করতে হবে। আমিও তাদের দাবির সঙ্গে একমত।
এ বিষয়ে অধ্যাপক মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনা শুনে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, কে বা কারা আমার ছেলেকে মেরে ওর চশমা ভেঙে ফেলেছে। আমার ছেলে বলেছে যে ও ইচ্ছা করে কারও গায়ে পা দেয়নি, ভুলক্রমে হয়ে গেছে। কে এই কাজটি করল, জানতে গেলে তাঁরা আমারও মর্যাদাহানি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের নীতিজ্ঞান হারিয়ে এমন আচরণ করেছে, যা আমাকে দুঃখ দিয়েছে। আশা করছি, ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে এমন নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে, যাঁরা হবেন নীতিজ্ঞানসম্পন্ন। এই ঘটনায় দুঃখ পেয়ে গতকাল বিকেলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে গিয়ে প্রাধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগের চিঠি দিয়ে এসেছেন বলে জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, জুমার নামাজের পর এফএইচ হলে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। ওনার (অধ্যাপক মিজানুর রহমান) ছেলের সাথে হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীর কথা কাটাকাটি হয়েছিল। পরবর্তীতে সহকারী প্রক্টর ও হলের শিক্ষকদের সহযোগিতায় আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান হয়েছে। এতটুকুই জানি। হলের প্রভোস্টের পদত্যাগ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ