বুধবার ২২ মে ২০২৪
Online Edition

উত্তেজনার পেছনে বড় ভূমিকা ইসরাইলের!

খ্যাতনামা ব্রিটিশ সাংবাদিক রবার্ট ফিস্ক বলেছেন, পাক-ভারত উত্তেজনার পেছনে বড় ভূমিকা পালন করছে ইসরাইল। নয়াদিল্লীর ওপর ইহুদীবাদী ইসরাইলের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ফলেই সম্প্রতি পাক-ভারত উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি জানান। ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্টে প্রকাশিত নিবন্ধে রবার্ট ফিস্ক আরো বলেন, এবারের পাক-ভারত সংঘর্ষে ইসরাইলের প্রভাব নজরে পড়ার মতো। ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের মধ্যে বিরাজমান মুসলিমবিরোধী চেতনাকে পুঁজি করতে চাইছে ইসরাইল। নয়াদিল্লীর কাছে আরও অস্ত্রশস্ত্র বিক্রির লক্ষ্যে এমনটি চাইছে তেলআবিব। ভারতের সাথে সম্পর্ক আরও গভীর করতে এবং পাক-ভারত সম্পর্ককে আরও উত্তেজনার দিকে ঠেলে দিতেও তৎপর রয়েছে ইসরাইল।

প্রসঙ্গত ইসরাইলের তৈরি রাফায়েল স্পাইস-২০০০ ক্ষেপণাস্ত্রের কথা উল্লেখ করেন রবার্ট ফিস্ক। গত মঙ্গলবার পাক ভূখ-ে হামলার সময় ভারত ওই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। এ সংঘর্ষের  মধ্যদিয়ে ইসরাইল যে লাভের অংক গুনছে এটি তার পরিষ্কার প্রমাণ বলে মনে করেন তিনি। উল্লেখ্য যে, ২০১৭ সালে ইসরাইলী  অস্ত্রের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল ভারত। ইসরাইলী বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনতে ভারত ব্যয় করেছে ৭০ কোটি ডলার। ফিলিস্তিন এবং সিরিয়ায় এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করেছে ইসরাইল। আর এই ব্যবস্থার ধ্বংস ক্ষমতা ভারতকে প্রদর্শন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ব্রাসেলসের গবেষক শৈরি সালহোত্রা ইসরাইলী সংবাদ মাধ্যম হারেতেজ-এর এক প্রতিবেদনে গত বছর লিখেছিলেন, ‘ভারত-ইসরাইলের (সুদৃঢ় সামরিক) সম্পর্কটা গড়ে উঠেছে বিজেপি ও লিকুদ পার্টির রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিত্তিতে।’ ওই গবেষকের মতে, ‘ইসরাইল যেভাবে ফিলিস্তিনীদের বিশেষ করে মুসলমানদের হত্যা করছে, তা দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছে ভারতের হিন্দুরা। তারাও চায়, একই কায়দায় পাকিস্তানকে ঘায়েল করা হোক।’ মালহোত্রার মতে, ভারত-ইসরাইলের সম্পর্ক হওয়া উচিত বাস্তবতার দিক থেকে বিবেচনা করে, কোনো মতাদর্শের ভিত্তিতে নয়। লক্ষণীয় বিষয় হলো, মোদি সরকারের মতো ভারতের আর কোন সরকার ইসরাইলের সাথে এতো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেনি। আরো অবাক ব্যাপার হলো, ইসরাইলের লিকুদ পার্টিও ভারতের বিজেপি রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিত্তিতে সুদৃঢ় সামরিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। বর্তমান বিশ্বরাজনীতির প্রেক্ষাপটে এমন সম্পর্ককে সহজভাবে গ্রহণ করা যায় না। কাশ্মীর নিয়ে পাক-ভারত উত্তেজনার কথা আমরা জানি। এটা ছিল দু’দেশের মধ্যে একটি সংকট। কিন্তু এখন এই সংকটে ইসরাইল যুক্ত হওয়ায় যোগ হয়েছে এক নতুন মাত্রা। এই মাত্রা এই অঞ্চল ও বিশ্বশান্তির ক্ষেত্রে এক বড় অশনিসংকেত বলে আমরা মনে করি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ