সাংবাদিক গ্রেফতার করে সত্যকে চেপে রাখা যাবে না
খুলনা অফিস : মহানগর বিএনপির এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, মামলা দিয়ে সাংবাদিক গ্রেফতার করে ও কালাকানুন জারির মাধ্যমে গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ করে সত্যকে চেপে রাখা যাবেনা। বরং ভোট ডাকাতি ও জালিয়াতির নির্বাচনের দায়ে সরকারকেই ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় সাংবাদিক হেদায়েৎ হোসেন মোল্লাকে গ্রেফতার এবং রাশিদুল ইসলামকে আসামী করার ঘটনার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে তাদের শর্তহীন মুক্তির দাবি জানান। বিবৃতিতে বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেন, সহকারি রিটার্নিং অফিসারকে দিয়ে মামলা করিয়ে তথাকথিত গণতন্ত্রের নগ্ন চেহারা উন্মোচন করেছে সরকার। দেশ-বিদেশ থেকে যতোই নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচনের সার্টিফিকেট আদায় করা হোকনা কেন, নির্বাচন যে প্রহসনের ও জালিয়াতির তা খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনের ভোটের ফলাফল থেকেই প্রমাণিত। বিবৃতিতে কোন ধরনের কালাকানুনের বুনিয়াদে আর কোন গণমাধ্যম কর্মীকে গ্রেফতার কিংবা হয়রানি না করার জন্য জোর দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিদাতারা হলেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক এমপি এম নুরুল ইসলাম দাদু ভাই, সভাপতি সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, সৈয়দা নার্গিস আলী, মীর কায়সেদ আলী, শেখ মোশারফ হোসেন, জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, জলিল খান কালাম, সিরাজুল ইসলাম, ফখরুল আলম, এডভোকেট ফজলে হালিম লিটন, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, শেখ আমজাদ হোসেন, অধ্যাপক আরিফুজ্জামান অপু, সিরাজুল হক নান্নু, ইকবাল হোসেন খোকন, আসাদুজ্জামান মুরাদ প্রমুখ।
এদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার বাংলা ট্রিবিউনের খুলনা প্রতিনিধি ও দৈনিক প্রবাহের সিটি এডিটর হেদায়েৎ হোসেন মোল্লাকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে খুলনার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক নয়ন বিশ্বাস এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট তারিক মাহমুদ তারা জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) বটিয়াঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান ৭ দিনের রিমান্ড দাবি করলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া মামলায় মঙ্গলবার (১ জানুয়ারি) বিকেলে খুলনা মহানগরীর গল্লামারী এলাকা থেকে সাংবাদিক হেদায়েৎ হোসেন মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়। গত ৩০ ডিসেম্বর রাতে খুলনার রিটার্নিং কর্মকর্তা তার কার্যালয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন। ওই ফলাফলে খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাট) আসনে মোট ভোটারের চেয়ে ২২ হাজারেরও বেশি ভোট গ্রহণ হয়েছে মর্মে বাংলা ট্রিবিউন ও দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ চৌধুরী বাদি হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বটিয়াঘাটা থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সাংবাদিক হেদায়েৎ হোসেন মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া মামলায় দৈনিক মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার রাশিদুল ইসলামকেও আসামি করা হয়েছে।