শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪
Online Edition

লেভেলপ্লেয়িং ফিল্ড তো দূরের কথা বরং বিরোধী দল নির্বাচনী প্রচারের ন্যূনতম সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন -সেলিম উদ্দিন

ঢাকা-১৫ আসনে ২০ দলীয় জোট মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ডা. শফিকুর রহমানের  নির্বাচনী কাজে বাধাদান, নেতাকর্মীদের উপর হামলা, মামলা, ভাঙ্গচুর, লুটপাট, সন্ত্রাস, গুম, অপহরণ ও নির্বিচারে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদ এবং নিখোঁজদের সন্ধানসহ গ্রেফতারকৃতদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
গতকাল মঙ্গলবার দেয়া বিবৃতিতে মহানগরী আমীর বলেন, নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই পরাজয়ের আতঙ্কে ক্ষমতাসীনদের মধ্যে অস্থিরতাও বাড়ছে। অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তো দুরের কথা বিরোধী দলকে নির্বাচনী প্রচারণার নুন্যতম সুযোগও দেয়া হচ্ছে না। প্রতিনিয়ত বিরোধী দলীয় প্রার্থী সহ নেতাকর্মীদের উপর হামলা, মামলা ও গণহারে গ্রেফতার  করা হচ্ছে। শত শত মানুষকে গুমও করা হয়েছে। এ পর্যন্ত হাজার হাজার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মী সহ ১৫ জন প্রার্থীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের গুলীতে ২ জন প্রার্থী গুলীবিদ্ধ ও একজনের পিটিয়ে পা ভেঙে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে।  মূলত সরকার ৫ জানুয়ারি আদলে আবারও নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার জন্য নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। সে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে সহায়ক হিসেবে কাজ করছে আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন ও দলীয় প্রশাসন। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সরকার বিরোধী দলের প্রতিপক্ষ নয় বরং নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনই বিরোধী দলের প্রধান প্রতিপক্ষ।
তিনি বলেন, ঢাকা নগরীর প্রাণকেন্দ্র অবস্থিত ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসন।  এ আসনে ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে বিশিষ্ট চিকিৎসক, স্বনামধন্য সমাজসেবক, খ্যাতিমান সংগঠক, প্রখ্যাত রাজনীতিক, ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষনেতা ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল জননেতা ডা. শফিকুর রহমানকে। কিন্তু নির্বাচনী এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় এবং নিরাপত্তাহীনতার কারণেই তিনি এখনো নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন নি। এমনকি ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরাও নির্বিঘেœ নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন নি। সরকার দলীয় সন্ত্রাসী ও পুলিশ যুগপৎভাবে তাদের উপর হামলা চালিয়ে তাদেরকে নির্মমভাবে মারধর, যানবাহন ভাঙ্গচুর, প্রচার সামগ্রী ও নগদ অর্থ লুটের ঘটনাও ঘটাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
তিনি আরও বলেন, এমনকি নির্বাচনী অফিসে হামলা চালিয়ে কম্পিউটার সহ মূল্যবান আসবাবপত্র ও মালামাল লুটের ঘটনাও ঘটেছে। শুধু ঢাকা-১৫ আসনেই এ পর্যন্ত দু’শতাধিক ২০ দলীয় জোট নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অনেক নেতাকর্মীকে গুমও করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, ধানের শীষ প্রার্থীর নির্বাচনী সমন্বয়ক, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ও প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ রাজনীতিক ড. মুহা. রেজাউল করিমকে তার গাড়ীর ড্রাইভারসহ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। সরকারের জুলুম-নির্যতনের ধারাবাহিকতা গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে নির্বাচনী ক্যাম্পেইনের সময় নগরীর বাইশটেকি থেকে ধানের শীষ প্রার্থীর কর্মী মাওলানা আব্দুল কাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূলত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তো দুরের কথা বরং বিরোধী দল নির্বাচনী প্রচারের ন্যুনতম সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
মহানগরী আমীর বলেন, সরকার ভোট ডাকাতি করে নির্বাচনের জেতার জন্য গোটা দেশেই ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। সে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সারাদেশেই বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের হামলা, মামলা ও গণগ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে। সেনা মোতায়েনের পরও পরিস্থিতির তেমন কোন উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। তাই দেশ ও জাতিকে এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করতে হলে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। তিনি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থেই ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচনী সমন্বয়ক ড. মুহা. রেজাউল করিমের রিমান্ড বাতিল ও  তিনিসহ সকল নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন এবং ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানান।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ