ক্রিমিয়া উপকূলে ইউক্রেনের ৩ জাহাজ জব্দ রাশিয়ার
২৬ নবেম্বর, বিবিসি, রয়টার্স : অধিকৃত ক্রিমিয়া উপকূলে ইউক্রেন নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজ জব্দ করেছে রাশিয়া। গত রোববার জাহাজগুলো জব্দ করার আগে সেগুলোর দিকে গুলি ছুঁড়ে বেশ কয়েকজন ইউক্রেনীয় নাবিককে আহত করেছে রুশ নিরাপত্তা বাহিনী।
রাশিয়ার এ পদক্ষেপে দেশ দুটির মধ্যে বিপজ্জনক নতুন সংকট শুরু হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য রয়টার্সের।
রাশিয়ার বার্তা সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল সোমবার দিনের শুরুতে রাশিয়ার এফএসবি নিরাপত্তা বিভাগ জানিয়েছে, তাদের সীমান্ত টহল বোটগুলো কৃষ্ণ সাগরে ইউক্রেন নৌবাহিনীর জাহাজগুলো জব্দ করেছে এবং সেগুলো থামাতে অস্ত্র ব্যবহার করেছে।
এফএসবি জানিয়েছে, তারা এ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে কারণ ইউক্রেনের জাহাজগুলো অবৈধভাবে তাদের জলসীমায় প্রবেশ করেছে, অবৈধ পদক্ষেপের উদ্যোগ নিয়েছে এবং বিপজ্জনকভাবে এগিয়ে যাওয়ার সময় সতর্কতা জানানো হলেও তা উপেক্ষা করেছে।
জাহাজগুলোর মধ্যে দুটি গানবোট ও একটি টাগবোট রয়েছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থায় প্রচারিত এক বিবৃতিতে এফএসবি বলেছে, “ইউক্রেনের জাহাজগুলোকে জোর করে থামানোর জন্য অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলে ইউক্রেনের তিনটি জাহাজকেই কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়া ফেডারেশনের জলসীমা থেকে জব্দ করা হয়েছে।”
এ ঘটনার সময় আহত তিন ইউক্রেনীয় নাবিককে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং তারা আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছে এফএসবি।
জাহাজগুলো কোনো আইন ভঙ্গ করেনি দাবি করে রাশিয়া সামরিক আগ্রাসন চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। রাশিয়াকে শাস্তি দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
রাশিয়ার অনুরোধে সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এই ঘটনাটি নিয়ে আলোচনা করবে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার সহকারী রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি পোলিয়ানস্কি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো সামরিক বাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পোরোশেঙ্কো জানিয়েছেন, দেশে সামরিক আইন জারির জন্য পার্লামেন্টের কাছে প্রস্তাব রাখবেন তিনি।
এদিকে ক্রিমিয়া উপকূলে রাশিয়া ইউক্রেনের তিনটি জাহাজ জব্দ করার ঘটনায় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা রুশ দূতাবাসে জড়ো হন। এসময় তারা দূতাবাসের একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন।
ক্রিমিয়া উপসাগরীয় অঞ্চলে জাহাজ জব্দের ঘটনায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার উত্তেজনা চরমে নিয়ে গেছে। এর ফলে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিল একটি জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে।
গত রোববার মধ্যরাতে দেড় শতাধিক প্রতিবাদকারী কিয়েভে রাশিয়ার দূতাবাসের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছেন। এসময় অনেকেই আগুনের ফুলকি ছুড়ে মারেন দূতাবাস ভবনের দিকে। বিক্ষোভকারীরা দূতাবাসের অন্তত একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে।