উপবৃত্তির অর্থ লোপাট
শিক্ষাঙ্গন রিপোর্ট : মেধাবী দরিদ্র শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রকল্প শেষ হয়ে গেলেও এবছরের শুরুতে নতুন করে আবার ১৬২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এতে ৬ লাখ ২ হাজার শিক্ষার্থীর উপকৃত হবার কথা। তন্মধ্যে ৪০ শতাংশ মেয়ে এবং ১০ শতাংশ ছেলে। এ প্রকল্প থেকে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা পাবে প্রত্যেকে বছরে ২৮০০ এবং মানবিক, বাণিজ্য ও কারিগরি বিভাগের শিক্ষার্থীরা পাবে ২১০০ টাকা করে। বই কেনা, টিউশন ফি ও অন্যান্য প্রয়োজনে এ অর্থ ব্যয় করবে শিক্ষার্থীরা। শুধু মেধাবীরাই নয় অসচ্ছল, প্রতিবন্ধী, এতিম শিক্ষার্থীরাও রয়েছে এ প্রকল্পের আওতায়। এ উদ্যোগ নিশ্চয়ই প্রশংসনীয়। এতে অনেক গরিব ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার প্রতিবন্ধকতা কেটে যায়। পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে। বিশেষত প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগেই বন্ধ হয়ে যাওয়া এ প্রকল্পটি অব্যাহত রয়েছে বলে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট রিপোর্টে। দুঃখজনক খবর হচ্ছে, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের এ উপবৃত্তি প্রকল্পেও শকুনের কুদৃষ্টি পড়েছে। পত্রিকান্তরে প্রকাশ, এ প্রকল্পের ৬৮ কোটি টাকা উধাও হয়ে গেছে। বড়পুকুরিয়ার কয়লা যেমন উবে গেছে। মধ্যপাড়ার কঠিন শিলা যেমন মাটিতে দেবে গেছে। তেমনই দরিদ্র শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির উল্লেখিত অর্থও হাওয়া হয়ে গেছে। মানে সরকারি প্রকল্পের টাকার হাত-পা গজায়, ডানা-পাখনা বেরোয়তো; তাই সহজেই এধারওধার হতে পারে। উড়তে পারে। এই হচ্ছে আমাদের দেশের কাণ্ড। অর্থ যেখানে, সেখানে কোনও না কোনও অনর্থ ঘটবেই। গরিবের হোক কিংবা মিশকিনের। কোনও বাছবিচার নেই। যে করেই হোক, টাকার হাত-পা গজাবেই। গরিব, দুস্থ, অসহায়, এতিম ছাত্রছাত্রীদের সামান্য কিছু টাকার লোভ যারা সামলাতে পারে না, তাদের কাছে এ হতভাগ্য জাতি কী প্রত্যাশা করতে পারে আমাদের জানা নেই।
এই উপবৃত্তির টাকা কারা লোপাট করেছে তা খুঁজে বের করতে খুব বেশি বেগ পাবার কথা নয়। সংশ্লিষ্ট প্রকল্প অফিস, শিক্ষা অফিস, না কোনও স্কুল কর্তৃপক্ষ উপবৃত্তির টাকা মেরে দিয়েছে তা বের করা খুব ঝামেলার কাজও মনে হয় না। সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র তলব করে কান ধরে টান দিলেই মাথা চলে আসবে বলে আমরা মনে করি। যারা গরিব ছাত্রছাত্রীদের উপবৃত্তির টাকা মেরে দেয় তারা দেশের দুশমন। জাতির শত্রু। এদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে আইনের হাতে তুলে দিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হওয়া জরুরি।