রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

নালিতাবাড়ীতে অতি দরিদ্র কর্মসূচির কোটি টাকা লুটপাট

আল-হেলাল, (নালিতাবাড়ী) শেরপুর : শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের ইজিপিপি প্রকল্পের আওতায় অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির প্রায় কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। তালিকায় ভুয়া শ্রমিক ও শ্রমিকের ভুয়া উপস্থিতি তৈরি করে এ টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের ইজিপিপি ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে জনসংখ্যা ভিত্তিক আনুপাতিক হারে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ২ হাজার ৪৮৭ জন শ্রমিক তালিকভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে বেশ কিছু নামের বাস্তবে শ্রমিকে তালিকাভুক্তি করে সে নামে ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খুলে শুধু টাকার ভাগ বসিয়েছেন। তাবে ৪০ দিনে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়েছে কাগজে কলমে। কোথাও ১৯ দিনে কোথাও ২০ দিন কোথাও ৩০ দিন কোথাও ৩৫ দিন কাজ করানো হয়েছে। এর মধ্যে আবার প্রতিটি প্রকল্পের প্রায় অর্ধেক শ্রমিকই ছিলো অনুপস্থিত। কিন্তু কাগজে কলমে প্রতিটি প্রকল্পে নিয়মিত কাজ দেখানো হয়েছে। হিসাব মতে ২ হাজার ৪৮৭ জন শ্রমিকের ২০০ করে সর্বমোট এক কোটি ৯৮ লাখ ৯৬ হাজার এবং মোট ৬২টি প্রকেল্পের ৬২ জন শ্রমিক সর্দারের সম্মানী বাবদ ১ লাখ ২৪ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিলো। ফলে ২ ধাপে প্রায় ৪ কোটি টাকার বরাদ্দ আসে। তালিকাভুক্ত শ্রমকিদের হাতে সরাসরি অর্থ লেনদেনের নিয়ম থাকলেও এসব অর্থের বেশির ভাগই সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজসে উত্তোলন করেন জন প্রতিনিধি বা তাদের পাঠানো প্রতিনিধিরা। আর এ ফাঁকিতে ভাগ বসায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়। বাধ্যতামূলক শতকরা প্রায় ১০ ভাগ হারে কমিশন দিয়ে বৈধ করা হয় শ্রমিকদের নামে উত্তোলিত টাকা। নাম প্রকাশ না করে জন প্রতিনিধিরা জানান অফিস থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে কর্মসূচি বিলম্বে শুরু করতে নির্দেশনা দেয়া হতো। ফলে ৩৫ দিন করে কাজ দেখানো সম্ভব হয়েছে। বাকি টাকা ফেরত গেছে। আর বিলম্বে কাজ শুরুর ফলে বিভিন্ন বাহানায় শ্রমিকদের অনুপস্থিত রাখার সুযোগ তৈরি হয়। এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাসোসিয়েশনে সাধারণ সম্পাদক ও নালিতাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষাদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মাষ্টার বলেন, আমার ইউনিয়নে সম্পূর্ণ কাজ হয়েছে, অন্য ইউনিয়নে কি হয়েছে বলতে পারবো না। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কার্ড অব ডেইট না থাকায় কর্মসূচির পাঁচ দিনের টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। কর্মসূচির অনিয়মের কথা জানতে চাইলে তিনি পরে সাক্ষাতের কথা বলে। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরফদার সোহেল রহমানকে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ