শনিবার ১৮ মে ২০২৪
Online Edition

গাজায় ইসরাইলী সহিংসতার নিন্দায় জাতিসংঘে উত্থাপিত প্রস্তাবে ভেটো যুক্তরাষ্ট্রের

 

২ জুন, রয়টার্স : গাজা সীমান্তে বেসামরিক ফিলিস্তিনীদের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর বল প্রয়োগ ও সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে তোলা এক প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত শুক্রবার কুয়েতের করা খসড়া নিন্দা প্রস্তাবে রাশিয়া, চীন, ফ্রান্সসহ ৯টি সদস্য দেশ সমর্থন জানালেও ওয়াশিংটনের আপত্তিতে তা কার্যকর করা যায়নি।

গাজায় সংঘর্ষের জন্য হামাসকে দায়ী করে একই দিন পাল্টা নিন্দা প্রস্তাবও এনেছিল যুক্তরাষ্ট্র; যদিও তাদের খসড়াটি কোনো দেশেরই সমর্থন পায়নি।

দুই ভোটের এই বৈসাদৃশ্যের পর যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি বলেছেন, একতরফাভাবে কেবল ইসরাইলের ওপর দোষ চাপাতে গিয়ে জাতিসংঘ হামাসের দায় দেখছেই না।

 “জাতিসংঘ যে ইসরাইলের সঙ্গে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে, এটা এখন পুরোপুরি স্পষ্ট,” বিবৃতিতে বলেন হ্যালি।

মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে গাজা সীমান্ত বরাবর শুরু হওয়া ফিলিস্তিনীদের বিক্ষোভ দমনে তেল আবিবের সহিংস আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে এর আগেও ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ তাদের শক্ত অবস্থানের কথা প্রকাশ করেছিল।

১৯৪৮ সালে শরণার্থী হওয়া লাখ লাখ মানুষকে ইসরাইলের দখলে থাকা এলাকায় ফিরতে বাধা দেয়ার প্রতিবাদে হামাসসহ বেশ কয়েকটি দল ও গোষ্ঠী ৩০ মার্চ থেকে ‘মার্চ অব রিটার্নের’ ডাক দিয়েছিল।

ইসরাইলের মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুসালেমে সরিয়ে নেওয়ার আনুষ্ঠিকতার সময় চলতি মাসের মাঝামাঝি বিক্ষোভ তুঙ্গে ওঠেছিল। বিক্ষোভের পাল্টায় ইসরাইলি বাহিনীর গুলীতে কেবল ১৪ মে-তেই ৬০ ফিলিস্তিনী প্রাণ হারান। এরপর থেকে সহিংসতার পরিমাণ কমে এলেও বিক্ষিপ্তভাবে বিক্ষোভ চলছেই।

মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া সীমান্ত বরাবর এ বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ১১৬ ফিলিস্তিনী নিহত ও কয়েক হাজার আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে কুয়েতের উত্থাপিত খসড়া নিন্দা প্রস্তাবে রাশিয়া, চীন ও ফ্রান্স ছাড়াও আইভরি কোস্ট, কাজাখস্তান, বলিভিয়া, পেরু, সুইডেন ও ইকুয়েটোরিয়াল গিনি সমর্থন দিয়েছিল। যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড ও ইথিওপিয়া ভোটদানে বিরত ছিল। স্থায়ী ও অস্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে কেবল যুক্তরাষ্ট্রই প্রস্তাবটির বিরোধিতা করে।

১৫ সদস্যের মধ্যে অন্তত ৯টি দেশের সমর্থন পেলে এবং স্থায়ী ৫ সদস্য- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীনের কেউ ভেটো না দিলেই কেবল নিরাপত্তা পরিষদে কোনো প্রস্তাব অনুমোদিত হওয়া সম্ভব। 

গাজায় সংঘর্ষের জন্য হামাসকে দায়ী করে, ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে উল্লেখ করে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের তোলা দ্বিতীয় প্রস্তাবে আপত্তি জানায় নিরাপত্তা পরিষদের তিন সদস্য; বাকি ১১টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে বলে জানায় রয়টার্স। 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসরাইলের নিন্দা জানিয়ে তোলা অসংখ্য প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের ভিটোতে খারিজ হয়ে গেছে।

ইসরাইলে মার্কিন দূতাবাস জেরুসালেম থেকে তেল আবিবে স্থানান্তরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত পাল্টাতে ডিসেম্বরে মিসরের উত্থাপিত একটি খসড়া প্রস্তাবেও ভিটো দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। বাকি ১৪টি দেশ মিসরের প্রস্তাবে সমর্থন জানালেও স্থায়ী সদস্য দেশ হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোতেই প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যায়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ