রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় নিহত ফরিদের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায়

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়ার ডিসি রোড়ের এ এম মুছার নির্দেশে তার সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান ফয়সল প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে খুন করে বাকলিয়া ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা ফরিদুল ইসলামকে। ওই কিলিং মিশনে এম.এ. মুছা, তৌহিদুল আলম, রাসেল, ইকবাল হোসেন, মিঠু, নবী ও জানে আলম গুলি চালিয়ে উল্লাস করে। ফরিদ খুনের ১৪দিন অতিবাহিত হলেও খুনের আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অথচ পুলিশের বিরুদ্ধে রয়েছে খুনীদের সাথে সখ্যতার অভিযোগ। আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় নিহত ফরিদের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে।গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে নিহত ফরিদুল ইসলামের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম এ অভিযোগ করেন। এসময় তিনি ও মেয়ে ফারহানা আকতার জারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

ফরিদের স্ত্রী লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার স্বামী ফরিদুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন নিবেদিত প্রাণ। রাজনীতির পাশাপাশি তার বন্ধু এমদাদুল হক বাদশা, প্রসূন কান্তি নাগ ও শ্যামল পালিতের সঙ্গে ডিস ব্যবসায় জড়িত। এলাকায় আওয়ামী লীগ নামধারী   এ এ মুছার নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গত ২৭ এপ্রিল বেলা সাড়ে ৩টায় আমার স্বামী ও তার বন্ধুদের মালিকানাধীন কেসিটিএন ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্ক এর অধীনে ডিস ব্যবসা জবর দখলে যায়। মিয়ার বাপের মসজিদ এলাকায় ওই সন্ত্রাসীরা উপস্থিত হয়ে অস্ত্রের মহড়া দেয়ার সময় আমার স্বামী ফরিদুল ও তার বন্ধু এমদাদুল হক বাদশা, শ্যামল পালিত, প্রসূন নাগ খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজনসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে   এম.এ মুছাকে ডিসলাইন বিচ্ছিন্ন করার কারণ জিজ্ঞাসা করলে মুছার নির্দেশে আমার স্বামী ও অন্যান্যদের উপর গুলি বর্ষণ করে মুছার সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসী ফয়সাল তার হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে ফরিদুল ইসলামকে লক্ষ্য করে গুলি করলে তার বুকের ডানপাশে গুলি লাগে। এসময় সন্ত্রাসী মুরাদ ও মাসুদ লোহার রড় দিয়ে পিটিয়ে আমার স্বামীর শরীর থেতলে দেয় এবং তাদের হাতে থাকা বন্দুক দিয়ে ৮/১০ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে উল্লাস করতে থাকে। পরে এলাকাবাসী জড়ো হলে খুনীরা পালিয়ে যায়। এরপর গুলিবিদ্ধ আমার স্বামীকে স্থানীয়রা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আমি চকবাজার থানায় মো. মুছা, ফয়সাল, মুরাদ, মো. মাসুদ, তৌহিদুল আলম, রাসেল, মো: ইকবাল হোসেন মিঠু, নবী ও জানে আলমের নাম উল্লেখ করে আরো ১৫-১৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে মামলা করি। মামলা নম্বর -১৮(৪) ১৮।তিনি বলেন, প্রকাশ্যে মুছা বাহিনীর ক্যাডাররা রিভলবার দিয়ে আমার স্বামীকে খুন করলেও পুলিশ ঘটনার ১৪ দিন পরেও তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে হত্যাকারীদের নাম উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে মুছা, কিলার ফয়সলসহ খুনীদের নাম প্রকাশ পেয়েছে। তারপরও পুলিশের নিরব ভূমিকা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

ফরিদের স্ত্রী অভিযোগ করেন, খুনীরা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা ফরিদুল ইসলাম হত্যা মামলায় মুছাসহ বাকি খুনীদের নাম মামলা থেকে তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে। ফরিদুলের ব্যবসায়ীক পার্টনার ও বন্ধুদের মামলায় জড়িয়ে দেয়ার জন্য তাদের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে। অন্যথায় ফরিদের সন্তানদের অপহরণ করা হবে বলে আস্ফালন করছে। এতে পুরো পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতাই ভোগছে ফরিদের স্বজনরা।

ফরিদের মেয়ে ফারহানা আকতার জারা বলেন, বাবার হত্যাকারীদের পুলিশ এখনো কেন গ্রেফতার করেনি। আমার বাবা যুবলীগের রাজনীতি করতেন। এখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার পরও আমরা কি বিচার পাবো না?’ সাংবাদিক সম্মেলনে মামলার আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ