শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪
Online Edition

সংসদের ২৫ আসনের সীমানা পরিবর্তন

স্টাফ রিপোর্টার: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ৩০০টির মধ্যে ২৫টি আসনের সীমানা পাল্টানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে এর মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের একটি আসনও নেই।
ভোটের আগে প্রথমে ৬০ থেকে ৭০টি আসনের সীমানা পাল্টনোর ঘোষণা এসেছিল নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে। আর গত ১৪ মার্চ নির্বাচন কমিশন ৩৮টি আসনের খসড়া তালিকা প্রকাশ করে। এর মধ্যে ঢাকায় ছিল পাঁচটি আসন আর চট্টগ্রামের ছিল দু’টি আসন।
খসড়া তালিকা প্রকাশের পর দাবি ও আপত্তি নিষ্পত্তি করে ৩০ এপ্রিল চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের কথা জানায় কমিশন। আর দাবি-আপত্তি নিশ্চিত করে নির্ধারিত দিন গতকাল সোমবার মোট ২৫টি আসনে সীমানা পাল্টানোর কথা জানান নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ। আর এসব আসনের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের কোনো আসন নেই সেটা নিশ্চিত করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের চাপে সীমানা পুন:নির্ধধারণ করা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, চাপে যদি বলেন, উনারা যেটা বলেছেন, শুনানিতে যা বলেছেন, ২০১৩ সালের সীমানার পক্ষে। ২০১৩ সালের কিন্তু সীমানায় নেই। বেশিভাগ আসনকে আমরা অখন্ডিত করেছি।
সংসদ সদস্য বা মন্ত্রীদের কোনো প্রভাব মোকাবেলা করেছেন কিনা-এ প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ঢাকায় পরিবর্তনের চিন্তা করেছিলাম। একটা আসন পরিবর্তন করলে পাঁচ সাতটা পরিবর্তন হয়ে যায়। একটার পক্ষে-বিপক্ষে আমরা মতামত পেয়েছি। অন্য পাঁচটা আসনে কোনো ক্রমেই সমর্থন করে না তারা। সীমানা নির্ধারণ কিন্তু আসলে জনগণের জন্য, জনপ্রতিনিধিদের জন্য এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জন্য। তাদের বক্তব্য ছাড়া সীমানা নির্ধারণ যৌক্তিক নয়। শুনানিতে যে বক্তব্যএসেছে সেগুলো চুল চেরা বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
‘আপনি যদি বলেন আওয়ামী লীগের, হ্যাঁ, কিছু ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের যে দাবি ছিল, সে দাবিটা গৃহীত হয়েছে শুনানির মাধ্যমে। আবার কোনো দাবি গৃহীত হয় নাই। অন্যদের বক্তব্যকে প্রধান্য দেওয়া হয়েছে।’
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদ নির্বাচন হয়। এরপর ১৯৮৬ সালে তৃতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই বছর আগে ১৯৮৪ সালে প্রথম এবং ১৯৯১ সালে পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের আগে সংসদীয় সীমানা পরিবর্তন করা হয়।
তবে সীমানা সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন হয় ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের আগে। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আদমশুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যার আনুপাতিক হার মেনে আঞ্চলিক অখ-তা ও প্রশাসনিক সুবিধা বিবেচনায় নিয়ে জিআইএস পদ্ধতি অনুসরণ করে শতাধিক সংসদীয় আসনে পরিবর্তন আনা হয়।
আর দশম সংসদ নির্বাচনে আগের কমিশনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ৫০টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন আনে রকিবউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন। বর্তমান কমিশন গত ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেয়ার পর ভোট নিয়ে যেসব প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে, তার মধ্যে আছে সীমানা পুননির্ধারণের বিষয়টি।
যেসব আসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী: নীলফামারী-৩ ও ৪, রংপুর- ১, ও ৩, কুড়িগ্রাম- ৩ ও ৪, সিরাজগঞ্জ ১ ও ২, খুলনা ৩ ও ৪, জামালপুর ৪ ও ৫, নারায়ণগঞ্জ ৪ ও ৫, সিলেট ২ ও ৩, মৌলভীবাজার  ২ ও ৪, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৫ ও ৬, কুমিল্লা ৬, ৯ ও ১০ এবং নোয়াখালী ৪ ও ৫ আসনে নতুন এলাকা সংযোজন বা বিয়োজন হচ্ছে।
এর আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তাবিত সীমানা পুনঃনির্ধারণ সংক্রান্ত দাবি-আপত্তির বিষয়ে শুনানি শেষ করেছিল নির্বাচন কমিশন। গত ২১ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত শুনানি চলে। গতকাল সোমবার সেই দাবি-আপত্তি বিষয়ে নেয়া সিদ্ধান্ত গেজেট প্রকাশ হচ্ছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ