রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

দুদকের ফাঁদে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় উপ পরিচালক

রংপুর অফিস : দুদকের ফাঁদে  পা দিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় উপ পরিচালক সিরাজুল ইসলাম গত সোমবার রাতে ঘুষের টাকাসহ নিজ কার্যালয়ে হাতেনাতে গ্রেফতার হয়েছেন। এ ব্যাপারে দুদকের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে ঐ রাতেই রংপুর কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নম্বর- ২৪, তারিখ-৯-৪-২০১৮। সিরাজুল ইসলামের বাড়ি বগুড়া শহরের মালতি নগরে বলে জানা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার ডিডি সিরাজুল ইসলামকে রংপুরের চীফ জুডিশিয়াল মেজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে মাননীয় আদালত তাঁকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেন। তবে তাঁর দুর্নীতির বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য দুদকের পক্ষ থেকে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে রিমা-ে নেয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে ।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা আরো  গেছে- ইতিপূর্বে চাকরি জীবনে উপ পরিচালক সিরাজুল ইসলাম  যেখানে যে দায়িত্ব পালন করেছেন সেখানেই তিনি ঘুষ এবং দুর্নীতির স্বর্গ রাজ্য বানিয়েছেন। এই দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে বেশ কয়েকবার তিনি সাসপে- এবং ওএসডি হয়েছিলেন বলে তাঁর সহকমীিদের সূত্রে জানা গেছে। এমন এক পরীক্ষিত দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিকে কোন খুঁটির জোরে রংপুরের মত গুরুত্বপূর্ণ বিভাগীয় নগরীর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা নিয়ে জনমনে তীব্র অসন্তোষ এবং প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। 

প্রাপ্ত তথ্যে আরো জানা গেছে-দুর্নীর্তি দমন কমিশন দুদক রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নুরে আলমের স্ত্রী ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার বালিহারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শারমিন আক্তার গত কয়েক মাস ধরে রংপুরে বদলী হয়ে আসার জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় উপ পরিচালক সিরাজুল ইসলামের নিকট ধর্ণা দিচ্ছিলেন। এ ব্যাপারে তাঁর স্বামীও নিজের পরিচয় দিয়ে কয়েক দফা যোগাযোগ করেন। এক পর্যায়ে ডিডি সিরাজুল ইসলাম এক লাখ টাকার বিনিময়ে শারমিন আক্তারকে রংপুরে বদলী করে আনার ব্যাপারে সম্মতি প্রকাশ করেন। তবে দুদক কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে তাঁকে ২০ হাজার টাকা ডিসকাউন্ট দিয়ে প্রথমে ২০ হাজার টাকা অগ্রীম গ্রহণ করেন। ঘুষের অবশিষ্ট টাকা গত সোমবার দেয়ার কথা ঠিক হলে শারমিন আক্তারের স্বামী দুদকের সহকারী পরিচালক নুরে আলম বিষয়টি তাঁর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। এরপর দুদকের ঢাকা বিভাগীয় কার্যলয়ের পরিচালক নাসিম আনোয়ার এর নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী বিশেষ দল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় উপ পরিচালক কার্যালয়ের সামনে সোমবার বিকেল থেকে এ্যাম্বুস করে থাকেন। সন্ধায় ডিডি সিরাজুল ইসলাম শারমিন আক্তারের নিকট থেকে প্রতিশ্রুত অবশিষ্ট টাকা নেয়ার সময় দুদকের ঐ বিশেষ দলটি ঘুষের টাকাসহ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় উপ পরিচালক সিরাজুল ইসলামকে নিজ কার্যালয়ে হাতেনাতে গ্রেফতার করে। এ সময় দুদকের দলটি ঐ কার্যালয়ের বদলী সংক্রান্ত বিভিন্ন রেজিষ্টারসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট সিজার লিষ্ট করে নিয়ে গেছেন। ডিডি সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রতিটি বদলীর জন্য এক লাখ করে টাকা নেয়া সহ টাকা ছাড়া কোন কাজ না করার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। তাঁর এই ঘুষ বাণিজ্যের ব্যাপারে ঐ কার্যালয়ের একজন অফিস সহকারী মুখ্য সমন্বয়কারীর ভূমিকা পালন করে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ