রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

রামপালে গ্রাহকের কোটি টাকা হাতিয়ে চম্পট দিয়েছে চলন্তিকা যুব সোসাইটি

রামপাল (বাগেরহাট) সংবাদদাতা : বাগেরহাটের রামপালে চলন্তিকা যুব সোসাইটি নামে একটি এনজিও সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দিয়েছে। ভাড়ায় নেয়া অফিস ঘরে এখন তালা ঝুলছে । টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় চরম হতাশা আর অনিশ্চয়তায় দিন গুণছে কয়েক হাজার সাধারণ গ্রাহক। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তুষার কুমার পাল ও রামপাল থানার ওসি শেখ লুৎফর রহমানকে অবহিত করে সহায়তা কামনা করেছেন। সোমবার সকাল ১১টায় ভুক্তভোগী গ্রাহকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক ও উপজেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, রামপাল উপজেলায় ২০০৬ সাল থেকে উপজেলা সদর, ফয়লাহাট বাজার ও গিলাতলা বাজারে তিনটি শাখার মাধ্যমে চলন্তিকা যুব সোসাইটি নামে একটি এনজিও তাদের কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে তিনটি শাখায় ব্যাবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন  মোঃ নওশের আলী, মানসুর শেখ ও সন্তোস মিস্ত্রী। এ ছাড়া কিংকর শীল, আতাহার, ইউসুপ নামে সংস্থায় কর্মরত রয়েছে একাধিক সহকারী ব্যাবস্থাপক এবং মাঠকর্মী। অধিক লাভ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়ায় খুব দ্রুত সাধারণ লোকজন এ সংস্থায় ভিড়তে থাকে। ক্ষুদ্র ঋণ দেয়ার পাশাপশি ৩ বছর ও ৬ বছরের মেয়াদের ডিপিএস কার্যক্রম শুরু করে। গত রোববার থেকে ওই এনজিওকর্মীরা হঠাৎ করে অফিস বন্ধ করে দেয়। এতে সাধারণ মানুষের মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হয় । পরে তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে এনজিওটি তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। এতে অনেক গ্রাহক সংশ্লিষ্ট ম্যানেজারকে ঘেরাও করে তাদের পাওনা টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য চাপ দেয়। স্থানীয় কিছু নেতাদের মাধ্যমে বিষয়টিকে প্রাথমিকভাবে ধামাচাপা দিয়ে টাকা ফেরতের অঙ্গীকার করে ম্যানেজাররা গা ঢাকা দেয়। বেশ কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক জানান, এনজিওটি রামপাল থেকে আনুমানিক ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সংস্থার যে সমস্ত লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে তারা নিজের নামে বিভিন্ন এলাকায় জমি ক্রয়, বিভিন্ন ব্যাবসায় বিনিয়োগসহ রাতারাতি গুরুত্বপূর্ণ একাধিক প্রতিষ্ঠানের মালিক বলে গেছে। গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন, তাদের দেয়া অনেক টাকা কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজেদের এ্যাকাউন্টে জমা রেখেছে। চিহ্নিত এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যাবস্থা নিলে গ্রাহকরা কিছু টাকা ফেরত পেলেও পেতে পারে। এলাকায় মানুষের জনরোষে ইতোমধ্যে সংস্থার উপজেলার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা গাঁ ঢাকা দিয়েেেছ। অনেকে গোপনে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। উপজেলার ফয়লাহাট বাজারে চলন্তিকা এনজিও’র নামে সাইনবোর্ড দেয়া একটি জমি রয়েছে। প্রশাসন সম্পত্তিটি নিজেদের জিম্মায় নেয়ার ব্যবস্থা নিলে এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ সেখান থেকে ও কিছু টাকা ফেরত পেতে পারে। এ ব্যাপরে চলন্তিকা সোসাইটির চেয়ারম্যান খবিরুজ্জামান’র মুঠোফোন (মোবা-০১৯৬৪৫৭০৫৫৬ ) বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তুষার কুমার পাল’র সাথে কথা হলে তিনি জানান যে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকবৃন্দ স্মারক লিপি দিয়েছে, উপজেলা সমাজ সেবা অফিসারকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তাকে ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ