মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪
Online Edition

আমাদের স্বাধীনতা

আবুল খায়ের নাঈমুদ্দীন : আমরা স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক। এ কথাটি ভাবতে কি মজা! তা যেসব দেশের লোক স্বধীন একমাত্র তারাই বোঝে এ ব্যাপারটা। আমাদের স্বাধীনতা আমাদের গৌরব। পৃথিবীতে বহু দেশ আছে যারা তাদের পরিচয় দেয়ার মতো ঠিকানা খুঁজে পায় না। তারা ভিন্ন কোন দেশ ভ্রমণ করতে পারে না। তারা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না, ভালো কোন হাসপাতালে তাদের ভর্তি করে না। তারা থাকা খাওয়ার জন্য বিশুদ্ধ পানি পর্যন্ত পায় না। তাদের শিশুরা এলোমেলো জীবনে রাস্তার ধারে, নদীর পাড়ে কিংবা ডোবার পাশে বসবাস করে। তাদের জীবনে হাসি নেই। তাদের জীবনে কান্না আর অনিশ্চিত অনাকাক্সিক্ষত আতঙ্কিত জীবনের হাতছানি। রাতে ঘুমের পর আবার সবার সাথে দেখা হবে কিনা তারা জানে না। আল্ হামদুলিল্লাহ্ আমরা সে ক্ষেত্রে অনেক সুখী ও স্বাধীন নাগরিক।

আমাদের দেশে বিভিন্ন দিবস পালিত হয়। স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবস অন্যতম। প্রত্যেক বছর ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়। সব দিবসে বিচিত্র রকমের মেলা বসে। মেলায় দিবসের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আনন্দ ঘন আলোচনা সভা হয়। আমাদের শিশুরা মা-বাবার সাথে মেলায় মজা করতে যায়। সেখানে খেলাধূলার জন্য হরেক রকম সামগ্রী থাকে। মেলার স্থানকে বহু টাকা ব্যয়ে সুসজ্জিত করা হয়। এসব সম্ভব হয়েছে আমরা স্বাধীন বলেই।

আমাদের অন্তরের গভীরের এক রক্তাক্ত অনুভূতির নাম স্বাধীনতা। রক্তের বিনিময়ে কেনা এই স্বাধীনতা আমাদের অধিকার ও অহঙ্কার। এক সময় আমরাও পরাধীন ছিলাম। বৃটিশরা এ অঞ্চল শাসন করতো। তারা বিতাড়িত হয়ে যাওয়ার সময় পাশের দেশ টপকিয়ে আরেক শোষক পাকিস্তানের সাথে আমাদের ভূখ-কে শাসনের জন্য দিয়ে দিলো। পাকিস্তান আমাদেরকে হাতে পায়ে শারীরিক নির্যাতন না করলেও মানসিক নির্যাতনে আমাদেরকে বাকরূদ্ধ করে রাখে। অনেক সমস্যা আমাদেরকে চাপিয়ে দেয়। আমাদের মেধা বিকাশে, প্রতিভা প্রকাশে আমাদের উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত হতে থাকে। তারপর আমাদের দামাল ছেলেদের আর দমিয়ে রাখতে পারেনি। যুদ্ধের বাজনা বাজলো, ঝাঁপিয়ে পড়লো দলে দলে। দীর্ঘ নয় মাসের যুদ্ধে বহু বুদ্ধিজীবীসহ লাখ লাখ জনতাকে হারালাম। বহু যোদ্ধা আজো পঙ্গু হয়ে আছেন। মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের গৌরব।

তাঁদের শ্রমেই আজ আমরা স্বাধীনতা দিবস পালন করতে পারছি। আমরা আমাদের মতো করে চলতে পারছি।  স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। এখন আমাদের সবাইকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা রক্ষার জন্য আজীবন চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সবাই স্বাধীনতাকে ভালোবাসতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। এই চেতনা হোক এবারের স্বাধীনতা দিবসের অঙ্গীকার।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ