রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়ন হয় -শেখ হাসিনা

স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জিয়ার বহুদলীয় গণতন্ত্র মানে স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়া ও যুদ্ধাপরাধীদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া। এটা জনগণের গণতন্ত্র নয়, যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসনেরই নামান্তর মাত্র। যে কারণে বাংলাদেশ এগোতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ যে সম্মান পেয়েছিল, সেটা ভূলুণ্ঠিত হয়ে যায়।’
গতকাল বুধবার বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন প্রমুখ।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকের দিনে জাতির পিতার প্রতি আমরা সেই ওয়াদা দিচ্ছি, কথা দিলাম বাংলাদেশকে তার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে মধ্যম আয়ের দেশ, আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করবো। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করবো। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে বিশ্ব দরবারে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। সেই দেশ আমরা গঠন করবো, সেই ওয়াদা জাতির পিতার কাছে।’ এ সময় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে উন্নয়ন কাজ ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানান তিনি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনকের হত্যাকা-ের কথা স্মরণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ যখনই একটু সুখের মুখ দেখতে পায়, তখনই ১৫ আগস্ট ঘটে। এই হত্যাকা-ের মধ্য দিয়েই গণতন্ত্রের কবর রচনা হয়।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে প্রথমে মোশতাক তারপর জিয়া ক্ষমতায় আসে। মীরজাফরের বংশধর মোশতাকের মতো গাদ্দার এই মাটিতেই জন্মগ্রহণ করে। বাংলাদেশের মাটি এত উর্বর; জাতির পিতার নিজেরই কথা- এই উর্বর মাটি যেমন ফসলের জন্ম দেয়, তেমনি আগাছারও জন্ম দেয়। জাতির পিতা সবসময় এই কথা বলতেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ আবার অন্ধকারে হারিয়ে যায়। জাতির পিতার নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়। ৭ মার্চের ভাষণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ও ইতিহাস বিকৃতি করে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়গাঁথা মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হয়। বাংলাদেশের মানুষকে একটা বিভ্রান্তিতে ফেলা হয়। প্রচার করা হয় বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছে জিয়া।’
ওই বহুদলীয় গণতন্ত্রের আড়ালে কী ছিল তার ব্যাখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জিয়ার বহুদলীয় গণতন্ত্র মানে যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন করা, স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনীতির সুযোগ দেয়া, আর যুদ্ধাপরাধীদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া। এটা জনগণের গণতন্ত্র নয়। এটা যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসনেরই নামান্তর মাত্র।’
শেখ হাসিনা বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, ‘তারা জনগণের কল্যাণ করতে পারে না। ৪৬ বছরের ২৮ বছরই তারা ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু কিছু করতে পারেনি। কারণ, তারা দেশের জন্য কিছু করতে চায়নি। তাদের হৃদয়ে ছিল পেয়ারে পাকিস্তান। পাকিস্তানের গোলামি করতে পছন্দ করে বলেই দেশের উন্নয়ন করতে পারেনি।’
তিনি বলেন ‘আওয়ামী লীগ আসলেই দেশের মানুষের কল্যাণ হয়, উন্নয়ন হয়।’ বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ২৮ বছর আওয়ামী লীগ বিরোধী শক্তি বাংলাদেশে ক্ষমতায় থাকাকালে দেশে কেন দারিদ্র্যবিমোচন হয়নি, দেশ কেন উন্নত হয়নি, সে প্রশ্ন রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি সরকারের আমলে বিদ্যুৎ উৎপাদন, সাক্ষরতার হার যে কমে গিয়েছিল সেই প্রসঙ্গটিও তুলেন তিনি।
একমাত্র আওয়ামী লীগ আসলেই দেশের মানুষের কল্যাণ হয় দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে উন্নয়নের মডেল হিসেবেই বিশ্বসভায় আজ বাংলাদেশ মর্যাদা পেয়েছে।’
বঙ্গবন্ধু ১০ জানুয়ারি ফিরে এসে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, সেই নির্দেশনা পূরণ করাই বর্তমান আকাক্সক্ষা বলে জানান তার কন্যা।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ