রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

দুবলার চরে মৎস্য আহরণ মওসুমকে সামনে রেখে জেলেদের সমুদ্র যাত্রা

খুলনা অফিস : বঙ্গোপসাগরের দুবলার চরে মৎস্য আহরণ ও শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণ মওসুমকে সামনে রেখে জেলেরা সমুদ্র যাত্রা শুরু করেছেন। মওসুম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানিতে নেমে পড়েছেন তারা। মঙ্গলবার ভোর থেকে হাজার হাজার জেলে মংলার পশুর নদীর চিলা মোহনা থেকে সাগরের উদ্দেশে রওনা হন। ঝড়-জলোচ্ছ্বাস আর দস্যু হামলার শঙ্কা মাথায় নিয়েই পানিতে নেমেছেন তারা। এদিকে, মাছ ও শুঁটকি আহরণকে কেন্দ্র করে এবার দুই কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বনবিভাগ। প্রতি বছরই অক্টোবর মাস থেকে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন সুন্দরবনের দুবলার চর এলাকায় সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ ও শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণের মওসুম শুরু হয়। এবছরও তার ব্যতিক্রম নয়। ১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ আহরণ ও সুন্দরবনে সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। ২২ দিন পর ফের মাছ ধরতে নেমেছেন জেলেরা।

জানা গেছে, আগামী ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত মংলা, রামপাল, খুলনা, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশালসহ সুন্দরবন উপকূলের হাজারো জেলে মাছ আহরণ ও শুঁটকি তৈরির জন্য সাগরপাড়ে অস্থায়ী বসতি গড়ে তুলবেন। বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের জেলে ও মৎস্যজীবীরাও আসবেন এখানে। এরইমধ্যে উপকূলের হাজার হাজার জেলে ও মৎস্যজীবী দুবলার চর এলাকায় মাছ আহরণ ও শুঁটকি তৈরির কাজে যোগ  দিতে শুরু করেছেন। সোমবার ভোরেই মংলা, রামপাল, দাকোপ, শরণখোলা, পাইকগাছা, শ্যামনগরসহ সুন্দরবন সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার জেলে নৌকা, ট্রলার ও জাল নিয়ে লোকালয় ত্যাগ করেছে। 

জেলে ও মহাজন সূত্রে জানা গেছে, সমুদ্রে মৎস্য আহরণ ও শুঁটকি মওসুমকে ঘিরে এ বছর ১০-১৫ হাজার জেলে ও মৎস্য আহরণকারী জড়ো হয়েছেন সুন্দরবনের দুবলার চর, মেহেরআলীর চর, আলোরকোল, অফিসকিল্লা, মাঝেরকিল্লা, শেলার চর ও নারকেলবাড়িয়া চরে। সুন্দরবনের ভেতরে ছয়টি মৎস্য আহরণ, শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণ কেন্দ্র নিয়ে এই দুবলা জেলে পল্লি। এখানে জেলেরা নিজেদের থাকা, মাছ ধরার সরঞ্জাম রাখা ও শুঁটকি তৈরির জন্য অস্থায়ী ডিপো ঘর ও মাচা তৈরি করেন। জেলেরা সমুদ্র মোহনায় বিভিন্ন প্রকার জাল দিয়ে মাছ ধরে তা বাছাই করে শুঁটকি তৈরি করেন। পরে সেই শুঁটকি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এমনকি বিদেশেও বাজারজাত করা হয়।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মাহমুদুল হাসান জানান, দুবলার চরে অবস্থানরত জেলেরা সুন্দরবনের গাছ দিয়ে ঘর তৈরি বা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন না। গত শুঁটকি মওসুমেও সুন্দরবনের গাছ ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি।

বন বিভাগের খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক আমির হোসাইন চৌধুরী জানান, পাস-পারমিট ছাড়া জেলে ও মৎস্যজীবীরা সুন্দরবনে প্রবেশ করলে এবং জেলেদের কাছ থেকে সুন্দরবন বিভাগের কেউ টাকা আদায় করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

এ ছাড়া রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে  দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধে চলতি  মওসুমের শুরুতেই নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে বন বিভাগ।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ