রবিবার ১২ মে ২০২৪
Online Edition

নবাবগঞ্জে বায়োচার ব্যবহার করে উপজাতি কৃষকের ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলন

নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) সংবাদদাতা: দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক উপজাতি কৃষক দিনেশ টপ্য বায়োচার ব্যবহার করে ইরি-বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পর ফলন হয়েছে। উপজেলা দাউদপুর সিসিডিবি অফিসের বায়োচার প্রকল্পের অধীনে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নিয়ে আদিবাসী ওই কৃষক এ নতুন প্রযুক্তি প্রয়োগ করে অধিক ফলন হওয়ায় এলাকার কৃষকেরা বায়োচার ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
জানা গেছে, দিনেশ টপ্য (৩০) স্ত্রী কবিতা কেরকেটা সে নবাবগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের কান্দ্রুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। কৃষি ফসল উৎপাদন করেই জীবিকা চলে তার। দিনেশ টপ্যর পরিবারে সবাই সবার কাজে সাহায্য সহযোগিতা করে। এ বছর তারা ইরি ধান আবাদ করে। সিসিডিবি বায়োচার প্রজেক্ট এলাকার কৃষকদের নিয়ে একটা সভার আয়োজন করা হয়। সভার উদ্দেশ্য ছিল নিজের বাড়িতে অর্গানিক বায়োচার উৎপাদন করে কিভাবে কম খরচে ভালো ফসল উৎপাদন করা যায় তা কৃষকরা জানতে পারবে। সভায় অংশগ্রহণকারী দিনেশ টপ্য সিসিডিবির মাধ্যমে ‘আখা’ দলের সদস্য হন। সেখান থেকে তিনি ৩ দিনের ট্রেনিং নেন। তারপর নিজ বাড়িতে আখড়া স্থাপন করার পর সে প্রতিনিয়ত বায়োচার উৎপাদন করে। সিসিডিবির পরামর্শ অনুযায়ী সে বায়োচার গুড়ো করে জমিতে প্রয়োগ করে ধান রোপন করে। এতে তার ধানে রোগ বালাই অনেক কম এবং সেখানে তার বাম্পার ফলন হয়। এতে দিনেশ টপ্য খুবই খুশি। দিনেশ টপ্য বলেন, অতীতে এ রকম ধান সে ফলাতে পারেনি। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে তার সব আবাদি জমিতে বায়োচার ব্যবহার করে ফসল চাষাবাদ করবে।
স্বল্প খরচে বায়োচার ব্যবহার করে অধিক ফসল ঘরে তোলার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। বায়োচার প্রয়োগের ফলে পার বিঘায় ব্রি-২৮ ধান ২৬ মণ ফলানো সম্ভব এবং শতকে ৩০ কেজি ধান উৎপাদন করা যাবে। একই জমিতে বায়োচার ছাড়া ধান হয় পার বিঘায় ১৮ মণ থেকে ১৯ মণ ও পার শতকে ২২ কেজি উৎপাদিত হয়। পরিশেষে দিনেশ টপ্য তার সমস্ত জমিতে বায়োচার ব্যবহার করে আবাদ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ওই কার্য দিবসে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এলাকার কৃষক-কৃষাণী ও মিডিয়াকর্মী এম রুহুল আমিন প্রধান।
তারা মন্তব্য করেন বায়োচার উৎপাদন ও জমিতে প্রয়োগ করে ফসল ফালানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু রেজা মোঃ আসাদুজ্জামান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জমিতে বায়োচার ব্যবহার করা হলে সেচ কম লাগে ও ফসল আগাছা মুক্ত থাকে। বায়োচার ব্যবহার বৃদ্ধি পেলে নিরাপদ কৃষি ফসল উৎপাদন করতে পারবে কৃষক।
সিসিডিবির বায়োচার প্রকল্পের মার্কেট ফ্যাসিলিটেটর জনাব মোঃ গোলাম আজম জানান, বায়োচার ব্যবহার দিনদিন উৎপাদনমুখী কৃষকদের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে। এদিকে কিচেন কাউন্সিলর মিঃ স্টিফান হেমরম, সিসিডিবি, দাউদপুর তিনি জানান, আদিবাসী কৃষকেরা এ প্রযুক্তির আওতায় এসে কৃষি ফসল উৎপাদনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ