রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

দাগনভূঞা পশ্চিম রামচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ

ফেনী : দাগনভূঞা পশ্চিম রামচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবন

ফেনী সংবাদদাতা : পলেস্তারা খসে পড়েছে ছাদের, ছাদ ছুইয়ে পড়ে বৃষ্টির পানি; বিমের রড় বেরিয়ে একাকার। এরপরও ওই ছাদের নিচে ঝুঁকি নিয়ে শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নেয় কোমলমতি দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী। এ চিত্র ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম রামচন্দ্রপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ১৯৯৪ সালে এ বিদ্যালয়ের একতলা ভবনটি নির্মিত হয়। প্রায় এক দশক আগেই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে স্কুল ভবনটি। স্থানীয়রা জানান, সম্ভবত নিম্নমানের কাজের ফলে অল্প সময়েই ভবনটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বহুবার সংশ্লিষ্ট বিভাগে চেষ্টা তদবিরের পর কূল না পেয়ে বাধ্য হয়ে জরাজীর্ণ ভবন ও পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষের অভাবে সম্প্রতি উপজেলা পরিষদ ও স্থানীয়দের সহায়তায় নির্মিত টিন সেডে চলছে শ্রেণি কার্যক্রম।
জানা গেছে, ১৯৭২ সালের শুরুর দিকে রাজাপুর ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান রেজ্জাকুল হায়দার (রুদা মিয়া), আবদুস সোবহান, মকবুল আহমদ ও তোফায়েল আহমদসহ এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন। ওই বছরই স্থানীয়দের দানকৃত সাড়ে ৫৭ শতক ভূমির ওপর এলাকাবাসীর অর্থে পশ্চিম রামচন্দ্রপুর কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৯৭৮ সালে রেজিস্টার্ড প্রাথমিক ও ২০১৩ সালে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি লাভ করে। এর আগে ১৯৯৪ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে বিদ্যালয়ের একতলা ভবনটি নির্মিত হয়।
পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্র বলেন, আমরা সব সময় আতংকে থাকি, বিশেষ করে ঝড়-বৃষ্টির সময়; কখন যে আমাদের মাথায় ছাদ ভেঙ্গে পড়ে। বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারা জানান, পলেস্তারা খসে পড়ায় ভয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা অনেকেই তাদের ছেলে মেয়েদের অন্য স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন। বর্তমানে ১ শ’ ৭০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। অনেক কষ্টে তিনটি কক্ষে শিক্ষার্থীদের ক্লাশ নিতে হয়। ২শ’ বর্গফুটের একেকটি কক্ষে ৪০/৪৫ জন ছাত্র/ছাত্রী ক্লাশ করেন। নতুন টিনসেডে ব্লাক বোর্ড ও আসবাবপত্রের অভাবে নিয়মিত ক্লাশ নেয়া সম্ভব হয়না।
প্রধান শিক্ষক ইউসুফ আলী জানান, একবার বৃষ্টি হলে আর দীর্ঘদিন ক্লাশ নেয়া মুশকিল হয়ে পড়ে। ছাদ ছুইয়ে পানি পড়ে, শিক্ষার্থীদের বই-খাতা ভিজে যায়। আসবাবপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রাদি সংরক্ষণ করাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তাছাড়া সার্বক্ষণিক একটি দূর্ঘটনার ঝুঁকিতো রয়েছেই, এটি নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য গিয়াস উদ্দিন বিএ বলেন, আমি সব সময় এ বিষয় নিয়ে দুর্ভাবনার মধ্যে থাকি। তাছাড়া নানা ভোগান্তিতো রয়েছেই। আমি ভবন নির্মাণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন বলেন, প্রত্যাশা করি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এ বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ