বুধবার ০১ মে ২০২৪
Online Edition

খুলনার সড়কে আতঙ্কের আরেক নাম মাহিন্দ্রা

খুলনা অফিস : খুলনা মহানগরীর যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ অনিয়ন্ত্রিত যান মাহিন্দ্রা। সড়কে ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে ওঠছে দ্রুতগতির এই বাহনটি। শহরের মধ্যে চলাচল শুরুর পর থেকেই এই যানবাহনটি রয়েছে বেপরোয়া। বিকট শব্দে চালানো এ যানটি মুহূর্তের মধ্যে হয়ে ওঠে প্রাণঘাতী।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পুলিশ ও প্রভাবশালী নেতাদের সাথে এই মাহিন্দ্রা চালক সংগঠনের যোগসাজশ রয়েছে। আর তাই সবকিছু দেখেও নীরবতা পালন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এসব গাড়ির পেছনে কেএমপি পুলিশের কন্ট্রোল রুমের মোবাইল নম্বর লেখা থাকে। যেন পুলিশই এদের নিয়ন্ত্রণ করছে। আর সবচেয়ে বেশি আইন ভঙ্গ করে সড়কে এটি চলাচল করতে দেখা যায়। মাহিন্দ্রা চালকেদের বেশিরভাগই আইনের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। তাদের মধ্যে অনেকে নেশাগ্রস্ত। বেপরোয়া চলাচলে সবকিছু ছাড়িয়ে সবার আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতা তো আছেই।
নিরাপদ সড়ক চাই নিসচা এর কেন্দ্রীয় সদস্য ও খুলনা সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বিপ্লব জানান, অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ মাহিন্দ্রা। চালকদের লাইসেন্স আছে কিনা এই ব্যাপারে বিশেষ নজর দিতে হবে। এছাড়া বিআরটিএর মাধ্যমে চালকদের নির্দিষ্ট তালিকা করে তাদেরকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা প্রয়োজন।
শহরের মধ্যে কম গতির ছোট যানবাহনের পাশাপাশি দ্রুতগতির এই মাহিন্দ্রা যানবাহনটির কারণেই মূলত দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। খুলনা মহানগরীর খানজাহান আলী রোড, বয়রা এলাকা, খুলনা-যশোর রোড, জোড়াগেট, দৌলতপুর এলাকায় প্রায়ই বেপরোয়াভাবে চলা মাহিন্দ্রার কারণে হতাহতের ঘটনা ঘটছে।
অভিযোগ রয়েছে, উঠতি বয়সী যুবকরা কোন ধরনের প্রশিক্ষণ ছাড়াই বেপরোয়া গতিতে মাহিন্দ্রা চালাতে থাকে। তাদের আচরণও অনেকটা বেপরোয়া। এছাড়া অতিরিক্ত যাত্রীবহন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে হাজারো অভিযোগ।
ভুক্তভোগী যাত্রী সানোয়ার হোসেন বলেন, ওদের আচরণ অনেক বাজে। জোড়াগেট থেকে ফেরিঘাট যেখানে ভাড়া হয় মাত্র ৫ টাকা, সেখানে ওরা নেয় ১০ টাকা। বারবার ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করলেও ওরা অপরাধ থেকে ফিরে আসছেনা।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, চালকদের অধিকাংশ মাদকাসক্ত। তারা ইয়াবা গাঁজা ইত্যাদি খেয়ে রাস্তায় গাড়ি চালায়। ফলে সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনা বেশি ঘটে। যেখানে সেখানে পার্কিং করে কোনো তোয়াক্কা করে না। ওরা এতটাই মারমুখী থাকে যে গায়ে হাত তুলতেও দিধা করে না। এ কারণে ইজিবাইক চালকদের সাথে তাদের কয়েকবার হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। কিছু নেতা মাহিন্দ্রা সংগঠনের নামে লুটে নিচ্ছে বিপুল পরিমাণ টাকা।
দৌলতপুর বেবিট্যাক্সি ড্রাইভার্স ইউনিয়নের সভাপতি শেখ নজরুল ইসলাম জানান, মাহিন্দ্রার সংখ্যা ৭০০/৮০০। চালক ৩৪০০। যারা সমিতির সদস্য। তিনি বলেন, আমরা সদস্য হতে ৫০ টাকা করে নেই। এছাড়া প্রতিমাসে ৩০০ টাকা করে নেই। যা চালকদের বিভিন্ন সমস্যা ও উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা হয়। মারা গেলে ৫০০০ টাকা অনুদান দেওয়া হয়।
চালকরা জানান, দৌলতপুর বেবিট্যাক্সি ড্রাইভার্স ইউনিয়নে সদস্য হওয়া বাধ্যতামূলক। সদস্য হতে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা হারে নেওয়া হয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ