কবিতা
ইচ্ছে করে
মুস্তফা মানিক
আমার মনে ইচ্ছে জাগে নদীর মতন হই
হাওয়ার তালে ছলাৎ স্বরে করি যে হইচই
নদীর দুপাশ ফুলে ভরা গন্ধে কাড়ে মন
আমার হতে ইচ্ছা করে ঝর্ণা পাহাড় বন।
জুড়ায় হৃদয় ভোরের সকাল মিষ্টি-মায়ার আলো
হালকা বাতাস প্রশান্তি দেয় দূর করে সব কালো
কিচিরমিচির মধুর সুরে গায় যে পাখি বনে
দোয়েল কোয়েল ময়না হবার ইচ্ছে আমার মনে।
দূরের পাহাড় নয়নাভিরাম নীল সবুজের হাসি
ঝরণা পানি ছড়ায় যেন মুক্তো রাশিরাশি
নীলাভ আকাশ সবুজ বনে যেমন করে মিলে
এমন উদার মানুষ হতে ইচ্ছে আমার দিলে।
ফুলের বাগে ফুলের পাখি ঘুরে শাখে শাখে
মৌমাছি আর প্রজাপতি দু হাত নেড়ে ডাকে
ফুলের দেশে পাখির মেলা দেখতে দারুণ লাগে
গোলাপ জবা বেলি হতে ইচ্ছে মনে জাগে।
মুঠো আলো বিলায় তারা সন্ধ্যা যখন নামে
পরীর কাছে চিঠি লেখে খোকা হলুদ খামে
গল্পে মাতে খোকন সোনা চাঁদ তারাদের সনে
পরীর কোলে সওয়ার হতে ইচ্ছে ভীষণ মনে।
দুষ্টু বিড়াল ছানা
শেখ মোঃ মাহবুবুর রহমান
দুষ্টু বিড়াল ছানা
দেখতে পেলে হানা!
দিতে হবে খানা।
মাছের টুকরা পেলে
নিমিষেই খেয়েফেলে
তার নিকটে এলে
লাফিয়ে শুধুই খেলে।
নবান্নের ডাক
শাহজাহান মোহাম্মদ
ধানের শীষে শিশির হাসে
দূর্বাঘাসের সুখ
হেমন্ত আজ ঘরে ঘরে
গেলো দুখির দুখ।
সরষে ক্ষেতে হলদে চাদর
জড়িয়ে শালিক পাখি
মৌ মৌ মৌ পাকা ধানের
গন্ধ গায়ে মাখি।
পিঠা-পুলি ক্ষির ও পায়েশ
রসে ডোবা হাঁড়ি
নবান্নেরই ডাক পড়েছে
যাবো গ্রামের বাড়ি।
গানের পাখি
আসাদুজ্জামান আসাদ
ঘুমিও না শিশু-কিশোর
রাত্রি হলো ভোর,
গানের পাখি জাগার আগে
খোলো ঘরের দোর।
ঘুমাও যদি সারা বেলা
জেগে উঠবে কারা?
ঘুমায় যারা সকাল হলে
অলস খুবই তারা।
গানের পাখির আগে আগে
তোমরা জেগে ওঠো
বই-পুস্তক হাতে নিয়ে
স্কুলে সব ছুটো।
ছোট্ট বাবু
রেজা কারিম
ছোট্ট বাবু দরুদ পড়ে
মায়ের সাথে বসে
নবির নামে সালাম পাঠায়
ঠোঁটের মধুরসে।
অফিস থেকে বাবা এলে
শোনায় তাকে দোয়া
বাবার মনে শান্তি মেলে
যেন হৃদয় ছোঁয়া।
দাদীর সাথে জিকির করে
তসবি ছড়া নিয়ে
রবের ধ্যানে মগ্ন থাকে
সকল আবেগ দিয়ে।
দাদার সাথে মসজিদে যায়
করতে আদায় ফরজ
দেখে সবাই খুব খুশি হয়
আহারে কী গরজ!
কেশবতী খুকু
নার্গিস আক্তার
কেশবতী খুকু আমার
লম্বা মাথার চুল,
হেলে দুলে নাচে খুকু
নাচে খুকুর দুল ।
ঘুম থেকে উঠে খুকু
‘ব্যাগ কিনে দাও’
লাল ব্যাগ ঘাড়ে নিয়ে
‘টিফিন সঙ্গে দাও ।’
স্কুল থেকে ফিরে খুকু
খেলনা নিয়ে বসে
খেলাধুলা শেষ করে সে
বই নিয়ে বসে।
বাংলা আমার হৃদয় জুড়ে
নূর-ই-ইলাহী
সোনাফলা গাঁয়ের স্মৃতি নিতুই আমায় ডাকে,
শিশির কণা ঝিলিমিলি আলের বাঁকে বাঁকে।
শিউলি ছাতিম গগন শিরীষ হিরকদ্যুতি হেসে,
শীতল বাতাস শান্তি দেয় নবান্নেরই এই দেশে।
ধানের ক্ষেত সোনার প্রলেপ মাখে ধীরে ধীরে,
রাত্রি হলে চাঁদের আলো চুইয়ে চুইয়ে পড়ে।
সোনাবরণ ধানে রোদের রঙে ছেয়ে গেছে গাঁ,
শিশির-স্নানে ধুয়ে নিবো আমি আমার পা।
নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে সারা উঠোন ভাসে,
হালকা শীত মিষ্টি হাওয়ায় ভোরের সূর্য হাসে।
তৃণের গায়ে হাট বসে কতো ফুলের সমাহার!
পথের ধারে বুনোফুলের রূপ মন কাড়ে সবার।
এমন রূপের মধুর ছবি নেইকো কোথাও আর
বাংলা আমার হৃদয় জুড়ে আমি যে বাংলার।
দেখাও সুপথ
এম আলমগীর হোসেন
আঁধার রাতে বন্ধুর পথে
পাই না খুজে দিশা,
দেখাও সুপথ কাটুক বিপদ
ঘুচাও অমানিশা।
জোগাও শক্তি দাওগো ভক্তি
তোমার গুণগানে,
শোকর থেকে বিমুখ না হই
তোমার সকল দানে।
সিরাতুল মুস্তাকিমের পথ
তোমার কাছে চাহি,
নিও না সে পথে আমায়
যে পথে গোমরাহী।
ফুলটা হাসে
জাকিরুল চৌধুরী
ফুলটা হাসে মনের রঙে
প্রজাপতির মতো,
গাছটা হাসে মনের ইচ্ছে
মন ভুলানো যতো।
পাতা হাসে শিশির মতো
ভ্রমর ফুলের মতো,
পাপড়ি হাসে দুয়ার খুলে
ভালোবাসা যতো।