সোমবার ০২ ডিসেম্বর ২০২৪
Online Edition

কবিতা

চাওয়া-পাওয়া

আহসান হাবিব বুলবুল

চল্লিশের পর একটা সাদা চিঠি আসে

জানান দেয় প্রস্তুতির।

বেলা দ্রুত গড়িয়ে যায়, সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই কারো;

নরসুন্দরকে বলি, দু-একটা তো, গোড়া থেকে ছেঁটে

                                              দাও।

মিছেই চাওয়া!

চাওয়া-পাওয়া একদিন হিসাবের খাতায়

বড়দাগে ধরা পড়ে। পিছনে ফিরে দেখা,

আর কতটা পথ আছে বাকি।

তির তির করে কাঁপে আখির পাতা প্রশ্নবানে।

কিছুই তো করা হলো না

মিটিল না আশা,

তবে কি বৃথাই পথচলা!

না। বীজের অঙ্কুরোদগম চেয়ে দেখো-

দু'টি পাতার একটি কুঁড়ি

ও একদিন আকাশ ছুঁবে

তোমাকে ধারণ করে।।

 

অস্থির প্রহেলিকা

শিমুল হোসেন 

 

নিস্তব্ধ বিষণ্নতা গেঁথে রেখেছে চেতনে

শূন্যের নিঃশব্দে বাজে গভীর অশ্রুর ধ্বনি।  

সমুদ্রের জলে লীন কালো অনিকেত স্বপ্ন,  

অন্তহীন সমাধিতে নিঃশেষ অনুরণন। 

 

অপ্রকাশিত ব্যথা ছুঁয়ে যায় নীল অন্তিম,  

কল্পনার কারাগারে মগ্ন আবেগের নকশা, 

ভেঙে পড়ে শব্দরাশি খ-িত আবর্জনায়,  

প্রাচীন ছায়ারা খুঁজে ফেরে পুরাকালের স্মৃতি।  

 

আশ্রয়ে শৈবালের আড়ালে রুদ্ধ নিশ্বাসে,  

ধোঁয়াশা বাস্তবতায় আঁকে ম্লান আত্মঘাত।  

 

কীর্তিনাশা নদীটি

নাঈমুর রহমান

 

কীর্তিনাশা নদীটি- তারে আমি চিনি,

চিনি আমি আগন্তুকের নাম।

চোখ জুড়ে তাঁর বনলতার কালিমা

কীর্তিনাশার ঢেউয়ে বহে কাজলরেখা।

 

সন্ধ্যা এলে আবার ফিরে শিরীষ পাতার ফাঁকে

হলুদ রঙের ডানা মেলে 

কীর্তিনাশার বিস্তীর্ণ বুক জুড়ে।

আমি চিনি তাই ,

চিনি আমি আগন্তুকের এলোচুলের হিজল-কমল।

 

কীর্তিনাশা গাহে, বহে অপরাহ্ণে সমুষ্ণ বাতাস

খুব কাছাকাছি কলমির ফুলের দলে

সে আগন্তুক শাশ্বত নদীর মেয়েটি।

চিনি আমি কীর্তিনাশা,

চিনি আমি আগন্তুকের নাম।

 

জন্মালাপ

আফসার নিজাম

 

বছর পেরিয়ে যাওয়ার মতো 

পালটে ফেলি গতিপথ

কোথাও যাবার কথা ছিলো

বেমালুম ভুলে বসে আছি

অকৃতজ্ঞ মানুষের মতো

 

অথচ জন্মদিন ফিরে আসলেই মনে পড়ে

মিথ্যেবাদি রাখালের মতো 

অবলীলায় পেরিয়ে যাই সত্যের সীমানা

ক্ষমা অযোগ্য অপরাধ করেও 

সেজদায় লুটিয়ে পড়ে

তওবায়ে নসুহা করি না

 

ফিরিয়ে দেয়ই না প্রতিবেশির হক

আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে 

বহুতল ভবনের রুফটফে বসে গান ধরি 

‘কতো দিন রাহি না চানের খোঁজ’।

 

বহুদিন বুক ভরে নিঃশ্বাস নিয়েছি

পেরিয়ে এসেছি জন্মের বহু বসন্ত

মাকড়াসার জালের মতো 

মানুষ ভালোবাসা জাল বিছিয়ে ধরে রেখেছে সম্পর্ক

আমি দুধের সরের মতো উপরে পাষাণ স্তর হয়ে

ভেতরে টলটলে প্রেম রেখেছি সদ্যজাত শিশুর মতো

ক্ষমা করো টিএসসির প্রেমিক প্রেমিকার মতো

আমি ভালোবাসাকে উদলা করে দিতে পারি না

আমি ঘুড়ি ওড়ানো বিকেলের মতো 

আমার প্রেম আকাশে উড়িয়ে দিতে পারি না।

 

জন্মদিনে তাই বলতে পারি না আমি আকাশ ছোঁব

আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে করার চেষ্টা করি

আমি ফিরে যাবো- আমার যেখানে যাবার কথা ছিলো

বিশ্বাস করো আমি জন্মের সময় ওয়াদা করে এসেছি

আমি ফিরে যাবো এবং তুমিও ফিরে যাবে...

 

হে বন্ধু আমার 

বিজন বেপারী 

 

আমি অপেক্ষায় ছিলাম এবং আছি...

কিন্তু, কার অপেক্ষায়?

জানি না  ঠিক, তেমনি 

সেও জানে কিনা, জানি না?

 

তবুও অপেক্ষায় আছি 

হয়তো একদিন আমি পৌঁছে যাবো 

দিগন্তের শেষ সীমানায় 

তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে।

তোমাকে খুঁজে পেলে, তুমি আমাকে না বলো না ।

এতোটুকুই আমার চাওয়া পাওয়া।

 

জীবন বাজি রেখে বহুদূর থেকে 

এই মহা বন্ধুর কন্টকাকীর্ণ পথে এসেছি 

শুধু তোমাকে...

আমার একটি কথা বলবো বলে...

হে বন্ধু আমার!

 

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ

string(11) "18.97.9.171"