প্রিমিয়ার ফুটবল লিগ মাঠে গড়াচ্ছে আজ
স্পোর্টস রিপোর্টার: পেশাদার ফুটবল লিগের ১৬তম আসর শুরু হতে যাচ্ছে আজ শুক্রবার। পেশাদার ফুটবলের যুগে দুটি বিষয় চোখে পড়ার মতো। প্রিমিয়ার লিগে বসুন্ধরা কিংস আসার আগে রাজত্ব ছিল আবাহনী লিমিটেডের। সর্বোচ্চ ৬ বারের চ্যাম্পিয়ন ছিল আকাশী-নীল জার্সিধারিরা। বসুন্ধরা কিংসের আগমনের পর সব দৃষ্টি তাদের দিকে। টানা ৫বার চ্যাম্পিয়ন!এবারও আলাদা দৃষ্টি বসুন্ধরার দিকে। তাই প্রশ্ন এসেই যায়- শক্তির দিক দিয়ে এগিয়ে থাকা দলটিকে এবার চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে দুই ঐতিহ্যবাহী আবাহনী-মোহামেডান? দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতে ক্লাবগুলো দলবদল করতে পারবে কিনা সেটা নিয়ে সংশয় ছিল শুরুতে। তবে আশার কথা ১০টি দল নিবন্ধন শেষ করেছে। অংশ নেয়নি শেখ জামাল ও শেখ রাসেল। এবার দুই নতুন ইয়ংমেন্স ফকিরেরপুল ও ঢাকা ওয়ান্ডারার্স প্রথমবারের মতো লিগে খেলতে যাচ্ছে। তবে লিগ মাঠে গড়ানোর আগে পরিষ্কারভাবে তিনটি দল কিছুটা হলেও পিছিয়ে রয়েছে। আবাহনী লিমিটেডে জাতীয় দলের খেলোয়াড় থাকলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতে বিদেশি খেলোয়াড় নিতে পারেনি। ঢাকা ওয়ান্ডারার্সেও নেই কোনও বিদেশি। চট্টগ্রাম আবাহনী একজন নিলেও খেলতে যাচ্ছে অনেকটা জোড়াতালি দিয়ে।৫ ভেন্যুর মধ্যে গাজীপুরের বরকত স্টেডিয়ামে প্রথমবারের মতো খেলা হতে যাচ্ছে। প্রথম দিনই তিন ভেন্যুতে তিন ম্যাচ। ১০ দলের লড়াইটা কেমন হয়, এখন সেটাই দেখার।
বসুন্ধরা কিংসের রোমানিয়ান কোচ ভ্যালেরি তিতা অবশ্য আশবাদী। মৌসুমের প্রথম ট্রফি চ্যালেঞ্জ কাপের শিরোপা জিতে ফুরফুরে মেজাজে তারা। যদিও এবার তাদের বড় তারকা রবিনহো নেই। শক্তি কিছুটা কমেছে। তারপরও জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে শিরোপা লড়াইয়ে সবার আগে। আত্মবিশ্বাসী তিতা বলেছেন, ‘আমরা শিরোপার জন্য লড়বো। একজন কোচ হিসেবে আমার কাছে এর কোনও বিকল্প নেই। দলের সবাই প্রস্তুত।’
আবাহনী গতবার তৃতীয় হয়েছিল।বিদেশি ছাড়া স্থানীয়দের নিয়ে কোচ মারুফুল লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছেন। জানিয়েছেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি ভালো। দলে স্থানীয় যারা আছে, তারা লড়াই করতে পারবে। আমি মনে করি আমাদের চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য লড়াই করার মতো রসদ আছে। বাকিটা মাঠে দেখা যাবে।’মোহামেডানে গতবার রানার্সআপ হয়ে এবার শিরোপায় চোখ রেখেছে। কোচ আলফাজ আহমেদ আগেই বলেছেন, ‘শিরোপার জন্য লড়বো আমরা। দিয়াবাতে-মুজাফফরভদের নিয়ে লড়াই করবো।’ ঐতিহ্যবাহীদের মতো অন্য দলগুলোও চোখ কম রাঙাচ্ছে না। যেমন ফর্টিস এফসিও বেশ আশাবাদী। তাদের ম্যানেজার রাশেদুল ইসলাম তো বলেই দিয়েছেন, ‘বসুন্ধরা ও মোহামেডানের মধ্যে চ্যালেঞ্জ কাপের ম্যাচ দেখে মনে হয়েছে ফর্টিস লিগে শিরোপার জন্য লড়াই করতে পারবে। এক থেকে তিনের মধ্যে থাকতে পারলে ভালো লাগবে।’ পুরোনো ঢাকার রহমতগঞ্জও আশা ছাড়ছে না।
কামাল বাবুর অধীনে আবাহনী লিমিটেড থেকে নাবীব নেওয়াজ জীবন, শহীদুল আলম সোহেলরা যোগ দিয়ে দলের শক্তি বৃদ্ধি করেছেন। তাই দলটি ভালো অবস্থানে থাকলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।পুলিশ এফসি দুই প্যারাগুয়ের খেলোয়াড় নিয়ে এবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ার আভাস দিয়ে রেখেছে। চট্টগ্রাম আবাহনী কোনো মতে দল গড়ে খেলার অপেক্ষায়। দুই নবাগত দলের অধিনায়করাও চাইছেন টিকে থাকতে। ইয়ংমেন্সের অধিনায়ক রফিকুল ইসলাম যেমন বলেছেন, ‘আমরা মধ্যম মানের দল। লিগ শেষে সম্মানজনক অবস্থায় থাকতে পারলে ভালো লাগবে।’
অপর দিকে, ওয়ান্ডারার্স বিদেশি ছাড়া খেলছে। তাদের অধিনায়ক আমির হাকিম বাপ্পি বলেছেন, ‘টাকা পয়সা চিন্তা করলে আমরা অনেক পিছিয়ে থাকবো। টাকা পয়সা ছাড়া আপাতত মাঠে ভালো করার লক্ষ্য আমাদের।’লিগ শুরুর আগে দলগুলো কথার লড়াইয়ে নিজেদের এগিয়ে রাখবে, সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু লিগ মাঠে গড়ালেই বোঝা যাবে বসুন্ধরার ডাবল নাকি মোহামেডান-আবাহনী-ফর্টিস কিংবা পুলিশ সহ অন্যরা শিরোপায় ভাগ বসাবে!