ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯ শতাধিক নবীন শিক্ষার্থীকে বরণ করলো ছাত্রশিবির
সংগ্রাম অনলাইন: বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখার আয়োজনে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নিয়ে নবীনবরণ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১০টায় কুষ্টিয়া জেলার শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে প্রোগ্রামটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কুষ্টিয়ায় পুলিশের গুলিতে শহীদ আব্দুল্লাহ আল মোস্তাকিমের পিতা লোকমান হোসাইন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে নয়শতাধিক নবীন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন উপহার সামগ্রী দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়েছে।
নবীন বরণে ইবি শাখার সভাপতি এইচ এম আবু মুসার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম।
এছাড়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আল-হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, সাদ্দাম হোসেন হলের প্রভোস্ট ও বায়েটোকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কুষ্টিয়া-যশোর অঞ্চল টিম সদস্য ও কুষ্টিয়া জেলার সাবেক আমির অধ্যক্ষ এ কে এম আলী মহসিন, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক মোহাম্মদ সোহাইল, কুষ্টিয়া শহর শাখার সভাপতি সেলিম রেজা অতিথি ছিলেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ইবি শাখার সেক্রেটারি মাহমুদুল হাসানের সঞ্চালনায় নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, শিবির মেধাবীদের সংগঠন। যে শিবির করবে সৎ, দক্ষ, যোগ্য হবে। ছাত্রশিবির রাজনীতি চর্চা করে না। ছাত্রদের সাথে নিয়ে কাজ করতে চায়। আমরা জাহেলিয়াত মুক্ত নতুন প্রজন্ম তৈরি করতে চাই।
জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলন প্রসঙ্গে মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, চব্বিশের আন্দোলন প্রায় ২ হাজার শহীদ ও হাজারো শিক্ষার্থী-জনতার পঙ্গুত্ব বরণ ও আহত হওয়ার বিনিময়ে সফলতা এসেছে। এই সফতলার মূল স্পিরিট হলো বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ ও স্বাধীনতা ভোগ করা। এই সফলতার জন্য প্রথম ত্যাগী আবু সাইদ। আমরা সকলেই এই আন্দোলনের সামনে ছিলাম। চব্বিশের আন্দোলনে নায়ক খুঁজলে ছাত্রশিবির প্রথম সারিতে থাকবে।
কেন্দ্রীয় সভাপতি আরো বলেছেন, কোনো নেতাই জাতির সামগ্রিক উন্নতিতে কাজ করেনি। আমাদের দাস অনুদাসে করে তোলা হয়েছে। এটা রাষ্ট্রের বড় ত্রুটি। এটা থেকে বের হতে না পারায় যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে ওঠেনি। এটা জাতির সবচেয়ে বড় সংকট। আর যে সৎ ছিল তাকেই হত্যা করা হয়। কিন্তু এখন নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। হাসিনার জালিম সরকারের পতনের মত একই কায়দায় নতুন প্রজন্ম চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে জানে। তাই এখন নতুনদের এগিয়ে আসতে হবে।
কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক মোহাম্মদ সোহাইল বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব আমাদের মানবতার নামে হিপোক্রেসি শেখায়। তাদের কাছে বাংলাদেশে মানবাধিকারের সংজ্ঞা এক এবং গাজায় মানবাধিকারের সংজ্ঞা আরেক। অথচ আমরা মানবাধিকার শেখার জন্য তাদের কাছেই যাই ফলে আমাদের জাতিগতভাবে বিকাশ সাধন হচ্ছে না। জাতিগত সমৃদ্ধির জন্য আমাদের ইসলামের আলোকে নিজেদের ঢেলে সাঁজাতে হবে।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এইচ এম আবু মুসা বাংলাদেশের মধ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি মডেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তারজন্য নবীনসহ দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের হাতে হাত, কাধে কাধ রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে চলার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
তিনি আরো বলেন, মজলুম শিক্ষার্থীদের অধিকার নিশ্চিত করতে যদি পুরো বাংলাদেশ ভিন্ন দিকে থাকে ইসলামী ছাত্রশিবির মজলুমের পক্ষে থাকবে। পথভোলা এই জাতিকে পরিবর্তন করার জন্য নবীনদের কাছে সৎ,দক্ষ ও দেশপ্রেমিক হিসেবে তৈরী হওয়ার অনুরোধ করেন।