‘মাউশি’র বৃত্তি থেকে বঞ্চিত রাবি’র ৯ শতাধিক শিক্ষার্থী
রাবি রিপোর্টার : স্নাতক পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) বৃত্তির জন্য মনোনীত হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী। তবে মাত্র ৭৪ জন শিক্ষার্থী বৃত্তির অর্থ পেলেও বঞ্চিত হয়েছেন ৯৩৬ জন শিক্ষার্থী। এর সমাধানে কয়েক দফায় মাউশি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও কোনো সমাধান হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি শাখা বলছে, সব ডিপার্টমেন্টের রেজাল্ট একই সময়ে প্রকাশ না হওয়ায় মনোনীত শিক্ষার্থীদের সকল তথ্য নির্ধারিত সময়ের ভিতরে তারা মাউশিতে পাঠাতে পারেনি। পরবর্তীকালে মাউশির সঙ্গে যোগাযোগ করে সময় বৃদ্ধি করে সকল তথ্য তারা পাঠিয়েছিলেন। তবুও এখনো তার সুরাহা হয়নি। এ ভোগান্তি শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নয়, বরং বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও এই সমস্যা হয়েছে। তবে মাউশি আশ্বস্ত করেছে শিক্ষার্থীরা বৃত্তির অর্থ পাবেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্নাতক পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য মাউশির এই বৃত্তির জন্য মনোনীত হন রাবি’র ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের এক হাজার দশ জন শিক্ষার্থী। অনেক বিভাগের ফলাফল তখনও প্রকাশিত হয়নি। ফলে মাউশির বেধে দেওয়া সময়ের ভিতরে সকল তথ্য আপডেট করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি শাখা। মাত্র ৭৪ জন শিক্ষার্থী বৃত্তির অর্থ পেলেও ৯৩৬ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পায়নি। এই বৃত্তির জন্য মনোনীত সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী সৈকত ইসলাম বলেন, বৃত্তির জন্য মনোনীত হয়েও আমরা এখনও বৃত্তির টাকা পেলাম না। এর জন্য আমরা রাবির বৃত্তি শাখায় ও অ্যাকাডেমিক শাখায় কয়েক দফা যোগাযোগ করি। কিন্তু তারা কোনো সুরাহা করতে পারেননি।
তারপর আমরা ভিসি বরাবর দরখাস্তও দিই। আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি এবং অনতিবিলম্বে আমাদের প্রাপ্য বৃত্তির অর্থ দাবি করছি। এ বিষয়ে জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বিভাগের পরীক্ষাগুলো এবং ফলাফল একই সময়ে হয়নি। এক বিভাগকে বাদ দিয়ে বৃত্তির জন্য মেরিট লিস্ট করা যায় না। বৃত্তির বিষয়টি যাতে দ্রুত সমাধান হয় এজন্য আমাদের একাডেমিক শাখা আপ্রান চেষ্টা করছেন। তিনি আরো বলেন, বিগত বছরগুলোতে বৃত্তির অর্থ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রদান করা হতো। তবে তাদের সেশন থেকে বৃত্তি কার্যক্রম অনলাইনে যাওয়ায় অর্থটি মাউশিতেই পাস হয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কিছু জটিলতার কারণে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
আইন ও মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৪-২৫ স্থগিত করা হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে ২টি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন জনসংযোগ দপ্তরের প্রকাশক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার। এর আগে, গত ১৮ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে আন্তঃবিভাগ ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে আইন ও মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় বণিক বার্তা পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আবু সালেহ শোয়েব ও আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাহফুজুর রহমানসহ প্রায় ১৫ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষের বিষয়টি সম্পর্কে সুপারিশ প্রদানের জন্য উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দীন খানকে আহ্বায়ক করে ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলামকে আহবায়ক করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এদিন সকাল ১০ টায় উপাচার্য সালেহ হাসান নকীবের আহ্বানে আইন বিভাগ ও মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষকদের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব মো. আমিরুল ইসলাম কনক বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছি। তদন্ত শেষে আমরা প্রতিবেদন জমা দেবো। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’