ছাত্রশিবির একটি পরশপাথর : এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ
সংগ্রাম অনলাইন: বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জামায়াতে ইসলামীর প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, “ছাত্রশিবির হলো একটি পরশপাথর, যেখানে একজন ছাত্রের ব্যক্তিত্ব বিকাশের, চিন্তা-চেতনার বিকাশের, আবেগ অনুভূতি প্রকাশের এবং জ্ঞান সমৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। এর ফলে ছাত্রদের ব্যাপ্তি এবং বিকাশ সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।”
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) গাজীপুরে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
স্থানীয় শহীদ আব্দুল মালেক মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ভিডিও বক্তৃতা প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম।
মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, “ইসলামী ছাত্রশিবির শুধুমাত্র একটি ছাত্রসংগঠনের নাম নয়; এটি একটি স্বতন্ত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ছাত্রশিবিরের সাধারণ ছাত্রদের নৈতিক চরিত্র গঠন, মানোন্নয়ন এবং প্রচলিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠ্যক্রমের বাইরেও ব্যাপক জ্ঞানের জগতের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। ছাত্রশিবির একজন বিজ্ঞানমনস্ক ছাত্রকে আল্লাহর সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে অবহিত করে এবং মানুষ হিসেবে তার নৈতিক দায়িত্ব সম্পর্কে ধারণা দেয়। এর ফলে ছাত্রদের চরিত্রের নৈতিক মান, ভিত্তি এবং ব্যক্তিত্ব বিকাশে কার্যকর ভূমিকা পালন করা হয়। বাংলাদেশের অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের তুলনায় ছাত্রশিবির এ ক্ষেত্রে একটি বিশেষ অবস্থান অধিকার করে।"
তিনি আরও বলেন, "ছাত্রশিবির আলোর সন্ধান দেয়—এটি সেই আলো, যা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কুরআনে ঘোষণা করেছেন : 'মানুষকে জাহেলিয়াতের পথ থেকে বের করে আলোর পথে নিয়ে আসার জন্য এ কুরআন মানবজাতির জন্য অবতীর্ণ হয়েছে।' ইসলামী ছাত্রশিবির ছাত্রসমাজকে জাহেলিয়াতের পঙ্কিলতা থেকে আলোর পথে টেনে আনার চেষ্টা করে।"
তিনি বলেন, "যারা নৈতিকতার সংশ্রব থেকে দূরে অবস্থান করে, তারা মনে করে নৈতিকতার উন্মেষ ঘটলে ছাত্রশিবিরই নেতৃত্বে আসবে। এই কারণে, তারা ছাত্রশিবিরকে থামানোর জন্য নানারকম প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।"
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের সকলের গন্তব্য সুনির্দিষ্ট এবং আমাদের সবাইকে সেই গন্তব্যে পৌঁছাতে হবে। ইসলামী ছাত্রশিবির এই গন্তব্যের পথে যাওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা প্রদান করে।"
তিনি উল্লেখ করেন, “ছাত্রশিবির কুরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে আমাদের চলার দিকনির্দেশনা দেয়। এটি আমাদের আল্লাহর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় এবং দেখায় কোন পথে যাওয়া উচিত এবং কোন পথ মুক্তির দিকে নিয়ে যায়।”
মঞ্জুরুল ইসলাম আরও বলেন, “ছাত্রশিবির আমাদের বিশ্বাসকে সুদৃঢ় করে এবং এই সমাজ ও জাতিকে ইসলামের আদর্শে অনুপ্রাণিত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইসলামী ছাত্রশিবির ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে অঙ্গীকারবদ্ধ, যা একটি আলোকিত ও ন্যায়পরায়ণ সমাজ গঠনের জন্য অপরিহার্য।”
ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলামের অনুষ্ঠানটি উপস্থাপন করেন। এ সময় কেন্দ্রীয় সেক্রেটারিয়েটবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ক-গ্রুপে ১০ জন (মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী) ও খ-গ্রুপে ১০ জন (স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী) মোট ২০ জনকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।