এটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের সেরা অর্জনগুলোর একটি ------- অধিনায়ক শান্ত
স্পোর্টস রিপোর্টার: পাকিস্তানের মাটিতে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ জয় করেছে বাংলাদেশ। শুধু সিরিজ জয়ই নয়, পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে সিরিজ জিতেছে নাজমুল হোসেন শান্তরা। রাওয়ালপিন্ডিতে দুই টেস্টের প্রথমটিতে ১০ উইকেট এবং পরেরটিতে ৬ উইকেটে পাকিস্তান দলকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজ জয়ের পরই বাংলাদেশ দলকে ফোন করে অভিনন্দন জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। তিনি তখন জানিয়েছেন, দেশে ফিরলে ক্রিকেট দলকে সংবর্ধনা দেয়া হবে। দুবাই হয়ে বুধবার রাতে দুই ভাগে হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় নাজমুল হাসান শান্তর দল। বিমানবন্দরে ফুল দিয়ে পাকিস্তানবিজয়ী বীরদের বরণ করে নেয় বিসিবি। বিসিবি পরিচালক আকরাম খান, নাজমুল আবেদিন ফাহিম, ইফতেখার আহমেদ মিঠু ও ফাহিম সিনহা উপস্থিত ছিলেন এ সময়। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহকেও ফুলের মালা পরিয়ে দেয়া হয়। তবে দেশে ফিরে আসেননি সাকিব আল হাসান। তিনি পাকিস্তান থেকে চলে যাবেন কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে। ক্রিকেটারদের সঙ্গে কোচিং স্টাফদের বেশ কয়েকজন সদস্য আসেননি। তবে প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে ও ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্প দলের সঙ্গে ঢাকায় এসেছেন। তারা ঢাকা থেকে অস্ট্রেলিয়াতে ছুটি কাটাতে যাবেন। সব কোচিং স্টাফই ফিরবেন ভারত সিরিজের প্রস্তুতি শুরুর আগেই। ঐতিহাসিক সিরিজ জয় শেষে দেশে ফিরে দেশে ফিরেই শান্ত বলেন, ‘আমার কাছে তো মনে হয়, বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে সেরা অর্জনগুলোর একটি। বেস্ট.. সবচেয়ে বড় অর্জন এটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের। এটা শুধু আমার একার ব্যক্তিগত কথা নয়, দলের সবাই এটা বিশ্বাস করে। খুবই ভালো লাগছে।’ এবার সিরিজ জয়ের আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের কোনো জয় ছিল না। আর তাদের মাটিতে গিয়ে তাদেরকে হারানো, সে তো আসমানের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো ব্যাপার। সেই কাজটাই করলেন শান্তরা। চতুর্দশ টেস্টে এসে তুলে নিলেন জয়, সেই সঙ্গে ঘরে তুললেন সিরিজ। টেস্ট আঙিনায় বাংলাদেশের ২৪ বছরের পথচলায় দেশের বাইরে টেস্ট সিরিজ জয়ের নজির ছিল এতদিন একটিই। ২০০৯ সালে দ্বিতীয় সারির ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে এসেছিল সেই জয়। এমন জয় যে কেউ বিশেষভাবে উদযাপন করতো। শান্তরাও এর ব্যতিক্রম নন। দেশে ফিরে সেটাও জানালেন অধিনায়ক, ‘এরকম জয় হলে সেলিব্রেশন তো স্পেশাল থাকে। জেতার পর ড্রেসিংরুমে সবাই সেলিব্রেট করেছে। সবাই হাসিখুশি ছিল। হোটেলে যাওয়ার পরও আমরা সেলিব্রেট করেছি। পুরো জার্নিটাই আসলে অনেক আনন্দের ছিল। পুরো সময়টা উপভোগ করেছি।’ সিরিজ জয়ের পর ট্রফি নিয়ে ঘুমিয়ে থাকার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন শান্ত। অধিনায়ক বলেন, ‘যেটা একটু আগে বললাম, জয়টা খুব স্পেশাল ছিল। আমি যেটা আগেও বললাম, বাংলাদেশের সবথেকে বড় অর্জন। মোমেন্টা ভালোভাবে এনজয় করার জন্যই আসলে মনে হলো যে ট্রফিটা নিয়েই ঘুমাই। এটাই আর কি। কাউকে দেখে না জিনিসটা। লিওনেল মেসিকে দিয়ে শুরু হয়েছিল। এই আর কি।’ সামনেই আরও একটি বড় সিরিজ। ভারত সফর কড়া নাড়ছে দুয়ারে। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর চেন্নাই টেস্ট দিয়ে শুরু হবে দুই টেস্ট ও তিন টি-টোয়েন্টির সফর। ভারতের বিপক্ষেও কখনও টেস্ট জয়ের স্বাদ পায়নি বাংলাদেশ। এবার পাকিস্তান সফরের সাফল্যকে সঙ্গী করে ভারতেও ভালো কিছুর আশায় অধিনায়ক। শান্ত বলেন, ‘এরকম জয়ের পর তো অবশ্যই আত্মবিশ্বাস প্রত্যেকেরই বেশি থাকবে এবং দলের মধ্যে বিশ্বাস ওপরের দিকে থাকবে। ভারত সিরিজ কঠিন একটা সিরিজ হবে। নতুন করে পরিকল্পনা নিতে হবে, প্রস্তুতি নিতে হবে। দলের যা অবস্থা এখন, নিজেদের সেরাটা খেললে অবশ্যই ভালো খেলা সম্ভব।’ ক্রিকেটাররা দেশে ফিরে অবশ্য খুব বেশি দিন ছুটি পাচ্ছেন না। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর অনুশীলন শুরু হবে। ইতোমধ্যে স্থানীয় কোচদের দিয়ে টি-টোয়েন্টি দলের অনুশীলন শুরু হয়েছে। ভারত সফরে দুটি টেস্ট ছাড়াও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। পরের টেস্টটি ২৭ সেপ্টেম্বর। এরপর ৬, ৯ ও ১২ অক্টোবর তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলে আগামী ১৫ অক্টোবর বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হবে নাজমুল হোসেন শান্তরা।