চলনবিলে পানির নিচে স্বপ্নের ফসল

সিংড়া (নাটোর) সংবাদদাতা : দেশের শস্যভাণ্ডারখ্যাত সর্ববৃহৎ বিল নাটোরের চলনবিল। এর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে আত্রাই ও গুড় নদী। এ দুই নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় এই অঞ্চলের কৃষকরা এখন আতঙ্কিত। গত কয়েকদিনের টানা ভারি বর্ষণে নাটোরের সিংড়ায় ৫৯৫ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পুরোপুরি নিমজ্জিত হয়েছে ১৫৪ হেক্টর জমির ধান। এদিকে উঁচু অঞ্চল থেকে নেমে এসে পানি আরো বেড়ে যাওয়ায় হুমকির মুখে রয়েছে কয়েক হাজার হেক্টর জমির বোনা ও রোপা আমন ধান। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিপাতে নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার ৫৯৫ হেক্টর জমির বোনা ও রোপা আমন পানির নীচে তলিয়ে গেছে। জানা যায়, উপজেলার ইটালি, চামারী, লালোর, শেরকোল, তাজপুর, চৌগ্রাম ও ছাতারদিঘী ইউনিয়নে বোনা ও রোপা আমন লাগিয়েছিলেন কৃষকরা। কিন্তু গত কয়েক দিনের একটানা ভারি বর্ষণে বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় তলিয়ে যায় এসব এলাকার বোনা-রোপা আমন ধানসহ বীজতলা। তাছাড়া যারা রোপা ধান লাগানোর জন্য জমি তৈরি করে রেখেছিলেন, সে সব জমিও তলিয়ে গেছে। রবিবার দুপুরে উপজেলার প্লাবিত বেশ কিছু এলাকা পরিদর্শন করেন জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা ড. মো. ইয়াছিন আলী, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোছাঃ শামিমা আকতার। বড়িয়া গ্রামের কৃষক কামাল হোসেন বলেন, চলনবিলের অধিকাংশ কৃষক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করেন। হঠাৎ ঢলের পানিতে তাদের ফসল ডুবে যাওয়ায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন তারা। কৃষি অফিস থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতার দাবি জানাচ্ছি।
চকসিংড়ার কৃষক শাহাদত হোসেন বলেন, গতকালের চেয়ে আজ পানি অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এভাবে পানি বাড়লে আমাদের ধানের অনেক ক্ষতি হবে। উপজেলার মানিকদিঘী গ্রামের কৃষক এনামুল হক বলেন, ২ বিঘা জমিতে আমন ধান লাগিয়েছি। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। এতে আমি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। আত্রাই নদীর ঢলের পানি উপচে চলনবিলে প্রবেশ করায় কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে নদীর পানি কমে গেলে কৃষকরা কম ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করবো।