কবিতা
ফুলপরী
রফিকুল নাজিম
ফুলপরী দেখে যাও আমাদের গ্রাম
মেঘেদের বাড়ি অই ফুলতলী নাম।
পাহাড় ঝরনা নদী ও শাপলা বিল
আকাশে ওড়ে দেখো- শঙ্খচিল,
সন্ধ্যারা নামে রোজ নদীর ওপার
বুনোপথে দেখো কী ফুলের বাহার!
ফুলপরী শুনে যাও পাখিদের গান
জোছনায় ভেজা অই রূপালী চাঁন।
রাখাল বাজায় বাঁশি মাতাল সুরে
পরিযায়ী পাখিরা ওড়ে যায় দূরে।
ফুলপরী থেকে যাও আমাদের গাঁয়
মনপ্রাণ জুড়াবে অই বটের ছায়ায়।
শৈশবে
নাজীর হুসাইন খান
শৈশব ও কৈশোর খেলাধুলা ইতি
সোনালী দিনগুলো আজ শুধু স্মৃতি।
পিছনের দিনগুলো যদি মনে হয়
শৈশবে হৃদয়টা ভাসে নিশ্চয়।
শৈশবে ছিলো না টেনশন ও কাজ
মন চায় ফিরে যাই শৈশবে আজ।
মায়ের কোলে
শিলা আক্তার
চাঁদ উঠেছে মায়ের কোলে
মিষ্টি হাসি হেসে
আয় রে তোরা যা দেখে যা
আমার বাড়ি এসে।
মুখ ঝলমল হিরের টুকরো
দেখতে চাঁদের মতো
মিষ্টি হাসি দুখ কেড়ে নেয়
চাঁদের মায়ের যতো।
পিঠার ঘ্রাণ
আশরাফ আলী চারু
এক যে ছিল হুলো বিড়াল
পিঠার গন্ধ পেয়ে
পা পা করে সে এগোলো
স্বাদ মিটাবে খেয়ে।
পিঠার বাসন সামনে পেয়ে
ব্যাকুল হলো আরও
ঢাকনা খোলা কষ্ট কি যে!
যায় না একটি বারও ।
রাগ করে সে হালুম বলে
ভাঙলো বাসন কাসা
গরম চুলায় ওমনি পড়ে
মিটলো মনের আশা ।
মনটা খুলে কই
আমজাদ বিন মেহের
কী অপরূপ বিশ্বজাহান!
সৃষ্টি বলো কার?
মহান মালিক ¯্রষ্টা সবার
নেই তুলনা তাঁর।
যিনি সবার সকল আশা
দেন মিটিয়ে বেশ,
তিনি হলেন আল্লাহ মহান
যার কোনো নেই শেষ।
তিনি একক অদ্বিতীয়
তিনিই সবার রব,
তাঁর দয়াতেই বাঁচা মরা
তাঁর দয়াতেই সব।
আমার সকল চাওয়া পাওয়া
মনটা খুলে কই,
জায়নামাযে যখন আমি
তাঁর নিকটে রই।
মন বসে না ঘরে
শামীম শাহাবুদ্দীন
আজ আকাশের মন ভালো নেই
মেঘে গেছে ছেয়ে,
অঝর ধারায় বৃষ্টি ঝরে
গাছগাছালি বেয়ে।
বৃষ্টি পড়ে টিনের চালে
রিনিঝিনি ছন্দে,
ভরদুপুরে ঘুম আসে না
ভেজা ফুলের গন্ধে।
এমন দিনে মন বসে না
ঘরে কিংবা পাঠে,
মন চলে যায় বৃষ্টিভেজা
খেলাধুলার মাঠে।
খেলার শেষে সদলবলে
সবাই যখন ঘরে,
খা খা করা মাঠ ডাকে ফের
খেলতে নতুন করে।
শরৎ রাণী
মুহাম্মদ নূর ইসলাম
সাদা মেঘের পালকি চড়ে
এলো শরৎ রাণী,
নদীর পাড়ে কাশের ঝাড়ে
তারই কানাকানি।
শিউলি ফোটা গাছের ডালে
নামলো শরৎ ঢল,
সেই খুশিতে ছুটলো ভোরে
খোকা খুকির দল।
শিউলি ফুলের মালা গেঁথে
বেচতে গেলো হাটে,
শরৎ রাণীর দুধের শিশু
ফুটলো খেয়া ঘাটে।
দোল দিয়ে যায় বাতাস এসে
কাশফুলেরা দোলে,
শরৎ রাণীর পালকিখানি
হাসে গগন কোলে।
আঁকাআঁকি
সাঈদুর রহমান লিটন
ছবি আঁকি খাতায় খাতায়
খাতার সকল পাতায় পাতায়
গরু, ছাগল, ঘোড়া।
সেদিন একটি বাঘ এঁকেছি
গাঁয়ে কালো ডোরা।
নদ-নদী আর খাল এঁকেছি
মনের চোখে যা দেখেছি
তা এঁকেছি রঙে,
আমার বাড়ির বিড়াল ছানা
তা এঁকেছি ঢঙে।
ফুল এঁকেছি রক্ত গাঁদা
তাও দেখেছে বড় দাদা
বলছে দাদু ভালো,
দাদুর চোখে ফুটতে ছিলো
বিশ্ব জয়ের আলো।
দোয়েল পাখি লেবুর ডালে
বুলবুলিটা ঘরের চালে
লেজ উঁচিয়ে নাচে,
তা এঁকেছি মনের মতো
বসে মায়ের কাছে।
শরৎ এলেই
আতিকুর রহমান
শরৎ এলেই আকাশ জুড়ে
সাদা মেঘের ভেলা
নদীর ধারে কাশবনেতে
ডাহুক পাখির খেলা।
শরৎ এলেই ইলিশ ভাজার
নাক যে ভরে ঘ্রাণে
পাকা তালের রসের পিঠা
সুখ আনে যে প্রাণে।
শরৎ এলেই দিঘির জলে
শাপলা ফুলের হাসি
সোনালী ধান সুখ যে আনে
গর্বিত হয় চাষি।
শরৎ এলেই বাংলা মা যে
অপরূপে সাজে
ফুটে ওঠে লক্ষ কবির
ছড়া-গদ্যের ভাঁজে।