রবিবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৩
Online Edition

কবিতা

নক্ষত্র ও গোলাপবাগানের গান

সায়ীদ আবুবকর

 

সূর্য উঠে ছড়ালো উজ্জ্বল আলো,

সন্ধ্যায় পড়লো ঢলে পশ্চিম আকাশে,

অথৈ অন্ধকারে ডুবে গেল চারদিক;

মহান প্রভুর ইচ্ছায় এমনই এক 

উজ্জ্বল নক্ষত্র তুমি, যার কোনো অস্ত নেই, 

কিয়ামত পর্যন্ত ছড়িয়ে যাবে আলো একই ভাবে 

মানবজাতির জন্যে।

 

পৃথিবীর সমস্ত গোলাপ সুবাস ছড়িয়ে

নিঃস্ব হয়ে গেল, তারপর পড়ে রইলো

মানুষের বিস্মৃতির ডাস্টবিনে;

মহান প্রভুর ইচ্ছায় এমনই এক

গোলাপবাগান তুমি, যার সুবাস উত্তরোত্তর

বেড়েই চলেছে, কিয়ামত পর্যন্ত যা

বহাল থাকবে আর অসংখ্য বেলাল 

বাতাসে ছড়াবে তোমার সুমিষ্ট নাম।

 

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, আমার হৃদয় 

আলোকিত হয়ে গেছে তোমার আলোয়

আর সুবাসিত হয়ে আছে তোমার সুবাসে।

 

তোমার আগমন 

মান্নান নূর 

 

১.

তোমার আগমন এবং চলে যাওয়া দুটোই মহান।

২.

তোমার এই পৃথিবীতে আসা 

কিছু বিষয়ের সমাপ্তির কারণ,

ঠিক সমাপ্তি নয় বিদূরিত হওয়া।

৩.

এই ইয়াসরিব সোনার মদিনা হলো- 

শুধু তোমার আগমনে, 

এই মাটি কতটা ধন্য দ্যাখো 

তোমার পদধুলি বুকে নিয়ে কতটা নিশ্চিন্তে ঘুমায়!

৪.

এই চাঁদ সহস্রবর্ষী চাঁদ দেখেছে তোমায়,

এই সহস্রবর্ষী সরুজ তোমায় দেখেছে!

আমাদের আলোর সুরুজ।

 

তোমার উজ্জ্বলতা মেখে আজো তারা 

কতটা সতেজ দীপ্তিময়!

তাদের দেখে আমরাও তোমাকে দেখে তৃপ্তি পাই,

দেড় হাজার বছর পরও এই চাঁদ সুরুজ সারা পৃথিবীময় 

একমাত্র প্রত্যক্ষ সাক্ষী তোমাকে দেখার।

৫.

হে মাদিনা! তোমার ধুলো গায়ে মাখতে 

তোমার হাওয়ায় ফুসফুস পবিত্র করতে ছুটে আসে মানুষ-

কেউ পায়ে হেঁটে 

কেউ জাহাজে  

কেউ বিমানে, 

কী অদ্ভুত ভালোবাসা 

কী অদ্ভুত গাঢ় প্রেম! 

তবু তারা তোমাকে পেতে চায়।

 

রিসালাত বিশ্বাসী চিন্তনে 

হারুন আল রাশিদ 

 

যদি পৃথিবী মরুভূমি হয়ে যায় 

একভাবে প্রজ্জ্বলিত থাকে সূর্য 

মেঘ-বৃষ্টি নিছক রূপকথার গল্প

সবুজ বৃক্ষ কল্পনার জগতে বসবাস। 

 

কেউ কোনদিন দেখেনি চন্দ্রিমা তিথি 

তারার উৎসব গল্পের নদীতে ভাসমান

বাতাসে অগ্নির হামাগুড়ি 

নিস্তব্ধ রজনী বহু শতাব্দী আগের ঘটনা। 

 

প্রতিদিন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার মুখোমুখি 

নির্বাসনে হাসিমাখা মুখ

শৃঙ্খলা ন্যুব্জ হয়ে গেছে নিপীড়নে

শান্তি নিদ্রিত হাসপাতাল বেডে। 

 

অসুস্থ পৃথিবীর ক্রান্তিকালেও 

আবার নেমে আসতে পারে জোছনা-সৌরভ

আবার জেগে উঠতে পারে রূপসী-উদ্যান

আবার দুলতে পারে ভালোবাসা-নদী।

 

শুধু ঐশী বাণীতে শীতলতা খোঁজ

তৌহিদী ঘ্রাণ হোক আত্মার খোরাক

রিসালাত বিশ্বাসী চিন্তনের বীজ বুনে যাও

জীবন-মৃত্যুর মাঝামাঝি প্রশস্ত জমিতে।

 

তোমাকে চায় 

মুহাম্মদ ইসমাঈল

 

হে রাসূল! 

প্রিয় রাসূল 

হৃদয়ের মাঝখানে 

যতখানি শূন্যতা 

পরিপূর্ণ করে দাও 

তুমি এসে।  

 

হে রাসূল! 

আমার বিগলিত মন 

সব সময় 

তোমাকে চায়।  

 

হে রাসূল! 

প্রিয় রাসূল 

গভীর রজনীতে  

স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে 

এসো ভালোবেসে। 

 

হে রাসূল! 

প্রিয় রাসূল 

বিদগ্ধ এই হৃদয়ের 

তৃষিত হাহাকার 

মিটাও চোখের 

এক পলকে।  

 

তাঁর নামে জেগে ওঠে 

তাজ ইসলাম 

 

রাসুল সাঃ এলেন পৃথিবীতে

মরাপ্রায় পৃথিবী গেয়ে ওঠে গান

তার নামে জেগে ওঠে সমগ্র জাহান ।

 

স্বনামধন্য চিকিৎসকের আগমনে 

আশাহত রুগী ও স্বজনরা যেমন আশাম্বিত হয় 

পাপের রোগে ক্ষয়ে যাওয়া ধরণীও

ফিরে পেল প্রাণের স্পন্দন। 

পৃথিবীতে রহমতের নবী এলেন।

 

অন্ধকারে ডুবে যাওয়া মানুষের সামনে

বিভ্রান্ত জিনের জগতে

রাসুল সাঃ এলেন আশার আলো নিয়ে।

রাসুল সাঃ এলেন 

পথভোলা পথিকের সামনে 

পথ দেখানো পবিত্র আলোকরশ্মি নিয়ে।

 

সমগ্র সৃষ্টিজগতের সামনে আসলেন তিনি

গেয়ে ওঠে সমস্বরে সারাজাহান

এসেছেন রহমাতুল্লিল আলামীন। 

 

তোমার পরশ পেয়ে

রিতা ফারিয়া রিচি

 

তোমার প্রেমে মাতোয়ারা

ওগো প্রাণের নবী,

বুক পাঁজরে রাখছি ধরে

শুধুই তোমার ছবি

আদেশ-নিষেধ করছি পালন

তুমিই দ্বীনের রবি। 

 

প্রিয়তমের আদর্শতেই

জীবনখানা গড়ি,

ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে

প্রেমের দরুদ পড়ি

তোমার আলোর পরশ পেয়ে 

সঠিক রাস্তা ধরি।

 

রাসুল নামের জোয়ার ওঠে

যাচ্ছে দু'চোখ ভেসে,

জীবনখানা চাই বিলাতে

তোমায় ভালোবেসে

নবী প্রেমের সুরভীতে

বিশ্ব উঠুক হেসে। 

 

সত্যের আপনজন 

গাজী গিয়াস উদ্দিন  

 

তোমার আলোকে পথ যদি চলি 

রাহমাতাল্লিল আলামিন,  

বিশ্ববাসী পেয়ে যায় ইনসাফ  

খাঁটি আদর্শ দিল স্বাধীন।  

তাওহীদের নূর ঝান্ডা হতে 

আখেরাতের সবক মতে 

পথ পেয়ে যায় শ্রান্ত মানুষ কণ্ঠে আমিন

 

তিনিতো মুক্তিদূত সুন্দরের প্রতীক  

দ্বাদশীর জোছনা রাসুলে আরাবী, 

সাহলান মুবারাক ইয়া মুরসালিন 

লাখো দরূদ আরশ জমিন-আমিন! 

 

হেরার রোশনী আলকুরআন 

শান্তি সম্প্রীতি সব সমাধান  

খোঁজো মানুষ পরশ পাথর পরমার্থ তত্ত্বজ্ঞান 

এমন দরদী মানবপ্রেমিক সত্যের আপনজন।  

 

ঘুচলো অমানিশা

ওয়াহিদ আল হাসান

 

চৌদ্দশত বছর আগে এই দুনিয়ার বুকে

ঐশী বাণী দেন ছড়িয়ে সকাল বিকেল সাঁঝে

রসুল সেরা মানব সেরা সকল সৃষ্টির মাঝে

আস্থাভাজন ভালোবাসা তাঁরই দিকে ঝুঁকে।

 

গড়তে গিয়ে স্বর্ণালি এক শ্রেষ্ঠ বসুন্ধরা

অনাচার আর অবিচারের শত কষ্টজ্বালা

একে একে হাসিমুখে করতে সকল বরণ 

মহান রবের কাছে পেলেন অসীম ধৈর্য মালা।

 

সেই মালাতে এই ধরনীর ঘুচলো অমানিশা 

জাহেলিয়াত দূরে ঠেলে হেরার আলো জ্বেলে

শান্তি বাণী পৌঁছে দিলেন সঠিক পথের দিশা 

পরম সুখের গাইলো গীতি সুরের ডানা মেলে।

 

রাসুলের রশ্মি 

মেশকাতুন নাহার 

 

যে ধরাতে জমেছে মেঘ বিষাদিত ঘোর,

ক্ষমতা আর মুখোশদারীর বেড়েছে খুব জোর

অর্থ নেশায় বিবেক হারায় ধূর্ত কিছু চোর,

রাসুল রশ্মির ছোঁয়া পেলে হবে নব্য ভোর।

 

যে সমাজে ছিঁড়ে গেছে রীতিনীতির জাল,

বৃদ্ধ মাকে কিশোর ছেলে করছে গালাগাল, 

মানবতা আজ খুন হয়ে নগ্ন এক কঙ্কাল, 

এই সময়ে খুব জরুরি মুহাম্মাদের পাল।

 

যে জীবনটা প্লাবন এসে জলে করেছে ভর,

অসৎ চিন্তায় তা-ব-লীলায় ঊর্ধ্বে পাপের স্তর।

যোগ বিয়োগে অঙ্ক কষে শূন্য হিসাব ঘর,

রাসুল ছায়ায় জাগতে পারে নতুন করে চর।

 

যে শিশুতে ফুটতে দিবে মুহাম্মদের ফুল, 

সে তো বইবে আলোর নিশান, নয় এক ফোঁটা ভুল।

এমন এক শিক্ষাগুরু কি আছে কোনো স্কুল? 

যতই তুমি সার্চ করো না টুইটার, গুগুল।

 

মুক্তির বাহক

আর. কে. শাব্বীর আহমদ 

 

মূর্খতার অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল 

পৃথিবী যখন 

বর্বরতা-নিষ্ঠুরতাই ছিল যখন 

সভ্যতার হাতিয়ার 

’ জোর যার মুল্লুক তার ‘ নীতি ছিল জোরদার 

মায়ের জাতির ছিল না মানুষ নামের 

কোনো অধিকার 

নারী শিশু প্রোথিত হতো 

কঠিন মাটির তলে 

অনৈতিকতার সয়লাবে

নিমজ্জিত হতো মরুবাসী

ছিল না কোনো ভেদ বিচার 

মানবতা কেঁদে ফিরতো দ্বারে দ্বারে

মহান সত্তার শক্তিমত্তায় ছিল হাজারো অংশীদার 

হানাহানি কাটাকাটি হিংসা বিভেদে

জর্জরিত ছিল জনজীবন

বাঁচার নিরাপত্তা ছিলনা বনী আদমের।

 

এমনি এক নাজুক পৃথিবীতে 

নেমে এলেন মুক্তির বাহক মানবদরদী নেতা

মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

চাঁদের আলো নিষ্প্রভ তাঁর চরিত্র আভায়

সোনা হলো পরশে যার নিকষ-কঠিন পাথরসম 

বর্বর অমানুষেরা।

ওহীর জ্ঞানে ঋদ্ধ মহামানব গড়ে তুললেন

এক প্রীতির সমাজ মরু-মদীনার বিয়াবানে

পথহারা মানবতা পেল 

সত্য-সুন্দর অনাবিল এক রাজতোরণ।

হিংসাতুর জাতি সুস্থিত হলো

এক অনুপম ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে।

মক্কা বিজয়ে মহামানব

মানব-হৃদয় জিতে নিলেন 

ক্ষমার সুমহান বাণী শুনিয়ে। 

উসওয়াতুন হাসানা’ আর ‘

’ রাহমাতুলল্লিল আলামীন ‘-------

এমন ঐশী উপাধায় বিভূষিত হলেন

ধুলির ধরার নবী

 সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। 

 

বিশ্বনবী

শাহারুল ইসলাম সুজন

 

ফুলের চেয়ে মিষ্টি অতি

আলোর মতো দীপ্তিময়-

আরব দেশের আঁধার কেটে

একটি শিশুর জন্ম হয়।

 

জন্ম নিয়ে পায়নি আহা

দেখতে কভু পিতার মুখ-

ছোট্টকালে যায় হারিয়ে

মায়ের ভালোবাসা; সুখ।

 

আল্লাহ তায়ালার বন্ধু হয়ে 

পেয়েছিল পাক কোরআন-

তার সততা শিক্ষার আলোয়

আলোকিত এই জাহান।

 

যে নাম ধরে দরুদ পড়ি

স্বপ্নে যাকে দেখার সাধ-

তিনি হলেন তোমার আমার

বিশ্বনবী মুহাম্মাদ।

 

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ