রবিবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৩
Online Edition

ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজি 

 দেশে প্রতিদিন ৪ কোটি ডিমের প্রয়োজন হয়। ডিমের বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে প্রতিবেশী ভারত থেকে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ খবরে বাজারে ডিমের দামে প্রভাব পড়তেও দেখা গিয়েছে। সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডিম, আলু ও দেশি পেঁয়াজের দাম বেঁধে দেয়। প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ সাড়ে ১০ টাকা করে পড়ে। তাই খুচরা পর্যায়ে বাজারমূল্য নির্ধারণ করা হয় ১২ টাকা। এরপরও এ দাম কার্যকর না হওয়ায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডিম আমদানির ঘোষণা দেয়। খবরটি রাজধানীর খুচরা ও পাইকারি বাজারে ছড়িয়ে পড়লে দ্রুত দাম কমতে শুরু করে।

ক্রেতারা এখন প্রতি হালি ডিম ৪৮-৫২ টাকায় কিনতে পারছেন। অর্থাৎ প্রতি পিসের দাম পড়ছে ১২-১৩ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, ডিম আমদানি হলে দাম আরও কমবে। গত কদিনে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দাম রেকর্ড ছুঁলেও মানুষ তা কিনতে বাধ্য হয়েছে। ফলে ডিমের দাম এখন কমলেও সিন্ডিকেট এরই মধ্যে বাজার থেকে যা লাভ করার, তা করেই নিয়েছে।

কয়েক বছর ধরেই নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ঠুনকো অজুহাতেও অসাধু ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে দিচ্ছেন। আজ ডিমতো কাল পেঁয়াজ। পরশু আলুতো তারপর ডাল। এভাবেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ানো হচ্ছে। বাজার তদারকিতে ব্যর্থতার পর যখন পণ্য আমদানির ঘোষণা আসে, দেখা যায় সে পণ্যের দাম কিছুটা কমে আসে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রান্তিক পর্যায়ে উৎপাদনকারীরা বিক্রির সময় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন। আবার খুচরা বাজারে সে পণ্যই ক্রেতারা অস্বাভাবিক মূল্যে কিনতে বাধ্য হন। মাঝে মধ্যস্বত্বভোগীরা সিন্ডিকেট গড়ে বিশাল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন।

অভিযোগ রয়েছে, বাজার পর্যবেক্ষণে নিয়োজিত কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে যোগসাজশের কারণেই এসব অসাধু ব্যবসায়ী পার পেয়ে যায়। প্রায় সব দেশেই বাজারে সাধারণত কোনও পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির আগেই গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সিন্ডিকেটের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে আগাম সতর্ক করে। এ দেশে এমনটি প্রচলন আছে কি না, তা সংশ্লিষ্টরাই ভালো বলতে পারবেন। অভিজ্ঞতার আলোকে আমাদেরও এ ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া দরকার। কারণ, বাজার নিয়ন্ত্রণে আগাম পদক্ষেপ কেন নেয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সরকার বাজার ব্যবস্থাপনাসংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় আনবার পাশাপাশি কারসাজিতে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে, এমনটাই প্রত্যাশা করেন জনগণ। এ ছাড়া ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজি রুখে দেয়া যেমন মুশকিল, তেমনই জনগণ বেশি মূল্যে পণ্য কিনতে বাধ্য হন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ