বৃহস্পতিবার ৩০ নবেম্বর ২০২৩
Online Edition

৭শ’ বছরের ঐতিহ্য ধনবাড়ি নবাব শাহী মসজিদ

গোলাম মোস্তফা, মধুপুর (টাঙ্গাইল): টাঙ্গাইলের ধনবাড়িতে ৭শ’ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্য নবাব শাহী জামে মসজিদ মুঘল আমলের স্থাপত্য শৈলীর অপরূপ নিদর্শন বহন করে চলছে। প্রায় ৯৬ বছর ধরে চলছে ২৪ ঘণ্টা পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ব্যতীত ৫ জন হাফেজ পালাক্রমে কুরআন তেলাওয়াত করে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযু্েদ্ধর সময় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগেও থেমে থাকেনি এ কুরআন তেলাওয়াত। টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ি উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে পৌরসভায় অবস্থিত ধনবাড়ি নবাব শাহী জামে মসজিদ। প্রাচীন স্থাপত্য শিল্পের ধারক ও বাহক ধনবাড়ির নবাব শাহী জামে মসজিদ ইসলামী ঐতিহ্য ও কালের স্বাক্ষী হয়ে স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে। এটি ধনবাড়ি উপজেলার ঐতিহাসিক স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন। নিপুণ কারুকাজ খচিত এ মসজিদ দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে আসে বহু দর্শানার্থী। মনের আশা পূরণের জন্য অনেকেই মানত করে থাকে। নামাযের মানত করে পুরুষের পাশাপাশি নারীও নামায আদায় করে। এ মসজিদটি এক দিকে যেমন স্থাপত্যশৈলী অন্যান্য নিদর্শন ও অন্য দিকে জনগণের মনের বাসনা পূরণের নিরব স্বাক্ষী হিসেবে স্মৃতির স্বাক্ষর রেখে যাচ্ছে।

এক পাশে নবাব দিঘী। পশ্চিম পাশে মুঘল আমলের ষোড়শ শতাব্দীতে সেলজুক তুর্কি বংশের ইসপিঞ্জার খা ও মনোয়ার খা দুই ভাই ঐতিহ্যবাহী এ মসজিদটির প্রথম অংশ নির্মাণ করেন।

জনশ্রুতিতে জানা যায়, স¤্রাট আকবরের সময় এ দুই ভাই ধনবাড়ির অত্যাচারী জমিদারকে পরাজিত করার পর এ অঞ্চলের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং এ মসজিদটি নির্মাণ করেন।

ধনবাড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী জানান, নান্দনিক কারুকাজের এ মসজিদটি বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন দেখতে আসে। মসজিদের স্থাপত্য শৈলী সকলের নজর কাড়ে।

মসজিদের ইমাম জানান, তারা ৫ জন হাফেজ মিলে ২৪ ঘণ্টা পর্যায়ক্রমে কুরআন তিলাওয়াত করেন। প্রায় ৯৬ বছর যাবত চলছে কুরআন তিলাওয়াত। মসজিদে মানতের জন্য আসা দুই নারী জানান, তারা মনের আশা পূরণের জন্য মানত করেছিলেন। সে জন্য তারা এসে নামায আদায় করেন।

গোপালপুরের আল আমীন বলেন, তিনি ঢাকায় চাকরি করেন। মসজিদটি খুব নামকরা জেনে তিনি দেখতে আসেন। ধনবাড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আসলাম হোসেন জানান, ধনবাড়ির ইতিহাস ঐতিহ্যের অন্যতম নবাব শাহী জামে মসজিদ। যা ধনবাড়িকে ইতিহাসের স্বাক্ষী করে রাখবে। তিনি মসজিদের প্রবেশ পথসহ মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য কিছু কাজ করেছেন। সামনে আরো কাজ করার আশা ব্যক্ত করেন।

এ প্রাচীন মসজিদের নির্মাণ শৈলীর নিদর্শন ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে আছে। দর্শনার্থীসহ মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা ও দিঘীর পাড় সংস্কার করে আরো আকর্ষণীয় করার দাবি স্থানীয়দের।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ