এশিয়ান গেমসে অংশ নিতে আজ দেশ ছাড়ছে শুটিং দল

স্পোর্টস রিপোর্টার: আন্তর্জাতিক বড় প্রতিযোগিতাগুলোতে শুটিং সব সময়ই থাকে প্রত্যাশার কেন্দ্রে। দক্ষিণ এশিয়ান গেমস ও কমনওয়েলথ গেমসে বাংলাদেশের শুটাররা নিজেদের ছাপ রাখতে পারলেও এশিয়ান গেমসে কখনোই ভালো কিছু হয় না। এশিয়ান গেমসে কখনোই পদক জিততে পারেনি বাংলাদেশের কোনো শুটার। তবে এ মাসে হাংজুতে হতে যাওয়া আসরে গল্পটা অন্যভাবে লিখতে চান শাকিল আহমেদ, কামরুল নাহার কলিরা।
এবারের গেমসে শুটিংয়ের বিভিন্ন ইভেন্টে মোট ১৬ জন শুটার অংশ নেবেন। আজ সোমবার রাতে দেশ ছাড়বেন তারা। তার আগে শনিবার শুটারদের অনুপ্রাণিত করতে ফেডারেশনে হাজির হন সংস্থার সভাপতি লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান। উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব ইন্তেখাবুল হামিদসহ ফেডারেশনের আরও কয়েকজন কর্মকর্তা। এ সময় খেলোয়াড়দের সঙ্গে আসরের প্রস্তুতি ও প্রত্যাশা নিয়ে কথা হয় । আগের আসরগুলো যেমনই হোক, এবার মনের কোনো বড় স্বপ্ন নিয়েই যাচ্ছেন তারা।
দেশের শুটিংয়ের বড় মুখ আব্দুল্লাহ হেল বাকী অবশ্য নিজেকে নিয়ে জোর দিয়ে কিছু বলতে পারছেন না। কারণ নিজের প্রিয় ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে খেলা হবে না তার। চোটের কারণে এই ইভেন্টকে বিদায় বলে দিয়েছেন তিনি। খেলবেন ৫০ মিটার ইভেন্টে। আর সেখানে যতটা পারা যায় নিজের ছাপ রাখাই লক্ষ্য বলে জানালেন, অনুশীলনে নিজের সেরা স্কোর গড়তে।
রাইফেলে মেয়েদের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক আসরে নিজেকে মেলে ধরা কামরুন নাহার কলি অবশ্য নিজেকে নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী, ‘এই প্রথম অনেক বড় একটা গেম করতে যাচ্ছি। প্রস্তুতি আলহামদুলিল্লাহ ভালো। চেষ্টা করব নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে যেন দেশের জন্য কিছু করতে পারি। রেজাল্ট পাওয়াটা ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু আমি চেষ্টা করব আমার সেরাটা দেওয়ার। সেরাটা দিতে পারলে ফাইনালে যেতে পারব। আর ফাইনালে যেতে পারলে মেডেলের জন্য ফাইট দিতে পারব আশা করি।’
২০১৬ দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে সোনা জিতে পাদপ্রদীপের আলোয় আসেন পিস্তল শুটার শাকিল আহমেদ। ছেলেদের ৫০ মিটার পিস্তলে সেরা হন তিনি। দুই বছর পর গোল্ড কোস্ট কমনওয়েলথ গেমসে একই ইভেন্টে জেতেন রুপা। তবে একই বছর এশিয়ান গেমসে নিজের ছাপ রাখতে পারেননি। এবার দ্বিতীয়বারের মতো এই গেমসে যাচ্ছেন তিনি। এশিয়ান গেমসে পিস্তলে অবশ্য খেলতে হয় ১০ মিটারে। শাকিলের আগের আন্তর্জাতিক সাফল্যগুলো ৫০ মিটারে হলেও এবার ১০ মিটার নিয়েও আত্মবিশ্বাসী তিনি।
শুধু তাই নয়, এবারের গেমসে বাড়তি জেদ নিয়েই যাচ্ছেন এই শাকিল, ‘গত এশিয়ান গেমসে আমি ১০ মিটারে ২২তম হয়েছিলাম। তবে এবার প্রত্যাশা ফাইনালে ঢুকব ইনশাআল্লাহ। এশিয়ান গেমস নিয়ে আসলে আমার একটা আক্ষেপ আছে। যেহেতু দক্ষিণ এশিয়ান গেমস ও কমনওয়েলথ গেমসে আমার মেডেল আছে, ধারাবাহিকতায় এরপর এই এশিয়ান গেমসটা চলে আসে। নিজের কাছেই তাই চাওয়া, এখানে ভালো ফল করতেই হবে।’ব্যক্তিগত ইভেন্টের সঙ্গে মিশ্র দলগত ইভেন্টেও খেলবেন শাকিল। যেকোনো একটিতে যেভাবেই হোক সুযোগ কাজে লাগানোর লক্ষ্য তার।
১০ মিটার পিস্তলে সাধারণত চীন, কোরিয়া, জাপান, ভারতের শুটারদের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাদের সঙ্গে নিজেদের খুব বেশি পিছিয়ে রাখেন না শাকিল, ‘আমরা পারি না ব্যাপারটা তা না। কিন্তু দেখা পায় খুব অল্প ব্যবধানে আমরা পিছিয়ে পড়ি। সবার শেষ হয়ে আসব, এমন মনোভাব নিয়ে তো আমরা যাই না কখনোই। আমরা মেডেলের ফাইট দেওয়ার জন্যই যাই। তবে অন্যরা অনেক বড় টিম যায়। আমরা যেহেতু কম শুটার অংশ, তাই সম্ভাবনাও কম থাকে। এখন এই দিকগুলো আমাদের দিন দিন উন্নতি হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ আমরাও সাফল্য পাওয়া শুরু করব।’
পিস্তলে মেয়েদের বিভাগে খেলতে যাওয়াদের একজন তরুণ আনজিলা আমজাদ। তিনি এবারই প্রথম যাচ্ছেন এশিয়া গেমসে। প্রস্তুতির কথা জানতে চাইলে বললেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তবে প্রথম গেমস বলে অনেক বেশি নার্ভাস বলতে গেলে। চেষ্টা করব এই নার্ভাসনেসটা কাটানোর জন্য। নিজের সেরাটা দিয়ে অনুশীলন করেছি। ওখানে গিয়েও যেন সেরা পারফরম্যান্সটা দিতে পারি, এই ইচ্ছে থাকবে।’পদকের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘অবশ্যই। ইনশাল্লাহ পাব, এই আত্মবিশ্বাস আছে।