শুক্রবার ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Online Edition

কবিতা

শুভ্র পাখায়

শাহজাহান মোহাম্মদ

 

শরতের শুভ্র পাখায়

শিশিরের সুরভি

মন আজ খুঁজে ফিরে

অভিলাষ করবী।

 

সাদা সাদা মেঘ হেসে

গগনটা দেয় পাড়ি

বলাকারা খুশি মনে

ফিরে যায় নিজবাড়ি।

 

তীরে তীরে কাশফুল

দোল খায় বাতাসে

শিউলির আগমনে

তারা হাসে আকাশে।

 

দাদুর মস্ত টাকে

শ্যামল বণিক অঞ্জন

দাদুর মস্ত টাকে

পথ চলারই ফাঁকে

করলো পটি কাকে।

 

হা-হা- হি- হি রবে

হাসলো মিলে সবে

চ্যাংরা পোলাপানে

মাতলো কলরবে!

 

দাদু বলেন রাগে

'কও কেমুডা লাগে!

'এমন সময় মাথার মধ্যে

কেউ কখনো হাগে!

 

একটা মরার কাকে

লজ্জা দিলো তাঁকে

সুযোগ বুঝে করলো পটি

তেলতেলে অই টাকে!

 

সোনালি দিন

শেখ বিপ্লব হোসেন

ছি কুতকুত, বৌছি খেলার

কোথায় সে মৌসুম?

গোল্লাছুট আর লবণ-কোটের

নেই যে এখন ধুম!

 

গাছে গাছে পাখির মতো

কত খেলার স্মৃতি,

সে সব মনে হলেই হৃদে

বাড়ে অনেক প্রীতি।

 

ডাংগুলি আর লাটিম খেলায়

কী যে মজা হতো!

এখন কি আর মোবাইল গেমে

আছে মজা অতো?

 

ভরদুপুরে বিল পুকুরে

ঝাপুর ঝুপুর ডুব,

মিষ্টি ভীষণ মায়ের শাসন 

মনে পড়ে খুব!

 

ঝিলের জলে শাপলা ফুলের

সঙ্গে ছিলো মিল,

খলসে-পুঁটির নৃত্য দেখে

ভরে যেতো দিল্।

 

ঝড়ের দিনে আম কুড়ানোর

ক্ষণ ছিলো রঙিন,

কোথায় সে সব হারিয়ে গেল

সেই সোনালি দিন।

 

ইচ্ছে করে

সাকী মাহবুব

আমার কেবল ইচ্ছে করে মায়ের পাশে থাকি

বন-বাদাড়ে ঘুরে বেড়াই পাখির সুরে ডাকি।

 

আমার কেবল ইচ্ছে করে আকাশটাকে ছুঁই

মনের যত দুঃখ ব্যথা বৃষ্টি দিয়ে ধুই।

 

আমার কেবল ইচ্ছে করে সাঁতার কাটি জলে

নির্ভাবনায় মেলতে ডানা ঈগল যেমন চলে।

 

আমার কেবল ইচ্ছে করে গোলাপ হয়ে ফুটি

দিবানিশি মানুষের ভালোবাসা লুটি।

 

আমার কেবল ইচ্ছে করে দেশের ছবি আঁকি

ফুল ফসলের ভালোবাসা বুকের ভেতর রাখি।

 

ছন্দে আঁকি নকশিকাঁথা 

তানজিনা আঁখি

ছন্দ আমার রঙিনসুতো, কলম, রুপোর সুঁই, 

নকশিকাঁথা, বানাই খাতা, আঁকি জবা-জুঁই।

গোলাপমালা, বরণডালা আঁকি গাছের ফুল,

ছন্দে আঁকি দোয়েলপাখি, বড় নদীর কুল।

 

খোকার ঘুড়ি, খুকির চুড়ি আঁকি মাটির ঘর,

গাছগাছালি-পাখপাখালি, নদীর বালুচর।

চাঁদের আলো, আঁধার কালো রোদ মাখানো ভোর,

কিচিরমিচির শব্দে আঁকি পাখির গানের স্বর।

 

শব্দকথায় খাতার পাতায় আঁকি দুঃখ-সুখ,

খুকুমণির দুষ্টুমী আর কচি সোনামুখ।

রাতের বেলা পরীর খেলা হুতোমপ্যাঁচার ডাক,

ছন্দতালে কাঁথায় আঁকি কোয়েল, কোকিল, কাক।

 

শরৎ এলে 

মুহিতুল ইসলাম মুন্না 

শরৎকালে সাদা মেঘে ঢেকে যায় বেলা

নদীর পাড়ে দুধসাদা কাশফুলের খেলা।

শরৎ আসে গন্ধ ভাসে শিউলি বকুল ফোটে

নদীর ধারে স্নিগ্ধ হাওয়ায় কাশফুলে ঢেউ ওঠে।

 

শরৎ রানী রংবাহারি সাজে নতুন সাজ

গগনতলে মেঘেরা সব পায় যেন খুব লাজ।

শরৎ এলে সুনীল আকাশ রূপে দেয় ডুব 

নদীর ধারে কাশফুলেতে সাজে শরৎ খুব।

 

কাশফুল 

জাকির শায়েরী 

নদী তীরে হেলেদুলে 

কাশফুল

শিউলিও জুঁই চামেলি 

ঘাসফুল।

 

আকাশজুড়ে ভাসে সাদা

হাঁসফুল

শরৎ রাণীর শোভা যেনো

কাশফুল। 

 

শরতের সকালে

জাহিদুল ইসলাম

শিউলি ফোটা ভোরে

মেঘের ডানায় চড়ে

ইচ্ছে করে মেঘনা নদীর

ডানায় ডানায় ছুটি

কাশফুলেদের সাথে মিশে

করি লুটোপুটি।

 

বকের সারিগুলো

যেন পেজাতুলো

নীল আকাশের পথটি ধরে

কোন গায়েতে যাচ্ছে

ক্ষণেক হেসে খকখকিয়ে

কী জানি কি গাচ্ছে!

 

শাপলা ফুলে ফুলে

যাচ্ছে ভ্রমর দুলে

সোনা রোদের হাসি লেগে

করছে ঝিকিমিকি

এই সকালে ইচ্ছে করে

আমিও গান শিখি।

 

 

ভোরে ওঠা

আল আমিন মুহাম্মাদ 

ঘুম থেকে ভোরে ওঠা খুব ভালো

আসমানে রবি রাঙা পূব ভালো।

হিমুবায়ে কুসুমের সুগন্ধ

নিঃশ্বাসে মনে বাজে সুছন্দ।

 

হাঁটাহাঁটি করে নাও ঘাম ঝরা

কসরতে "ভোরবেলা" নাম করা।

পাখিদের সুর ভরে মন-দিলে

থাকা যেন স্বর্গের মনজিলে।

 

প্রকৃতির সাজে মন ফুরফুরে

কাজকামে মন দাও সুরসুরে। 

 

ফড়িং ছানা 

ইরফান তানভীর

পুকুর পারে সবুজ ঘাসে

উড়ছে ফড়িং ছানা,

ফড়িং ছানা ধরবে খোকন 

কে করিবে মানা?

 

ছোট্ট খোকন ছুটছে কেবল

ফড়িং ছানার পিছু,

মায়ের কড়া শাসন-বারণ

শুনছে না তো কিছু। 

 

কিন্তু ফড়িং ধরতে গেলেই 

যায় হয়ে হাতছাড়া,

তবুও খোকন ধরবে ফড়িং 

নেই যে কোনো তাড়া।

 

একটা ফড়িং ধরল খোকন

চুপিচুপি গিয়ে,

ছোট্ট খোকন করছে খেলা

ফড়িংছানা নিয়ে।

 

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ