তুরস্কে রানঅফ ভোট শেষ, ভালো অবস্থানে এরদোয়ান

সংগ্রাম অনলাইন ডেস্ক: তুরস্কে প্রাথমিক ভোটে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান দ্বিতীয় দফার ভোটেও এগিয়ে রয়েছেন।
বেসরকারিভাবে প্রকাশিত ফলাফল অনুসারে, এখন পর্যন্ত গণনা হওয়া ৮২.৬৪ শতাংশ ব্যালট বাক্সের মধ্যে এরদোগান পেয়েছেন ৫৩.৪১ শতাংশ এবং বিরোধী নেতা কামাল কিলিচদারোগ্লু পেয়েছেন ৪৬.৫৯ শতাংশ ভোট।
প্রথম দফায় কেউ নিয়ম অনুসারে ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় ভোট গ্রহণ করতে হয়।
গত ১৪ মে অনুষ্ঠিত হওয়া প্রথম দফার ভোটে এরদোগান পান ৪৯.৫২ শতাংশ ভোট আর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কিলিচদারোগ্লু পান ৪৪.৮৮ শতাংশ ভোট।
ওই ধাপে তৃতীয় হয়েছিলেন সিনান ওগান। তিনি পান ৫.১৭ শতাংশ ভোট। এ ধাপে অবশ্য তিনি এরদোগানকে সমর্থন জানিয়েছে।
তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির তথ্যমতে, দেশটির ৬ কোটি ৪০ লাখ বৈধ ভোটারের মধ্যে প্রথম ধাপে ৪৪.৮৪ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছিলেন।
প্রাথমিক ভোটে তৃতীয় স্থান পাওয়া সিনান ওগান সরাসরি এরদোয়ানের প্রতি তার সমর্থন প্রকাশ করেন। ওগান ৫ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন।
তুরস্কের নেতৃত্ব শেষ পর্যন্ত কার হাতে যাচ্ছে তা দেখতে শুধু তুর্কীরাই নয় বরং পুরো আন্তর্জাতিক অঙ্গন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
কারণ, বিশ্বের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক ভূরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হয়ে উঠেছে তুরস্ক।
রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা (জিএমটি ০৫০০) থেকে রানঅফ ভোট গ্রহণ শুরু হয়। স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা (জিএমটি ১৪০০) পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে।
সন্ধ্যা নাগাদ ভোটের ফলাফল স্পষ্ট হতে শুরু করবে।
প্রাথমিক ভোটের দিনের তুলনায় আজকে ভোটকেন্দ্রগুলো অপেক্ষাকৃত শান্ত ছিল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। প্রাথমিকে ৮৯ শতাংশ ভোট পড়েছিল।
দুপুরের দিকে এরদোয়ান ইস্তাম্বুলের এশিয়া অংশে তার বাড়ির কাছের একটি স্কুলে ভোট দেন। আগে থেকেই তার সমর্থকরা ওই ভোটকেন্দ্রে জড়ো হয়েছিলেন। ভোট দেওয়ার আগে তিনি সমর্থকদের সঙ্গে করমর্দন করেন এবং কথা বলেন।
তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে ভোট দিতে আসা নূরান বলেন, ‘‘ঈশ্বরের ইচ্ছায় তিনিই জয়লাভ করবেন। আমাদের দেশে অনেক সমস্যা রয়েছে। যদি কেউ একজন সেগুলো সমাধান করতে পারে, তিনিই পারবেন।”
এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী ৭৪ বছরের কিরিচতারোলু আঙ্কারায় ভোট দিয়েছেন। তিনি ছয় দলের বিরোধী জোটের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। তুরস্কের জাতির পিতা মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক এর দল রিপাবলিকান পিপুলস পার্টির (সিএইচপি) নেতৃত্বে রয়েছেন তিনি।
প্রাথমিক ভোটে এরদোয়ানের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও রানঅফ ভোটে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী কিরিচতারোলু।
রানঅফ ভোটে বিতর্কের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছিল তুরস্কের শরণার্থীরা।
তুরস্কই বিশ্বে সবচেয়ে বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। দেশটিতে সিরীয় শরণার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
এই শরণার্থীদের পুঁজি করে কিরিচতারোলু ভোটাদের মন জিততে চেয়েছেন। তিনি নির্বাচিত হলে লাখ লাখ সিরীয় শরণার্থীকে প্রত্যাবাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
যদিও কিরিচতারোলু ও তার জোট যেভাবে শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের কথা বলেছেন সেটা কার্যত অসম্ভব বলে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক।
আর এরদোয়ানের অভিযোগ, কিরিচতারোলু ঘৃণা ছড়াচ্ছেন। বলেন, যদি কিরিচতারোলু জিতে যান তবে তা সন্ত্রাসীদের জন্য জয় হবে।